কেমন আছে মাল্টার মুসলিমরা?

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন | Jul 25, 2021 07:59 pm
নামাজ আদায় করছে মাল্টার মুসলিমরা

নামাজ আদায় করছে মাল্টার মুসলিমরা - ছবি : সংগৃহীত

 

ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ মাল্টা প্রজাতন্ত্রের প্রায় ছয় হাজার মুসলমান বৈরী পরিবেশেও ধর্মচর্চা ও অনুশীলন অব্যাহত রেখেছেন। রোমান ক্যাথলিজম মাল্টা প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হলেও সব ধর্ম পালনের অধিকার সংবিধানস্বীকৃত। মাল্টা প্রজাতন্ত্রে ৩৬০টি গির্জা থাকলেও মসজিদ আছে মাত্র একটি। লিবিয়ার ওয়ার্ল্ড ইসলামিক কল সোসাইটি ১৯৭৮ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত করে।

পাওলা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মসজিদের নাম ‘মরিয়ম বতুল মসজিদ’। লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ভিত্তি স্থাপন করেন। সেন্টারের অধীনে রয়েছে মসজিদ, মুসলিম শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রশাসনিক দফতর, গ্রন্থাগার ও মিলনায়তন। মাল্টার সাধারণ জনগণকে ইসলামী আদর্শে উদ্বুদ্ধ ও আরবি ভাষার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এ সেন্টারে নিয়মিত সংলাপ, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। কারাবন্দী, দুস্থ, অনাথ ও দরিদ্রদের সাহায্য করতে রয়েছে এ সেন্টারের বিশেষ প্রকল্প। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে ইসলামিক কালচারাল সেন্টার কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনার আয়োজন করে থাকে। মাল্টার প্রধানমন্ত্রী, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, বিশিষ্ট নাগরিকরা এতে যোগ দেন।

৯০৯ সালে মাল্টা মিসরীয়-ফাতেমীয় আমিরদের দ্বারা শাসিত ছিল। আরব মুসলমানরা এ দ্বীপে কৃষি, নতুন জাতের ফল, তুলা এবং সিসলো-আরবি ভাষার উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১২২৪ সালে প্রথম ফ্রেডারিকের শাসনামলে মাল্টা থেকে মুসলমানদের বহিষ্কার করা হয়। মুসলমানরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর সাথে সম্প্রীতিমূলক আচরণ করলেও পরিস্থিতি অনেক সময় ঘোলাটে হয়ে ওঠে। সরকার, রাষ্ট্র ও সংবিধানের প্রতি মাল্টার মুসলমানদের রয়েছে আনুগত্য। মুসলিম বিশ্বের দাওয়াতি চেতনাসম্পন্ন ও বিত্তশালী মুসলমানদের সহায়তা পেলে তাদের অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।

মাল্টা প্রজাতন্ত্রের Birkirkara, Bugibba, Fgura, Ghaxaq, Marsa (Albert Town), Hal Safi (Open Centre), Pieta, St. নামক স্থানে নির্ধারিত ফ্ল্যাটে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কিছু উগ্র জাতীয়তাবাদীর প্ররোচনায় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে নামাজ আদায়ে বাধা দেয়। প্রতিবাদে সম্প্রতি শত শত মুসলমান রাজপথে নেমে পড়েন। রাস্তায় নামাজ আদায় করেন। তারা নামাজ আদায়ে নির্ধারিত ফ্ল্যাট খুলে দেয়ার দাবি জানান। লাইসেন্স না থাকার অভিযোগে মাল্টা সরকারের পরিবেশ ও পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ মুসলমানদের নামাজ আদায়ে নির্ধারিত ফ্ল্যাটগুলো তালাবদ্ধ করে দেয় পরিবেশ দূষণের অভিযোগে। মুসলমানদের বক্তব্য হচ্ছে, আল্লাহর ইবাদত করতে লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়বে কেন? যুগ যুগ ধরে মুসলমানরা তাদের নিজস্ব ফ্ল্যাটে নামাজ আদায় করে আসছেন। মুসলমানদের ফ্ল্যাটের পাশাপাশি অপরাপর ফ্ল্যাটে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রার্থনা করে থাকেন, তখন তো পরিবেশ দূষণের প্রসঙ্গ ওঠে না।

৮৭০ সালে মুসলমানদের অভিযানের ফলে বাইজান্টাইনদের কবল থেকে সিসিলি মুক্ত হয়। এর পর থেকে মাল্টাতে ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। ২০০ বছর ধরে মাল্টায় মুসলমানরা রাষ্ট্র্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। ১০৯০ সালে নরম্যানের মাল্টা বিজয়ের পর খ্রিষ্টানরা ফের ক্ষমতায় ফিরে আসে। ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলমানদের ধর্ম-কর্ম পালনে কোনো বাধা দেয়া হয়নি। মাল্টাতে অবস্থান করেই বিশ্ববরেণ্য ভূগোলবিদ ও মানচিত্রাঙ্কনবিদ আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ আল-ইদ্রিসি আল-কুরতবি (১০৯৯-১১৬৬) ‘আল কিতাব আর-রওজরি’ শীর্ষক ভূগোল গ্রন্থ রচনা করেন, যার ইংরেজি নাম The Book of Roger, and the importance of water। বহু বছর মাল্টার ভাষা ছিল আরবি। এখনো বহু জায়গার নাম মুসলিম ঐতিহ্য বিজড়িত। মাল্টা ভাষায় আরবি শব্দের বিপুল ব্যবহার মুসলিম সংস্কৃতির স্বাক্ষর বহন করে।

মাল্টা একটি স্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত সাতটি দ্বীপ নিয়ে মাল্টা গঠিত। এই দ্বীপ ইতালির সিসিলি থেকে ৯৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ৩১৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট এ দ্বীপের জনসংখ্যা মাত্র ছয় লাখ। ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের হাতে চলে যায় মাল্টা। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ৯৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী রোমান ক্যাথলিক। ভ্যালেতা হচ্ছে মাল্টা প্রজাতন্ত্রের রাজধানী। মাল্টার ইতিহাসের সাথে রোমান ক্যাথলিক ধর্মের দীর্ঘ ঐতিহ্য বিজড়িত। খ্রিষ্টান ঐতিহ্যের অন্যতম কেন্দ্রভূমি হিসেবে মাল্টার সুখ্যাতি বিদিত। হজরত ঈসা আ:-এর সতীর্থ সেন্ট পলের নৌ-পোত এ দ্বীপে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেন্ট পল এ দ্বীপে তিন মাস অবস্থান করেন। ভূমধ্যসাগরের মনোরম আবহাওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্য, পরিচ্ছন্ন শহর, অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো এবং আকাশ ও সমুদ্রপথে যোগাযোগব্যবস্থা বিদেশী পর্যটকদের কাছে টানে। এ দেশের মানুষের গড় আয় ৪৮ হাজার ডলারের বেশি। পর্যটনই আয়ের প্রধানতম উৎস। আবহাওয়া গোটা বছরই অনুকূল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ নম্বর সদস্য মাল্টা প্রজাতন্ত্রের সাথে মুসলিম বিশ্ব বিশেষত তুরস্ক, সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া, ইরান ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ জোরালো। স্বাধীনতা-উত্তরকালে মাল্টা অর্থনৈতিক সঙ্কটে পতিত হলে লিবিয়া লাখ লাখ ডলার ঋণ দিয়ে মাল্টাকে দাঁড়াতে সাহায্য করে। লিবিয়ার সাথে মাল্টার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে মাল্টা সরকার সে দেশের শিক্ষা ক্যারিকুলামের মাধ্যমিক স্তরে আরবি ভাষা বাধ্যতামূলক করে। মিসর সিরামিক, ভেজিটেবল, ফল, পেট্রোলিয়াম, লোহা ও ইস্পাত মাল্টাতে রফতানি করে। অন্য দিকে মাল্টা প্রজাতন্ত্র মিসরে রফতানি করে খাদ্যদ্রব্য, প্রসাধন সামগ্রী ও মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতি। সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে মাল্টার সাথে ইরান ও পাকিস্তানের মন্ত্রিপর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় ইসলামাবাদ, তেহরান ও ভ্যালেতায় বাণিজ্যমেলা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে বছরে ২৬ লাখ পর্যটক সাগরের ঊর্মিমালা ও নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে মাল্টা ভ্রমণ করে থাকে। ছুটির দিনে পর্যটকরা যাতে স্বল্প খরচে মাল্টা ঘুরে আসতে পারে সে লক্ষ্যে ইরান আসমান এয়ারলাইন হ্রাসকৃত মূল্যে তেহরান-ভ্যালেতা ফ্লাইট চালু করেছে। সৌদি আরবের সাথে মাল্টার রয়েছে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক। রিয়াদ ও জেদ্দায় আছে যথাক্রমে মাল্টার দূতাবাস ও কনসুলেট। প্রতি বছর মাল্টার বহু মুসলমান হজ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব আগমন করেন। সম্প্রতি মাল্টা কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবের সাথে আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনে যৌথ কর্মপ্রয়াসের একটি সমঝোতা চুক্তি সই করে। মাল্টার সাথে মুসলিম বিশ্বের সুসম্পর্কের কারণে ধর্মপ্রচারকরা মাল্টার বিভিন্ন এলাকায় ইসলামের মহান আদর্শের বাণী প্রচারে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছেন।

‘১৯৭২ সালে মাল্টা বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। মাল্টা ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বছরে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মাল্টা সফর করেন। এটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম সফর। এ সফর বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এ সফরকালে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনৈতিক পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনা বিষয়ে ও দুই দেশের কূটনৈতিক একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে পৃথক দু’টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। সফরকালে বাংলাদেশ ও মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মাল্টা চেম্বার, ট্রেড মাল্টা ও এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ-মাল্টা বিজনেস ফোরামে যোগ দেন। এ ফোরামে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আশাব্যঞ্জক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মাল্টার শীর্ষ ব্যবসায়ীরা এ ফোরামে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের প্রতি তাদের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। মাল্টার শক্তিশালী পর্যটন খাত ও দেশব্যাপী চলমান অবকাঠামো নির্মাণ খাত বাংলাদেশী দক্ষ, অদক্ষ পেশাজীবীদের জন্য কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন মাল্টার রাজধানী ভ্যালেতার মেরামত ও সৌন্দর্যবর্ধন এবং ক্রমবর্ধমান পর্যটন খাতের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলমান নির্মাণশিল্পে বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। বর্তমানে মাল্টায় কয়েক শত বাংলাদেশী কাজ করছেন’ (মো: জসীম উদ্দিন, গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও মাল্টা প্রজাতন্ত্রে অনাবাসী হাইকমিশনার, প্রথম আলো, ৩১ আগস্ট ২০১৯)।

ইউরোপের ছোট্ট দেশ মাল্টা প্রজাতন্ত্রে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য এখানে পড়াশোনার সুযোগ অবারিত। ব্যয়ভার তুলনামূলক কম। মাল্টায় বিশ্ববিদ্যালয় আছে পাঁচটি। এর মধ্যে মাল্টা ইউনিভার্সিটি ইউরোপের অন্যতম একটি প্রাচীন ইউনিভার্সিটি। বাংলাদেশ থেকে কিছু শিক্ষার্থী বর্তমানে মাল্টা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করছেন। বিশ্বের একমাত্র মেরিটাইম ইনস্টিটিউট ও সামুদ্রিক আইন এই মাল্টা থেকেই শুরু হয়েছিল। এখানে মেরিটাইম বা সমুদ্র আইন নিয়ে উচ্চতর পড়ালেখা সুযোগ রয়েছে। MCAST college মাল্টার একটি প্রসিদ্ধ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কলেজ। এখানের পড়াশোনার মান অনেক উন্নত এবং পরিবেশ শিক্ষাবান্ধব। দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় এখানে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে পালন করা হয়ে থাকে। মাল্টা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা সম্পূর্ণ ফ্রি। উচ্চতর পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত শিক্ষাবৃত্তি।

মাল্টার জেলে আটক ১৫৬ বাংলাদেশীকে মাল্টাতে কিভাবে রাখা যায়, এ নিয়ে মাল্টার বড় একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা)। প্রসঙ্গত, আটক বাংলাদেশীরা সেখানে থাকতে মাল্টা সরকারের কাছে রাজনৈতিকসহ ভিন্ন ধরনের আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। তারা বিভিন্ন দেশ হয়ে অবৈধ পথে মাল্টাতে আসেন। ২০১৭ সালে ইউরোপ ইউনিয়নের অবৈধদের ফেরত পাঠানোর চুক্তি অনুযায়ী যেকোনো সময় তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারে মাল্টা সরকার। এর আগেও দেশটি থেকে ৪৪ বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক
drkhalid09@gmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us