বিশ্বের সর্ব-উত্তরের দ্বীপ আবিষ্কার

বিশ্বের সর্ব-উত্তরের দ্বীপ আবিষ্কার - ছবি সংগৃহীত
এক দল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে সৌভাগ্যক্রমে তারা যে নতুন দ্বীপটি আবিষ্কার করেছেন, সেটি পৃথিবীর সর্বোত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ বলে তাদের বিশ্বাস।
জুলাই মাসে ওই বিজ্ঞানী দল বৈজ্ঞানিক নমুনা সংগ্রহের জন্য বিমানে করে উডাক দ্বীপ, যা ১৯৭৮ সাল থেকে বৈজ্ঞানিক মহলে পরিচিত, উদ্দেশ্যে রওনা দেন ।
কিন্তু আর্কটিক দ্বীপগুলো নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা দিনেমার কর্মকর্তাদের কাছে তাদের অবস্থান জানতে গেলে তারা জানতে পান তারা উডাকের আরও ৮০০ মিটার (২,৬২৫ ফুট) উত্তরে চলে গেছেন।
৬০X৩০ বর্গমিটার আয়তনের এ দ্বীপটি উত্তর মেরুর নিকটতম স্থলভূমি। গ্রিনল্যান্ড সুমেরুর একটি বিশাল স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যা ডেনমার্কের অন্তর্গত।
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিনল্যান্ডের সুমেরু কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক নেতা মর্টেন রাশ বিবিসিকে বলেন, 'দ্বীপটি একটি ডেনমার্ক-সুইস গবেষণা অভিযান, যা আমি সমন্বয় করছিলাম, পরিচালনার সময় আবিষ্কৃত হয়েছিল।'
'অন্য অনেক কিছুর পাশাপাশি আমরা উডাক দ্বীপ পরিদর্শন করতে চেয়েছিলাম, যা এর আগ পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তরের দ্বীপ হিসাবে পরিচিত ছিল।'
রাশ বলেন, তার দল 'এই চরম পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো জীবনযাপনকারী নতুন প্রজাতির সন্ধানে দ্বীপটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে চেয়েছিল।'
তিনি বলেন, 'একটি ছোট হেলিকপ্টারে আমরা ছয় জন যখন উডাক দ্বীপের অবস্থানে পৌঁছাই, তখন আমরা দ্বীপটিকে খুঁজে পাইনি।' এ অঞ্চলের মানচিত্র খুব একটা নির্ভরযোগ্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
'সুতরাং আমরা প্রথমে দ্বীপটিকে খুঁজে বের করতে আরম্ভ করি। কয়েক মিনিট উত্তেজনার পর অবশেষে আমরা একটি নতুন দ্বীপে অবতরণ করি। দ্বীপটা অদ্ভূত, উদ্ভিদহীন, কাদা, গ্রাবরেখার স্তূপ আর নুড়িভর্তি, চারদিকে সমুদ্রের বরফ বেষ্টিত; খুব বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গা নয়।'
তিনি বলেন, 'অভিযান শেষে এবং এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে অনেক আলোচনার পরে আমরা এখন বুঝতে পারছি, দুর্ঘটনাক্রমে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের দ্বীপটি আবিষ্কার করে ফেলেছি।'
রাশ বিবিসিকে বলেছেন যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা 'বড় কোনো ব্যাপার নয়।'
'কিন্তু, ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে, বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের সীমায় কাদামাখা বুটের পদচিহ্ণ রাখতে পারা পৃথিবীর প্রথম ছয়টি মানুষের মধ্যে একজন হওয়া অবশ্যই, কিছুটা কৌতুকজনক।'
বিজ্ঞানীরা এখন দ্বীপটির নাম দিতে চান 'কিকার্তাক আভাননার্লেক’, গ্রিনল্যান্ডীয় ভাষায় যার অর্থ 'সবচেয়ে উত্তরের দ্বীপ'।
গ্রিনল্যান্ড সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বেশ কয়েকবার শিরোনামে এসেছে। ২০৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প পরামর্শ দেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলটি কিনতে পারে।
ডেনমার্ক দ্রুত এই ধারণাটিকে 'অযৌক্তিক' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি