আমাদের কেউ কি পারে না একজন ফাওয়াদ আলম হতে?
ফাওয়াদ আলম - ছবি সংগৃহীত
স্বপ্ন দেখা সহজ কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করাটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব কিছু নয়। আমাদের এই জীবনে নানা ঘটনার ফলে স্বপ্নটা সুদূর প্রসারি হয়, সাফল্যটা মরীচিকা হয়েই রয়। এ যেনো...
—আমিও আকাশ খুঁজি,
চৌকোনা বাক্সে বন্দী
গিনিপিগের মত...
শরতের সাদা মেঘ নীলের বুক চুমে
দুর থেকে আরো দুরে চলে যায়...
ধ্বসে যাওয়া নিরেট হিমালয়সম !
কিন্তু স্বপ্নবাজেরা জানে রাতের পরেই প্রভাত আসে, চাঁদ লুকালেই সূর্য হাসে। তেমনি দুঃখের পরেই সুখ আসে, শুধুই প্রয়োজন অবিচল প্রত্যয় আর পাহাড়সম দৃঢ়তা। অর্থাৎ, স্বপ্নবাজেরা পথ ছাড়ে না, স্বপ্নবাজেরা হতাশ হয় না। ওরা অপেক্ষা করে ফাওয়াদ আলমের মতো করে।
ফাওয়াদ আলম; হালের ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণার এক বাতিঘর বলা চলে। কিন্তু তার গল্পটা যে একটা ঢাকা ছিল ঘোর আঁধারে। যদিও নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছিলেন সূচনাকালেই, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় ইনিংসেই ব্যাট হাতে জাত চেনানো ১৬৮ রানের সুরে। যদিও প্রথম ইনিংস থেমেছিল মাত্র ১৬ রানে, পরের ম্যাচে আরো দু'বার ইনিংসটা ১৬ -তেই থেমেছে। অর্থাৎ, প্রথম দুই ম্যাচের চার ইনিংসের প্রতিবারই ফাওয়াদ আলম ১৬ তেই আটকে গেছে; ১৬, ১৬৮(প্রথম দুটো সংখ্যা ১৬), ১৬ এবং ১৬।
অপয়া ১৬ তাকে ছিটকে দিল দীর্ঘ সময়ের জন্য। সেই ২০০৯ থেকে ২০২০; ১১ বছর পর আবারো সাদা কাপড়ে পাক ক্রিকেটে ফাওয়াদ। তিনি ফিরলেও করলেও ফর্মটা ফেরেনি, অভিমান করে আরো দূরে সরিয়ে রেখেছে। পরের ৬ ইনিংসের দুটোতেই ০ এসেছে। বাকীগুলো, ২৯, ৫, ২১, আর ৯। কিন্তু তারপর? পরের গল্পটা পরিসংখ্যান বলে। ১৩ ইনিংসে চারটা শতক, আছে একটা অর্ধসশতকও তাঁর ঘরে।
এমন পরিবর্তন সহজে আসেনি, সাফল্য তার অন্যদের পথে ধরা দেয়নি। কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ আর সাধনার ফলে, আর অবশ্যই দৃঢ়তার প্রখরতায় সৌজন্যে ফাওয়াদ আজ অনুপ্রেরণা সবার জন্যে। সেই সাথে চলতি ম্যাচে ক্যারাবিয়ানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরির মাধ্যমে দারুণ এক কীর্তিও গড়েছেন তিনি। এশিয়ান ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে কম ইনিংসে (২২) ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচটি শতরান করেন ফাওয়াদ।
ফাওয়াদ আলম কি পারবে না আমাদের জন্য শিক্ষা হতে? আমাদের কেউ কি পারে না একজন ফাওয়াদ আলম হতে?