আফগানদের ফেলে ২০০ কুকুর-বিড়াল নিয়ে কাবুল ছাড়লেন ফার্দিং
আফগানদের ফেলে ২০০ কুকুর-বিড়াল নিয়ে কাবুল ছাড়লেন ফার্দিং - ছবি : ডেইলি মেইল
প্রাক্তন মেরিন সেনা এবং পশুর দাতব্য প্রতিষ্ঠাতা পেন ফার্থিংয়ের স্ত্রী গত রাতে আনন্দের সাথে জানিয়েছেন, তার স্বামী ও স্বামীর লোমওয়ালা বন্ধুরা বাড়ি ফেরার পথে আছে।
কাইসা মার্কহুস, যিনি গত সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে নিজ জন্মস্থান নরওয়েতে পালিয়ে এসেছেন, যখন অসলোতে তার বাবার সাথে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, তখন পেন তাকে কাবুল বিমানবন্দর থেকে ভিডিও-ফোন করেন। তিনি বলেন, 'আপনারা যদি আমার মুখের হাসিখানা দেখতেন!’
বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবারের জোড়া বিস্ফোরণের পর কাইসা জানতেন, তার স্বামী বিমানবন্দরে পৌঁছানোর আরেকটি প্রচেষ্টার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু তিনি কখন বা আদৌ নিরাপদে কাবুলে পৌঁছাবেন কি না, সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না।
পেনের নাটকীয় অপসারণের বিষয়ে ডেইলি মেইলের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি বলেন : 'ও এখন বিমানবন্দরের ভিতরে আছে এবং আমরা ছোট একটা ভিডিও কলও করেছি। যে মুহূর্তে আমি তাকে বিমানবন্দরের ভিতরে নিরাপদ অবস্থায় দেখেছি ... আপনি কল্পনা করতে পারবেন না! ’
একটি খালি ফ্লাইটে শহর থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসার পর থেকে তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন কবে তার স্বামী নিজের প্রিয় পশুগুলো নিয়ে কাবুল থেকে পালাতে পারবেন।
গত রাতে তিনি জানতে পারেন, পেন তালেবান চেকপয়েন্টের বাধা অতিক্রম করে অবশেষে তার নওজাদ দাতব্য কেন্দ্রের উদ্ধার করা ১৫০টি কুকুর-বিড়ালসমেত একটি ফ্লাইটে চড়তে পেরেছেন। কিন্তু তাকে তার কর্মীদের পিছনে ফেলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
‘আমি জানি পেনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া খুব কঠিন ছিল। বৃহস্পতিবার ও যখন ওর কর্মীদের এবং তাদের পরিবারের সাথে বিমানবন্দরে পৌঁছায় তখনও ও একই ধরনের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়। ওর সাথে থাকা পশুগুলোর এবং কর্মীদের ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়নি,’ কাইসা বলেন।
'সুতরাং, সবাই নিরাপদ ছিল তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের সাথে কী করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে ও বিমানন্দরের বাইলে ফিরে যায় । তারা সবাই সিদ্ধান্ত নেন, ওকে আবার কুকুরগুলোকে নিয়ে বিমানবন্দরে ফিরে যেতে হবে।
তিনি বলেন, 'নিজের কর্মীদের ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু ও জানত কুকুরগুলোকে এবং নিজেকে সরিয়ে দিয়ে ও দুটি বড় ঝুঁকি দূর করছে।'
কাবুলের ‘নওজাদ পশু আশ্রয়কেন্দ্র’-এর প্রতিষ্ঠাতা পল ফার্থিং, যিনি ‘পেন’ নামে পরিচিত, 'অপারেশন আর্ক' নামে একটি অভিযানের মাধ্যমে দেশত্যাগের জন্য একটি বিমানের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছিলেন।
গত রাতে যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার সময় ব্রিটিশ সৈন্যরা ফার্থিংঙের পশুগুলোকে একটি প্রাইভেট বিমানে তুলতে সাহায্য করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে এই দলটিকে 'যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী কাবুল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহায়তা করেছে'।
গতকাল রাতে পেনের সমর্থক এবং প্রাণী অধিকার প্রচারক ডমিনিক ডায়ার মেইলকে বলেন: ‘পেন ঠিক আছে, কিন্তু ও খুব ধকলের মধ্য দিয়ে গেছে। ‘
'ওর আফগানিস্তান ছাড়া এবং পশুগুলো সাথে নিয়ে আসা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। আমরা ওদের যুক্তরাজ্যে আসার অপেক্ষায় উন্মুখ।
'ও পালিয়ে আসতে পারায় আমরা খুশি এবং আমরা ব্রিটিশ সরকারের কাছে তাদের সাহায্য এবং সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।'
সূত্র : ডেইলি মেইল