তালেবান কি সত্যিই অপরাধী?
তালেবান কি সত্যিই অপরাধী? - ছবি : সংগৃহীত
প্রপাগান্ডা শব্দটির বাংলা ‘প্রচারণা’ করা হলে বড় জোর এটিকে বাণিজ্যিক পণ্যের প্রচার প্রসার করার বিষয় বলে মনে হয়। বাস্তবের দুনিয়ায় শব্দটির কঠিন কঠোর প্রয়োগ হয়েছে। পররাজ্য দখলকারি যুদ্ধবাজরা এর এমন ব্যবহার করেছে। এর ফলে ডাহা মিথ্যা অস্তিত্বহীন জিনিস সত্য পরিণত করা গেছে। আদৌ আমলযোগ্য নয় এমন বিষয় মানুষের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। নতুন নতুন শব্দ ও ধারণা তৈরি এবং সেগুলোকে সংবাদমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে তারা এটি করেছে। বিগত শতাব্দীতে হঠাৎ করে মানুষের সামনে আসল ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’। এর আগে এ ধরনের কোনো ভাষা এবং তা গণহারে মানুষের প্রাণহানির কারণ ঘটাতে পারে বলে জানা ছিল না। যুতসই শব্দ প্রয়োগ করে মানুষের কল্পনার জগতে গণভীতি তৈরি করা হয়েছিল। আর সেটি দিয়ে মহল বিশেষ নিজেদের উদ্দেশ্য শতভাগ হাসিল করে নিয়েছে।
আমেরিকার নেতৃত্বে যখন ইরাক আক্রমণ করা হয় তখন দেশটির শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো ছিল। স্বাধীনভাবে শাসিত হলে এতদিনে ইরাক উন্নত দেশের সারিতে শামিল হতো। সাদ্দাম হোসেন দেশের মানুষের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রের প্রয়োগ করেছিলেন। এমনকি আমেরিকার শত্রু ইরানের বিরুদ্ধেও এমন অস্ত্র প্রয়োগ করেছেন। সাদ্দামের মানবতাবিরোধী নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড আমেরিকার মদদেই ঘটেছিল। তাই ওই সময় তারা সাদ্দামের বিরুদ্ধে এমন গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অভিযোগ আনেনি। অভিযোগটি আনা হলো যখন তারা দেখল, মধ্যপ্রাচ্যে একজন জাতীয়তাবাদী নেতার উত্থান হতে যাচ্ছে যিনি আরবদের নেতৃত্বে দিলে আমেরিকার আধিপত্য ও ইসরাইলের জন্য হুমকি হতে পারে। একই কারণে আরব লীগের সদস্য, আফ্রিকার উদীয়মান দেশ লিবিয়াকেও ধ্বংস হয়ে যেতে হল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়া ও ইয়েমেনকেও শেষে এই তালিকায় যুক্ত হতে হলো।
পরাশক্তি আমেরিকার অন্যায্য যুদ্ধ কিভাবে বিভিন্ন জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনল আমরা বিগত দশকগুলোকে তার দর্শক। তারা মূলত প্রথমে একটা বয়ান তৈরি করছে। তাদের এজন্য একদল বয়ান রচনাকারী গোষ্ঠী রয়েছে। এরপর সেই বয়ান জনমানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের রয়েছে শক্তিশালী মিডিয়া। আফগানিস্তান আক্রমণ করার জন্য তাদের নতুন তৈরি করা শব্দগুলো ছিল ‘জঙ্গিবাদ’ ও ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদ’। ইসলামী বিশ্বে ‘মুজাহিদ’ শব্দটির ব্যাপক প্রচলন অল্পসময়ের ব্যবধানে হয়ে গেল ‘জঙ্গি’। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছিল তাদের তকমা ছিল ‘মুজাহিদ’। তারা ইসলামী বিশ্বে মহিমান্বিত হয়েছেন একসময়। অথচ এদেরই সর্বশেষ সংস্করণ তালেবান হয়ে গেল ‘জঙ্গি’। তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াইকে বৈধতা দিতে এলো ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের’ কথামালা। আরো কিছু চটকদার শব্দ ও বয়ান তালেবানকে ‘দানব’ ও আমেরিকাকে ‘স্বর্গীয়’ শক্তি হিসেবে মানুষের সামনে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ইতিহাসে দানব চরিত্রটি বিপুল শক্তির মালিক বোঝায়। দানবরা সাধারণত অসুরের শক্তি দিয়ে ভালো