ভারত ও পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র
ভারত ও পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র - ছবি : সংগৃহীত
পরমাণু নিরস্ত্রকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি এমন দেশ ভারত ১৯৭৪ সালে প্রথম পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ১৯৯৮ সালে পুনঃবিস্ফোরণ ঘটায়। ধারণা করা হয়, ভারতের কাছে ১৫০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ভারত যদিও প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না এমন নীতিতে বিশ্বাসী, কিন্তু সম্প্রতি ভারতের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, পরমাণু অস্ত্রধারী নয় এমন দেশ কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ভারত প্রথম পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতি মেনে চলবে। ভারতের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টার এ বক্তব্য দ্বারা প্রতিভাত যে, তার প্রতিবেশী পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ পাকিস্তান বা চীন দ্বারা আক্রান্ত হলে রাষ্ট্র দু’টির বিরুদ্ধে প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে ভারত কোনোরূপ দ্বিধা করবে না। ভারতের দাবি চুক্তিটিতে ভারত স্বাক্ষর না করার অর্থ এ নয় যে, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ নয়, বরং ভারত মনে করে চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ এবং এটি সর্বজনীন অবৈষম্যমূলক যাচাই ও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সমর্থন করে না।
পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে দু’টি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ধারণা করা হয় দেশটির কাছে ১২০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ভারতের মতো পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিটি বৈষম্যমূলক। এ বিষয়ে পাকিস্তানের সুস্পষ্ট অবস্থান তার সাথে বিবাদে লিপ্ত ভারত পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়ায় পাকিস্তানের নিজেকে সুরক্ষার অধিকার রয়েছে আর তাই পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর দেশটির বিবেচনায় যথার্থ নয়। ২০১০ সালে অবধি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারত পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে পাকিস্তানও চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে- এ কথাটি বলা হলেও পরবর্তীতে পাকিস্তান এ অবস্থান হতে সরে এসে দাবি করে আসছে যে, তাকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেই কেবল দেশটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।
ভারত ও পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর দেশ হলেও দেশ দু’টির কোনোটিই পরমাণু সরবরাহকারী দেশের (এনএসজি) অন্তর্ভুক্ত নয়। এ দু’টি দেশ বিভিন্নভাবে এনএসজিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়ে তৎপরতা চালালেও একটির ক্ষেত্রে চীন এবং অন্যটির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে।