মিগ আর এপাচি হেলিকপ্টারও এখন তালেবানের দখলে
এপাচি এটাক কেলিকপ্টার - ছবি : সংগৃহীত
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যে অতি দ্রুত পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে তা অনুভব করা যায় গত ১০ দিনের ঘটনা পরম্পরায়। এই সময়ে তালেবান আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৯টির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। বানিয়ান ছাড়া বাকি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করার জন্যও তালেবান অগ্রসর হচ্ছে। এর মধ্যে তালেবান গোষ্ঠী হেরাত ও কান্দাহার শহর দখলের পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাদেশিক রাজধানী, কালাত, তেরেনকোট, পুল-ই আলম, ফিরুজ কোহ, কালা-ই-নাউ এবং লস্করগাহ দখল করে নেয়।
গুরুত্বপূর্ণ প্রাদেশিক রাজধানী মাজার ই শরীফের যেকোনো সময় পতনের খবর আসতে পারে। এটি হলে কাবুলের বাইরে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রদেশ সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। তালেবানের অতিদ্রুত দেশের উপর এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কাবুল সরকারের মধ্যে সঙ্গত কারণেই অস্থিরতা বেড়েছে। আফগান অর্থমন্ত্রী তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ কাবুল ছেড়ে তাজিকিস্তান চলে যাবার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক ব্যক্তি দেশ ত্যাগের প্রস্ততি নিচ্ছেন।
বিস্ময়কর একটি বিষয় হলো অনেকগুলো প্রদেশ তালেবানের নিয়ন্ত্রণে গেছে যেখানে সেভাবে কোনো যুদ্ধ হয়নি। কাবুল অনুগত প্রশাসনের লোকজন তালেবানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করে বাড়ি চলে গেছেন। তালেবান বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রশাসনের লোকদের তাদের স্ব স্ব পদে বহাল রাখছে। ফলে সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তিতে কোনো সংকট হচ্ছে না। অফিস আদালত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে চলছে। কুন্দুজে সরকারি বাহিনী দুটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার তালেবানের হাতে দিয়ে চলে গেছেন। হেরাতে দুটি মিগ ২১ এবং দুটি এপাচি এটাক কেলিকপ্টার সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় তালেবান হাতে পেয়েছে। হেরাতের কাবুল সরকার নিয়োজিত গভর্নর তালেবানে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
তালেবান সূত্রগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, কাবুল ছাড়া বাকি প্রাদেশিক রাজধানীগুলো এক প্রকার তাদের নিয়ন্ত্রণের দৃষ্টিসীমার মধ্যে রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজধানী ছাড়া পুরো আফগানিস্তানে তালেবানের নিযন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে। কাবুলের পতনের ব্যাপারে দুটি সম্ভাবনার কথা জানা যাচ্ছে। একটিতে বলা হচ্ছে, তালেবান স্পর্শকাতর রাজধানী কাবুলকে সামরিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় না। তারা এক ধরনের সমঝোতার মাধ্যমেই কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আর কাবুলে থাকা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারসহ বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গকে অন্তবর্তী প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। এটি হলে তালিবান নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার আন্তর্জাতিক সব পক্ষের সহজ স্বীকৃতি পাবে।