বুড়ো অ্যান্ডারসনের ভেল্কিতে কাঁপছে কোহিলদের ঠকঠকানি

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Aug 29, 2021 02:06 pm
বুড়ো অ্যান্ডারসনের ভেল্কিতে কাঁপছে কোহিলদের ঠকঠকানি

বুড়ো অ্যান্ডারসনের ভেল্কিতে কাঁপছে কোহিলদের ঠকঠকানি - ছবি সংগৃহীত

 

জেমস অ্যান্ডারসন দৌড়ে আসছেন ব্যাটসম্যানের দিকে। ইনসুইং অথবা আউটসুইংয়ে পরাজিত করছেন প্রতিপক্ষকে। এই দৃশ্য ক্রিকেট বিশ্ব দেখছে গত ১৯ বছর ধরে। ৩৯ বছর ২৯ দিনের অ্যান্ডারসন আজও দৌড়ে আসেন, ব্যাটসম্যানকে পরাজিত করেন।

নাসের হুসেন ধারাভাষ্য দেয়ার সময় বলছিলেন, তার হাত থেকে অভিষেক ম্যাচে টুপি নিয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। তার টেস্ট অভিষেক ঘটে ২০০৩ সালে। স্পোর্টিং লিসবন ছেড়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে সেই বছর যোগ দিয়েছিলেন তরুণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। লিয়োনেল মেসি তখনও বার্সেলোনার সি দলের খেলোয়াড়। ভারতের কাছে তখনো সুনামি অপরিচিত শব্দ। সাদা জামা পরে ২০ বছরের ইংরেজ তরুণের সাথে তখন লড়াই বাঁধত শচিন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলিদের। এরা সকলেই অবসর নিয়েছেন। দৌড়ে চলেছেন অ্যান্ডারসন।

মহেন্দ্র সিং ধোনি, ক্রিস গেল, ইমরান তাহিররা এখনো ক্রিকেট খেললেও অ্যান্ডারসনের মতো নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেটের ধকল নেন না। আইপিএল বা দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেই ক্রিকেট জীবন এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তারা। কিন্তু অ্যান্ডারসনের ওই লোভ নেই। রঙিন জার্সি, টি-টোয়েন্টির গ্ল্যামার, এই সব থেকে বহু দূরে ইংরেজ পেসার। নিজের সব শক্তি তিনি জমিয়ে রাখেন দেশের হয়ে টেস্ট খেলার জন্য। ২০০৯ সালে দেশের হয়ে শেষ বার টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন অ্যান্ডারসন। ২০১৫ সালে শেষ বার খেলেছিলেন একদিনের ক্রিকেট। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখেন না তিনি। সবাই যখন টেস্ট ছেড়ে টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য ছুটছেন, তখন অ্যান্ডারসন দৌড়চ্ছেন লাল বল হাতে।

টেস্ট ক্রিকেটে সচিনকে পাঁচবারের বেশি আউট করা বোলারদের একজন অ্যান্ডারসন। টেস্টে বিরাট কোহলির উইকেট নিয়েছেন সাতবার। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার মতো টেস্ট খেলা প্রতিটি দেশের বিরুদ্ধে ৫০টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের হয়ে সব থেকে বেশি বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি (৩১ বার)। ভারতের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচেও পাঁচ উইকেট নিয়েছেন লর্ডসে।

ইংরেজ কোচ ক্রিস সিলভারউড বলেন, ৪০ বছর বয়সেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার ক্ষমতা রাখেন অ্যান্ডারসন। বয়স বাড়ছে, সেই সাথে আরো ফিট হচ্ছেন অ্যান্ডারসন। মেদহীন চেহারায় গালে হালকা দাড়ি নিয়ে দৌড়ে আসছেন তিনি। কিভাবে এত ফিট? রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তার দৌড়েই। মধ্য ৩০ পার করে নিজের দৌড়ের ধরন পাল্টে ফেলেন অ্যান্ডারসন। অনুশীলনের পরে নিজের দৌড়ের দিকে আলাদা করে নজর দিতেন তিনি। এমনভাবে দৌড় শুরু করেন যাতে পেশিতে এবং হাড়ের সংযোগ স্থলে কম চাপ পড়ে। শরীর যাতে তাড়াতাড়ি ভেঙে না যায় সেই দিকেও বাড়তি নজর দিতে শুরু করেন অ্যান্ডারসন। যে বয়সে পেসাররা খেলা ছেড়ে দেন অথবা টেস্ট ছেড়ে চার ওভারের টি-টোয়েন্টি সংসারে খুশি থাকেন, সেই বয়সে অ্যান্ডারসন নিজেকে আরো ফিট করার ভাবনায় ডুবে।

ইংল্যান্ড দলে একটা সময় অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হতো। দুই প্রবীণ বোলারের উপর যাতে খুব বেশি চাপ না পড়ে সেজন্য এই ব্যবস্থা। তবে টানা খেলিয়ে গেলেও অ্যান্ডারসন যে খেলে যেতে পারেন তা প্রমাণও দিয়েছেন তিনি। চোট পেয়ে ব্রড ছিটকে গেলেও ইংল্যান্ডের পেস বোলিংকে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন একাধিক বার।

১৬৫তম টেস্টে খেলছেন অ্যান্ডারসন। বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখিয়ে চলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাজারের বেশি উইকেট নেয়া অ্যান্ডারসন। বল হাতে তিনি দৌড়ে এলে এখনো বুক কাঁপে কোহলিদের। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বার বার ধারাভাষ্যকারদের চিৎকার শুনে পিছন ফিরে তাকাতে হচ্ছিল টিভির দিকে। দৌড়ে আসছেন অ্যান্ডারসন। বিষাক্ত সুইংয়ে পরাস্ত করছেন ব্যাটসম্যানদের।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us