হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেপথ্য কথা

সিরাজউদ্দিন হাক্কানি - ছবি সংগৃহীত
আফগানিস্তানের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবারো লাইমলাইটে এসেছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক। তালেবানের কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানে একটি নতুন শাসন কাঠামো স্থাপনের জন্য গোষ্ঠীটি সামরিক ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে খুব বেশি তৎপর রয়েছে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় জোরালভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
তালেবান বাহিনী আফগান রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তার জন্য হাক্কানি নেটওয়ার্ককে নিয়োগ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১২ সালে তাদেরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। মার্কিনিরা কাবুলে অবস্থিত বিদেশী বাহিনীর ওপর বেশ কয়েকটি হামলার জন্য তাদেরকে দায়ী করে।
কিংবদন্তী কমান্ডার জালালউদ্দিন হাক্কানির প্রতিষ্ঠিত এ নেটওয়ার্কটি আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় সর্বপ্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
১৯৯৬ সালে তালেবানের উত্থানের পর নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখেই হাক্কানি তার গ্রুপকে তালেবানের সাথে একীভূত করেন। তালেবান সরকার ওই সময় তাকে সীমান্তবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়।
জালালাউদ্দিন হাক্কানি একসময় সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে মৌলভী ইউনুস খালিদের হিজব-ই-ইসলামী দলের প্রধান কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তার নিজ প্রদেশ পাকতিয়াতে ইন্তেকাল করেন। তখন তার বয়স আশির কাছাকাছি ছিল।
হাক্কানিরা জাদরান বংশের পশতুন জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে এ নেটওয়ার্কটি উগ্রবাদীদের সাথে, বিশেষ করে আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক রাখে।
পিতা জালালুদ্দিন হাক্কানির মৃত্যুর কয়েক বছর আগে থেকেই সিরাজউদ্দিন হাক্কানি এই নেটওয়ার্কের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তার অধীনেই গ্রুপটি বিদেশী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রধানত কাবুলে অসংখ্য হাই-প্রোফাইল হামলা চালায়।
সিরাজ তার অনুসারীদের মধ্যে খলিফা খেতাবেও পরিচিত।
তালেবানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা আখতার মনসুরের মৃত্যুর পর ২০১৬ সালে মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা যখন তালেবান প্রধান হন তখন তিনি সিরাজকে তার তিনজন ডেপুটির একজন মনোনীত করেন।
একসময় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর সরাসরি সিরাজের তথ্য দিতে পারলে ৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উত্তর ওয়াজিরিস্তান উপজাতীয় অঞ্চল (যা পাকতিয়া প্রদেশের সীমান্তে অবস্থিত) দীর্ঘদিন ধরে হাক্কানিদের দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে পরিচিত। জালালউদ্দিন হাক্কানি উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গোলাম খান শহরে একটি মাদরাসা ও ইসলামিক সেমিনারি স্থাপন করেছিলেন, যা এখনও চালু আছে।
আনাদুলু এজেন্সি অবলম্বনে