রুশ টিকা নিয়ে জটিলতা
রুশ টিকা নিয়ে জটিলতা - ছবি সংগৃহীত
ট্রায়ালে যথেষ্ট সময় না দিয়ে রুশ নাগরিকদের দিতে শুরু করায় স্পুটনিক ভি-র কার্যকারিতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক বিশেষজ্ঞই প্রশ্ন তুলেছিলেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়ে দেয় এই টিকাকে তারা স্বীকৃতি দেবে না৷ তাতে অবশ্য রুশ ভ্যাকসিনের প্রতি মানুষের আস্থা কমেনি৷ বরং বাকি দেশগুলোতে টিকা দিতে দেরি করায় রাশিয়ায় গিয়েও স্পুটনিক ভি নিয়েছেন অনেকে৷ ডয়চে ভেলের নাটালিয়া স্মোলেনচেভাও তাদের একজন৷
নিজের দেশে গিয়ে অনেক আগে টিকার দুই ডোজ নেয়ার পরও যে তাকে নানাভাবে ভুগতে হচ্ছে তা জানাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘ছয় মাস আগে রাশিয়ায় নিজের বাড়িতে গিয়েছিলাম আমি৷ গিয়ে সেই পরিস্থিতিতে যা করা উচিত মনে হয়েছে, তা-ই করেছিলাম- কোভিড-১৯-এর হাত থেকে বাঁচতে নিয়ে ফেলেছিলাম রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি ৷ ওই সময়, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে তখনও আমার বয়সের মানুষদের টিকা নেয়ার সুযোগ আসেনি৷ তাই আমার মনে হয়েছে নিজেকে এবং নিজের সব কাছের মানুষকে নিরাপদ রাখতে টিকাটা নিয়ে ফেলা দরকার৷ কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে এখন আমাকে ভুগতে হচ্ছে৷ (স্পুটনিক ) টিকাটিকে তো ইইউ অ্যাপ্রুভ করেনি৷... এতদিন হয়ে গেল এখনো স্বীকৃতি দেয়নি ইইউ৷ তাই রাশিয়ায় দুই ডোজ টিকা নেয়া সত্ত্বেও, আমার শরীরে অ্যান্টিবডি গড়ে ওঠা সত্ত্বেও আমাকে নিয়মিত করোনা টেস্ট করাতে হচ্ছে, বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে এমনকি কোয়ারান্টিনেও থাকতে হচ্ছে৷''
কারণ, জার্মানির ডাক্তারদের বিবেচনায় নাটালিয়া স্মোলেনচেভা ‘আনঅফিসিয়ালি টিকাপ্রাপ্ত', অর্থাৎ অফিসিয়ালি তারা মানতে পারছেন না যে নাটালিয়া টিকা নিয়েছেন এবং সে কারণে তিনি অন্য অনেকের চেয়ে নিরাপদ৷
কিন্তু ইইউ স্বীকৃতি না নিলেও রাশিয়ার স্পুটনিক ভি কিন্তু ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে৷ হাঙ্গেরি, আর্জেন্টিনাসহ মোট ৬০টি দেশে এই টিকা দেয়া হচ্ছে৷ গত বসন্তে জার্মানিতে যখন টিকার বেশ সংকট, তখন স্যাক্সনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মিশায়েল ক্রেস্টশমারও চেয়েছিলেন স্পুটনিক ভি কিনে এনে নিজের রাজ্যের মানুষদের দিতে৷ এ বিষয়ে জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পানের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছিল তার৷ কিন্তু টিকার সংকট দূর হযে যাওয়ায় পরে আর স্যাক্সনি রাজ্য সেই পথে এগোয়নি৷অনেক দেশে স্পুটনিক ভি-র কার্যকারিতা প্রমাণিত হলেও জার্মানি এখনো আস্থা রাখছে শুধু ইইউ-এর স্বীকৃতি পাওয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, বায়োনটেক-ফাইজার আর জনসন অ্যান্ড জনসনের ওপর৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে