চাঁদের বুকে নামতে চলেছেন আরব দুনিয়ার নারী মহাকাশচারী
লক্ষ্য চাঁদ। আমিরাতের দুই মহাকাশচারী মোহাম্মদ আলমুল্লাহ ও নোরা আলমাত্রুশি - ছবি সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাত এ বার পা রাখতে চলেছে চাঁদে। চাঁদের পিঠে দুই মহাকাশচারীকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। তাদের মধ্যে একজন নারী।
এই প্রথম কোনো নারীকে চাঁদের বুকে হাঁটানোর পথে এগোচ্ছে আরব দুনিয়ার কোনো দেশ। মহাকাশেও এর আগে যাননি আরব দুনিয়ার কোনো নারী।
আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চাঁদের বুকে নামানোর জন্য দুই মহাকাশচারীকে বেছেও নেয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। তাদের একজন ২৮ বছরের তরুণী মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নোরা আলমাত্রুশি। অন্যজন ৩২ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলমুল্লাহ। যার এক দশক ধরে দুবাই পুলিশের হেলিকপ্টারের দক্ষ পাইলট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দু’জনকেই দু’বছরের প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে পাঠানো হবে আর কয়েক দিনের মধ্যেই।
আরব দুনিয়ার প্রথম ভাবী নারী মহাকাশচারী নোরা আলমাত্রুশি আলমাত্রুশি লিখেছেন, 'ছোটবেলা কাগজ আর কার্ডবোর্ডের বাক্স দিয়ে মহাকাশযান বানাতাম। আর স্বপ্ন দেখতাম সেই মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে যাওয়ার। মাকে কতবার বলেছি, আমাকে একবার যেতেই হবে চাঁদে।'
সেই চাঁদ যদিও এখনো দূর অস্তই আলমাত্রুশির কাছে। ই-মেইলে লিখেছেন, “আমেরিকার নাগরিকরা যে ভাবে ইংরেজি বলেন, লেখেন, এখন শুধু সেই সবই শিখছি। শিখছি রুশ ভাষাও। কখনো যদি আন্তর্জাতিক মহাকাশে স্টেশনে গিয়ে থাকতে হয় রুশ মহাকাশচারীদের সাথে, তার জন্য। আর মহাকাশচারী হওয়ার একেবারে সহজপাঠের প্রথম কয়েকটি বর্ণ শিখছি দুবাইয়ে। শিখছি অতলান্ত পানিতে কিভাবে ডাইভ দিতে হয়। সেপ্টেম্বরে যাব নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে। সেখানেই শুরু হবে টানা দু’বছরের প্রশিক্ষণ। চাঁদ অথবা আন্তর্জাতিক মহাকাশে স্টেশনে শেষ পর্যন্ত যেতে পারলে আমার অন্তরে লুকিয়ে থাকা শিশুটিই বোধহয় সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।”
আলমাত্রুশি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখার পরেই তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পাশ করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তার পর চাকরি করতে ঢুকেছিলেন একটি পেট্রোলিয়াম শিল্পসংস্থায়। আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মহাকাশচারী খুঁজছে জানতে পেরে আবেদন করেন আলমাত্রুশি। পরীক্ষার ভিত্তিতে তাকে বেছে নেয় আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
আমিরাতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তিন বছর আগেও আমিরাত থেকে তিনজনকে মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয়েছিল নাসায়। তাদের একজন হাজ্জা আল মানসুরি রাশিয়ার সয়ুজ রকেটে চেপে মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে সেখানে এক সপ্তাহ কাটিয়ে আসেন বছর দু’য়েক আগে। আর একজন সুলতান আল নায়েদিও মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।
শুধুই চাঁদ নয়, কয়েক দিন আগে মহাকাশবিজ্ঞানের গবেষণায় নেমে জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ সুন্নি সম্প্রদায়প্রধান মুসলিম রাষ্ট্র আমিরাত লাল গ্রহ মঙ্গলের দিকেও হাত বাড়িয়েছে। নাসার রোভার পারসিভের্যান্সের আগেই আমিরাতের পাঠানো ‘হোপ অরবিটার’ মহাকাশযান পৌঁছে গিয়েছে মঙ্গল মুলুকে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা