তালেবানের বিজয় কি পাকিস্তানেরই জয়
তালেবানের বিজয় কি পাকিস্তানেরই জয় - ছবি : সংগৃহীত
প্রায় পুরো আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নানাভাবে এই জয়কে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এখানে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার 'তালিবানের বিজয় কি পাকিস্তানেরই জয়' শীর্ষক প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দ্রুত অনুমোদন দেন এবং 'দাসত্বের শৃঙ্খল' ভেঙে দেয়ার জন্য গ্রুপটির প্রশংসা করেন।
পশ্চিমা নিরাপত্তাবিষয়ক মূল্যায়নে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তালেবানের জন্মলগ্ন থেকে তাদের লালন করছে।
মঙ্গলবার পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, এ সব কিছু আপাতদৃষ্টিতে পাকিস্তানের জন্য পুরস্কার স্বরূপ। গুয়ান্তানামোতে বন্দী ছিলেন যে আব্দুল কাইয়ুম জাকির, তালেবান তাকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়োগ করেছে। আল জাজিরা প্রথম তার এই নিয়োগের খবর প্রকাশ করে।
লড়াইয়ে ক্ষেত্রে প্রখ্যাত কমান্ডারকে আমেরিকার হেফাজতে বন্দী থাকা অবস্থায় বেশ নিম্নশ্রেণির একজন উগ্রবাদী হিসেবে ভাবা হতো। জাকিরকে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের মিত্র হিসেবে দেখা হয়। হাক্কানি নেটওয়ার্ক হচ্ছে তালেবানের একটি উপদল, যাদের বিদেশী উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।
বলা হয়, জাকির আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সাথে তালেবানের শান্তি আলোচনা শুরু করার বিরোধিতা করে হাক্কানি নেতাদের সাথে একত্রিত হয়েছিলেন এবং বিজয় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করার পক্ষ নেন তিনি।
পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি আইএসআই-এর কাছে জাকির সুপরিচিত। আর সে কারণেই ২০১০ সালে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় নয় তালেবান যোদ্ধার সাথে গ্রেফতার হওয়ার পর দ্রুত তার মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মতে, তখন ৩৮ বছর বয়সী জাকির আফগানিস্তানের সীমান্তে প্রধানত হেলমান্দ প্রদেশে তালেবানের সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি একটি বিদ্রোহী হামলার নির্দেশনা দেও=য়ার জন্য অবাধে সীমান্ত অতিক্রম করতেন, যেখানে ন্যাটো সৈন্যদের লক্ষ্য করে রাস্তার ধারে বোমা পাতা এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা করা হতো।
পাকিস্তান বালুচিস্তান প্রদেশকে আমেরিকান ড্রোন হামলা মুক্ত ঘোষণা করায় ওয়াশিংটন হতাশ বোধ করে এবং পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, যে আইএসআই জাকির এবং তালেবানকে লাগাম মুক্ত করে দিয়েছিল। পাকিস্তানের শীর্ষ এক রাজনীতিক ২০১১ সালে নিউজউইক পত্রিকাকে বলেছিলেন, তারা দল দলে আসছে এবং যাচ্ছে এর কোনো শেষ নেই। তালেবান যা কিছু করছে তা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে ও পর্যবেক্ষণে করছে।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়েছেন যে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আইএসআই ডাবল গেইম বা দু’দিকেই মদত দিচ্ছে। এ বিষয়টি বোঝা গেল যখন বিশ্বের কাছে প্রচার করা হয় যে আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের প্রধান সামরিক একাডেমির কাছে একটি বাড়িতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র খুঁজে পেয়েছিল।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা