পিয়াসা-মৌ : মডেল না গ্লামার্স গার্ল?
পিয়াসা-মৌ - ছবি : সংগৃহীত
কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম মৌয়ের ‘মডেল’ পরিচিতি নিয়ে বিবৃত শিল্পী সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন পুলিশের হাতে আটক পিয়াসা ও মৌ কোনো মডেল বা শিল্পী সংগঠনের সদস্য নন। তারপরও তাদের মডেল পরিচয় দেয়া হচ্ছে। এর আগেও কিছু তরুণী আটকের পর তাদেরকে মডেল কিংবা চিত্রনায়িকা পরিচয় দেয়া হয়েছে, যা শিল্পী চিত্রনায়িকা বা মডেলদের জন্য বিব্রতকর। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিয়াসা ও মৌ এদের নামের সামনে মডেল শব্দটি যুক্ত থাকলেও মূলত তারা গ্ল্যামার্স গার্ল। মডেল না হয়েও চেহারার লাবণ্য আর শারীরিক সৌন্দর্যকে পুঁজি করে বিত্তশালীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ উপার্জন ছিল তাদের কাজ।
পিয়াসা ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। এনটিভির রিয়েলিটি শো ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’র অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন পিয়াসা। কাজ করেছেন এশিয়ান টেলিভিশনের পরিচালক এবং প্রিভিউ কমিটির প্রধান হিসেবে।
এদিকে ৪৩ বছর বয়সী মৌ ফার্স্ট ফাইন্যান্স নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এ কে এম ফয়সাল আহমেদ চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী। অভিযোগ রয়েছে ফয়সালকে বিয়ে করার আগে মৌ আরো ১১টি বিয়ে করেছেন। মোটা অঙ্কের কাবিনে তিনি প্রতিটি বিয়ে করেন। সুযোগ বুঝে তালাক দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। তিনি মডেল পরিচয়ে মোহাম্মদপুরে বাসায় মাদক বিক্রিসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকার ধনাঢ্য পরিবারের নারীদের কাছে টাকার বিনিময়ে ছেলে সরবরাহ করতেন।
এ বিষয়ে অভিনয়শিল্পী সঙ্ঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, পিয়াসা ও মৌ এদের আমরা চিনি না। কোথাও কাজ করেছে বলেও জানি না। এরা কী করে শিল্পী, মডেল হলো এদের কারণে দেশে বিদেশে প্রকৃত শিল্পীদের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, ইদানীং দেখছি ছেলেমেয়েরা কোথাও অপরাধ করে ধরা পড়লেই নিজেদের মডেল বা অভিনয়শিল্পী দাবি করছে। এটা শিল্পীদের জন্য বিব্রতকর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত এদের আটকের পর এদের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া। তিনি বলেন, তাদের কয়েকটি সংগঠন রয়েছে। তাই কোথাও কেউ নিজেকে মডেল বা অভিনয়শিল্পী দাবি করলে উচিত আমাদের সংগঠনের যে কাউকে ফোন করে নিশ্চিত হওয়া।
অন্য দিকে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি ও অভিনয়শিল্পী সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘গ্রেফতার দু’জনের কাউকে আমরা কখনোই মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে দেখিনি। চিনিও না। শিল্পী সমিতির কেউ তাদের চিনেন না। তাহলে ওরা কী করে মডেল হলো সেটি আমাদের প্রশ্ন।
শিল্পী সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চলমান পরিস্থিতি আসল শিল্পীদের অস্তিত্ব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ অনেকে টিকটকার কিংবা নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অভিনয় করে নিজেকে মডেল কিংবা অভিনয়শিল্পী দাবি করছে। তিনি বলেন, এমনও ঘটছে কেউ হয়তো সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রেন্ডলি মেইড ভিডিওতে অভিনয় করেছে, মডেল হিসেবে হয়তো ছবি আছে বাসার পাশের দর্জি দোকানে অথবা একটা দুটো বিলবোর্ডে রয়েছে সেও নিজেকে মিডিয়াতে অ্যাক্টর বা মডেল দাবি করছে। এরপর কোনো অপরাধে আটক হলে তার নামের আগে শিল্পী কিংবা মডেল শব্দটি যুক্ত হচ্ছে। বিষয়টি প্রকৃত শিল্পীদের জন্য অসম্মানজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ কাউকে মডেল ও অভিনয়শিল্পী হিসেবে প্রচারের আগে তার পরিচয় অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন।