আফগানিস্তানে মার্কিন ভূমিকা নিয়ে যা বলছে চীন
মোল্লা গনি বারাদার - ছবি : সংগৃহীত
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন আফগান জনগণের ‘ইচ্ছা ও পছন্দকে‘ চীন সম্মান করে।
চীনা মুখপাত্র বলেন, তালেবানের সাথে চীনের যোগাযোগ রয়েছে। “আফগান তালেবান বার বার বলেছে তারা চীনের সাথে সুসম্পর্ক চায়। আমরাও তাদের এই ইচ্ছাকে স্বাগত জানাই।“ তিনি বলেন, “চীন সবসময় আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং ভৌগলিক অখণ্ডতাকে মর্যাদা দিয়েছে।“
তালেবানের কাবুল দখলের পর দিনই চীনা সরকারের পক্ষ থেকে এই মন্তব্য ইঙ্গিত করে কাবুলে ভবিষ্যৎ তালেবান সরকারকে বেইজিং মেনে নিতে প্রস্তুত।
বিশ্বের অনেক দেশ তাদের দূতাবাস বন্ধ করে তাদের কূটনীতিক এবং নাগরিকদের আফগানিস্তানে থেকে বের করে আনার আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করলেও চীন জানিয়েছে কাবুলে তাদের দূতাবাস খোলা এবং কাউকেই ফিরিয়ে আনা হবেনা।
চীনা দূতাবাস থকে বলা হয়েছে তালেবান তাদেরকে নিরাপত্তার ভরসা দিয়েছে, তবে আফগানিস্তানে চীনা নাগরিকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রাশিয়াও জানিয়েছে তারা কাবুলে তদের দূতাবাসের কাজ অব্যাহত রাখবে, এবং কাউকেই আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিচ্ছেনা।
চীন-তালেবান যোগাযোগ
গত ২৮ জুলাই তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মুল্লাহ আব্দুল গনি বারাদারের নেতৃত্বে তালেবানের একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল চীন সফর গিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সাথে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে।
আফগানিস্তানের বিভিন্ন উগ্র ইসলামি গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে চীনের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষ করে উইগুর মুসলিম অধ্যুষিত চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের সাথে আফগানিস্তানের ৫০ মাইলের মতো সীমান্ত রয়েছে এবং ঐ এলাকায় ইস্ট তুর্কমেনিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) নামে উইগুর বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে চীন উদ্বিগ্ন।
‘আমেরিকা বিশ্বাসযোগ্য মিত্র নয়‘
ওদিকে আফগানিস্তানে চলতি ঘটনাপ্রবাহকে চীনের পত্রপত্রিকায় মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অপমানজনক পরাজয় এবং ব্যর্থতা হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।
চীনা সরকারি মুখপাত্র হিসাবে পরিচিত দৈনিক গ্লোবাল টাইমস তাদের এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে আফগানিস্তানে মুহূর্তের মধ্যে ক্ষমতার যে রদবদল তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “বিশাল একটি আঘাত।“
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, আমেরিকা যেভাবে তাদের কূটনীতিক এবং তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে তাতে প্রমাণ হয় যে “মিত্র হিসেবে তারা কখনই বিশ্বাসযোগ্য নয়।“
“নিজের স্বার্থের খাতিরে মিত্রদের ছুড়ে ফেলে দেয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে যেকোনো যুক্তিতেই তা করতে তারা দ্বিধা করবে না।“
চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে ঠাট্টা তামাসাও চলছে।
চীনা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি মন্তব্য শেয়ার করেছেন গ্লোবাল টাইমসের চিফ এটির হু শিজিন যাতে একজন লিখেছেন, “তালেবান যত সহজে আফগানিস্তান দখল করে নিলো তা গত মার্কিন নির্বাচনে পর ক্ষমতা হস্তান্তরের চেয়েও সহজ।“
সূত্র : বিবিসি