মানুষগুলোকে হত্যা করে। শয়তান তাদের মূল দেবতা। অন্য দিকে মানুষকে বাঁচাতে লড়াই করে ভালো মানুষেরা। তারা পৃথিবীর নায়ক। তাদের পৃষ্ঠপোষক আমেরিকা। আর তারা বাইবেলে বর্ণিত ঈশ্বরের আশীর্বাদপুষ্ট। বিশ্বে এমন ধারণা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা বিগত সাত দশকের বেশি সময় ধরে চলছে। প্রপাগান্ডা শব্দটি দিয়ে ঠিক এমন ধারণা ও আবহ তৈরি করাকে বোঝায়। ভালো কথার মোড়কে সৃষ্ট এ বয়ান কতটা মারাত্মক, সুপার পাওয়ার আমেরিকার বিপুল পেশিশক্তির প্রয়োগে ইতিহাস এর সাক্ষী হয়ে গেছে। আশার ব্যাপার হচ্ছে একমেরু বিশ্বের ভয়াবহ পরিণতি থেকে বিশ্ববাসী সম্ভবত পরিত্রাণ পেতে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা বিশ্ব মোড়ল হয়েছে। এরপরে তারাই যেন ইতিহাসের বরপুত্র। তবে তারা ভাষারও মালিক, ভাষার ওপর তারা জোর খাটাতে পারেন। তাই নিজেদের মতো বয়ান তৈরি করে সেটি প্রতিষ্ঠা করেন। হিরোশিমা নাগাসাকিতে মানুষের ওপর পরমানু বোমা হামলা চালায় আমেরিকা। সেখানে কত লোক মারা গেছে সেটা নিয়ে বিভিন্ন মত ও হিসাব রয়েছে। কোনো হিসাবে তা এক লাখের কম নয়। কারো মতে সেটা আড়াই লাখ। তবে পরমাণু বিকিরণের ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব ওই অঞ্চলের মানুষ গত ৭৫ বছর ধরে ভোগ করছে। সেখানে এখনো জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ শিশু। এমন মানব বিধ্বংসী অস্ত্রের একমাত্র ব্যবহারকারী আমেরিকা; এতে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়। মানুষের বিরুদ্ধে এতবড় অপরাধ আমেরিকা ছাড়া অন্য কেউ করতে পারেনি। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে আমেরিকা এই অপরাধ করেছে সেই জাপানিদের তারা বগলদাবা করেছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেও কোনো জাতিকে অধীনস্থ বানিয়ে তাদের কাছ থেকে বন্ধুত্বের এমন স্বীকৃতি আদায় ইতিহাসের বিরল ঘটনা। এমন ওষুধ তারা জাপানিদের গিলিয়েছে প্রতিশোধ নেয়া তো দূরের কথা উল্টো আমেরিকার হয়ে লড়তেও তারা প্রস্তুত হয়ে যায়।
বিশ্ব মানবতার বিরুদ্ধে এর পরের বড় অপরাধগুলোর তালিকা যদি করা হয় তাহলে দেখা যাবে পরাশক্তি আমেরিকা সেগুলো বিগত সাত দশক ধরে করেছে। এসব অপরাধের প্রতিক্রিয়া হয়েছে বিভিন্নমুখী। রাষ্ট্র হিসেবে ইরাক লিবিয়া ও সিরিয়াকে তারা মোটামুটি ধ্বংস করে দিতে পেরেছে। এসব দেশের উন্নত সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের গৌরবকেও মুছে দিতে পেরেছে তারা। এই মানুষেরা এখন অধীনস্থ পরাস্ত। তারা এখন হীনমনা। ভিয়েতনামকেও তারা প্রায় ধংস করে দিয়েছিল। তবে তারা এখন উঠে দাঁড়িয়েছে। এসব দেশে আমেরিকা ও তার নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধগুলো করেছে। হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। তাদের রাষ্ট্রীয় অবকাঠমো ভেঙে দিয়েছে।
আমেরিকান প্রভাবাধীন পশ্চিমা মিডিয়ায় এর উল্লেখ খুব কম। তারাই যুতসইভাবে বয়ান তৈরি করেছে, তালেবানরা ‘জঙ্গি’। পশ্চিমা মিডিয়া হয়ে সারা বিশ্বের জন্য বিগত দুই দশক ধরে তালেবানের বিরুদ্ধে যে খবর উৎপাদন করা হয়েছে তার সারমর্ম হচ্ছে, তারা নারীবিদ্বেষী। তালেবানের নির্দেশ, প্রত্যেক নারী একজন পুরুষের অধীনে থাকবে। বাইরে বেরুতে হলে একজন পুরুষের সাথে বেরুতে হবে। পুরো শরীর ঢাকা ছাড়া বাইরে তারা বেরোতে পারবে না। তারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। আর পুরুষরা দাড়ি কাটতে পারবে না। তাদের ‘ইসলামী পোশাক’ পরতে হবে। তালেবানরা ভেঙে ফেলেছে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ গৌতম বুদ্ধের মূর্তি। এ ধরনের বাহ্যিক আচরণগত কঠোরতা প্রদর্শনের দীর্ঘ তালিকা মিডিয়া তৈরি করেছে তালেবানের বিরুদ্ধে যা মূলত ধর্মীয় গোঁড়ামি। এ ধরনের কট্টর গোঁড়ামির বহু নজির রয়েছে সারা বিশ্বের অসংখ্য উপজাতির মধ্যে। এমনকি প্রধান ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন গোঁড়ামি রয়েছে। এগুলোকে উপস্থাপন করা হচ্ছে তালেবানকে দানব হিসেবে প্রমাণ করতে। এমন ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে কয়জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, কয়জন ভিটেমাটি হারা হয়েছে সে হিসাব কোথাও নেই। এসব ধর্মীয় গোঁড়ামির বয়ান এতটা জোরালো প্রদর্শন করা হয়েছে যে, বোমা বর্ষণ করে হাজার হাজার মানুষ মারার প্রতিদিনকার খবর তার নিচে চাপা পড়ে হাওয়া হয়ে গেছে। পরমাণু বোমার একমাত্র ব্যবহারকারী আমেরিকার অন্যায়ভাবে আফগানিস্তান হামলার চেয়ে বড় করে মানুষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে তালেবানি এ ‘দানবতাকে’।
টুইন টাওয়ার হামলার জন্য গুহা ও জঙ্গলে বসবাসকারী তালেবানের ওপর দায় চাপানো হলো। এর সপক্ষে একটা বয়ান রচনা করা ছাড়া তাদের কাছে তখন কোনো প্রমাণ ছিল না। ধর্মীয় গোঁড়ামির যেসব অভিযোগ তালেবানের বিরুদ্ধে সেটা যে প্রপাগান্ডা নয় তার প্রমাণও নেই। আফগানদের বিরুদ্ধে রচিত প্রপাগান্ডার কোনো সুষ্ঠু সুরাহা না হলেও নতুন এক বাস্তবতা দেখছে বিশ্ব। আফগান যুদ্ধে আমেরিকা ক্ষান্ত দিয়েছে। তালেবানদের সাথে তারা গত বছর আলোচনায় বসে কাতারের রাজধানী দোহায়। তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি অনুযাযী ইতোমধ্যে তাদের প্রায় সব সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে আফগান থেকে। আফগানিস্তান নিয়ে প্রকাশ করা আমেরিকার সাম্প্রতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাদের রচিত ‘জঙ্গি’ ও ‘সন্ত্রাসী’ শব্দগুলো একবারও তালেবানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেনি।
আমেরিকান প্রশাসন তাদের ‘ন্যারেটিভ’ পরিবর্তন করেছে। নতুন বয়ানে তালেবান এখন জাতীয়তাবাদি। যা মোটামোটি কোনো অপরাধ নয়। আমেরিকার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ মার্ক মিলি যিনি স্বৈরাচারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বে জেনারেলদের আইকন হয়েছেন সেই মিলি তার বক্তব্যে আফগানিস্তানে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে দেশটির নেতৃত্বের জন্য পরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন। এই নেতৃত্ব যে শুধু আশরাফ গানির সরকার নয় সেটা বোঝার বাকি নেই। অন্যদিকে একই সময় দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব লয়েট অস্টিন ইসলামিক যেসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম নিয়েছেন সেগুলোর সাথে তালেবানের কোনো সম্পর্ক যে নেই তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট। মোট কথা হচ্ছে ২০ বছর একটানা যুদ্ধ করার পর তারা বুঝেছে এরা তালেবান নয়, এরা মূলত আফগান জাতীয়তাবাদী শক্তি যাদের কাছে এর আগে পরাস্ত হয়েছিল মঙ্গোল, ব্রিটিশ ও সোভিয়েতরা।
রাশিয়া ও চীনও এই তালেবানের সাথে এখন আলোচনা করছে। আগ্রহ দেখাচ্ছে ‘জঙ্গিবাদ’ এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব ভারত। এর মধ্যেও পশ্চিমা মিডিয়া তালেবান নিয়ে আগের মতো বয়ান রচনায় ক্ষান্ত দেয়নি। আমরাও এখনো তাদের চশমায় সেটি দেখছি। প্রপাগান্ডার তোড়ে তালেবানের বিরুদ্ধে যে বিদ্বেষ বাংলাদেশী মিডিয়ায় তৈরি হয়েছে, আমেরিকা স্বয়ং তা থেকে সরে এলেও বাংলাদেশের বেশির ভাগ মিডিয়া আগের অবস্থানে রয়ে গেছে। তালেবান অগ্রাভিযানের ঘটনা বাংলাদেশী পত্রিকায় কিভাবে তুলে ধরা হচ্ছে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটো খবর থেকে সেটা আমরা যাচাই করে দেখব।
প্রথম খবরটি আফগান সরকারি বাহিনীর ২২ কমান্ডো হত্যা বিষয়ক। দ্বিতীয়টি তালেবান ও সরকারি বাহিনীর যুদ্ধের সময় নিহত, পুলিৎজারবিজয়ী এক ফটোসাংবাদিকের। প্রথমটি আমাদের দেশের একটি পত্রিকায় ১৪ জুলাই ও দ্বিতীয়টি তার তিন দিন পর একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকাটি আন্তর্জাতিক পাতায় প্রথম খবরটি শিরোনাম করে ‘২২ নিরস্ত্র কমান্ডোকে হত্যা তালেবানের’। এই কমান্ডোরা আফগান স্পেশাল ফোর্সের সদস্য। খবরের বিবরণ অনুযায়ী উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধের এক পর্যায়ে কমান্ডোদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে যায়। তারা তখন আত্মসমর্পণ করতে চাইলে তালেবান তাদের এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে সবাইকে হত্যা করে। এর সপক্ষে ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সংবাদ প্রচারকারী আমেরিকান মিডিয়া সিএনএন দিয়েছে। ওই ভিডিওতে একজনকে কথা বলতে শোনা যায় যিনি কমান্ডোদের গুলি করতে নিষেধ করেছেন। এতটুকুই এভিডেন্স।
২২ জন কমান্ডো আত্মসমর্পণ করতে চাইল, তার পরও তাদের ‘হত্যা করা হলো’, এটি একটি বড় ও তাৎপর্যপূর্ণ খবর যার ফলোআপ আর মিডিয়ায় পাওয়া যায়নি। অথচ যাচাই বাছাই না করে সিএনএনের বরাতে খবরটি ফলাও করে প্রকাশ করে দেয়া হলো। দ্বিতীয় খবরটি একই পত্রিকায় ‘তালেবান হামলায় পুলিৎজারবিজয়ী সাংবাদিক নিহত’ শিরোনামে ছাপিয়ে দিয়েছে। অথচ আদৌ সেটা তালেবানের হামলায় নিহত হওয়ার নিশ্চিত ঘটনা ছিল না। মূলত সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যে যুদ্ধে তিনি নিহত হয়েছেন সরকারি ফৌজের সাথে থাকাকালে।
আমাদের মিডিয়া বিশ বছর ধরে তালেবান বিষয়ে আমেরিকান বয়ান একচেটিয়া প্রকাশ করেছে। এতে করে কতটা লাভ হয়েছে সেটা ভাবার এখনো প্রয়োজন মনে করছে না যেখানে খোদ আমেরিকা তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। আমরা যদি হিসাব করি, তাহলে দেখবো এই প্রচারণা থেকে বাংলাদেশের কোনো লাভ হয়নি। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনেও এই বয়ান কাজ করেছে। বাংলাদেশের মিডিয়াও নিজের স্বাধীনতা ধরে রাখতে পারেনি একই কারণে। এখন সময় বদলেছে। নতুন বয়ান তৈরি না হলেও পরিস্থিতি বদলানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তালেবান মুখপাত্ররা প্রায় সময়ে একটি কথা বলছেন ‘ইসলাম’। তাদের না কি আগে ইসলাম চাই। তাদের বোঝা উচিত ধর্মীয় গোঁড়ামির অভিযোগকে পরমাণু অস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী করে প্রয়োগ করা হয়েছে। তার নেতিবাচক প্রভাবে পুরো ইসলামী দুনিয়া ভুগেছে। এর প্রভাবে ভারতের মুসলমানরাও নিগৃহীত হয়েছেন। সত্যিকার অর্থে তালেবানরা যদি ইসলামকে ধারণ করেন তাহলে তাদের এমন ধর্মীয় ‘গোঁড়ামি’র সুযোগ কেউ নিতে পারবে না। সুতরাং তালেবান মুখপাত্রের উচ্চারিত ‘ইসলাম’ তাদের কাজে কর্মে প্রতিফলিত হতে হবে।
jjshim146@yahoo.com