মিথ্যা স্বপ্ন ভেঙে বাস্তবতা উন্মোচনের ম্যাচ
মিথ্যা স্বপ্ন ভেঙে বাস্তবতা উন্মোচনের ম্যাচ - ছবি : সংগৃহীত
ঝরবে ঝরবে বলে দূর আকাশে যে কালো মেঘটা এত দিন ঘুরে বেড়াচ্ছিল, অবশেষে তা তীব্র বেগে বৃষ্টি হয়ে বজ্রপাত করেই যেন ঝরে গেল হারারের আঙ্গিনায়। ওই বৃষ্টির স্রোতে মিথ্যা স্বপ্নের ধুলিমাখা আবরণ ভেসে গিয়েই যেন বাস্তব সত্য আজ উন্মোচিত হয়েছে। আর সেই সাথে বৃষ্টির নোনাজল যেন হাজারো মাইল দুরত্বের ৪৭ বর্গমাইলের ছোট্ট এই লাল-সবুজ ব-দ্বীপকেও ছুঁয়ে গেছে।
বুঝতে পারেননি? জিম্বাবুয়ের সাথে হারবে হারবে বলে বেশ আভাসের দেখা মিলেছিল আগেই। তবে একেকবার একেকজনে হাল ধরে জয়ের নৌকা তীরে ভিড়িয়েছে। কিন্তু শুক্রবার আর পারেননি কেউ, হারতে হয়েছে ফলে লজ্জাজনকভাবে। হারতেই পারে, না হারলে কি জয়ের স্বাদ মিষ্ট হবে? তাছাড়া ক্রিকেট তো গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। যেখানে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে, প্রতি মুহূর্তে ভাগ্য দোলাচলে থাকে। যদিও হার মানেই ব্যর্থতা। কিন্তু কখনো হারলেও হৃদয়ে তৃপ্তি লাগে। কিন্তু গত ম্যাচে ক্রিকেটের সর্ব সংক্ষিপ্ত সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আমাদের দৌঁড় কত দূর, তাই যেন আজ সবার বুঝে এসেছে৷
গত ম্যাচে আমাদের অর্জন নিয়ে কিইবা লেখার আছে? তবে অল্পতে যা বলা যায়, তার সবটাই শামিমকে নিয়ে। তবে ম্যাচের সুন্দর কিছু যদি বলি, তবে তা জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের নতুন সম্ভাবনাকে নিয়েই বলতে হয়। বলছি মাধেবেরের কথা। এই অল্প বয়সে কী দারুণ ব্যাটিংই না উপহার দিচ্ছেন দলকে৷ যাতে প্রতিপক্ষ হয়েও আমরা বেশ মুগ্ধই হচ্ছি নিঃসন্দেহে। শুধু গত ম্যাচে নয়, পুরো সিরিজ জুড়ে যেভাবে নিজকে ফুটিয়ে তুলছে মাধেভেরে, প্রশংসা করতে এক প্রকার বাধ্যই করছে বলা চলে।
যাহোক, আসল কথা হলো, 'জিম্বাবুয়ে থেকেও আমাদের এখনো টি-২০ ক্রিকেটটা খানিকটা হলেও শেখার আছে। গত ম্যাচটার কথা ভুলে যান, গত ম্যাচটার আগের ম্যাচটা দেখুন, অর্থাৎ প্রথম টি-২০। সৌম্য-নাইম শতরানের জুটি গড়লেও তাতে তৃপ্ততা ছিল কি? তাদের থেকে কি চাকাভা-মাধেবেরের ব্যাটিংটা একটু বেশিই উপভোগ্য ছিল না? সৌম্য-নাইম হয়তো ম্যাচটা জিতিয়েছেন, কিন্তু ওই জয়ের কৃতিত্ব পুরোটাই ছিল বোলারদের। কিভাবে?
১০ ওভারে ৯০ করে ফেলা জিম্বাবুয়েকে ওরা আটকে দিয়েছিল শেষ ১০ ওভারে। ফলেই কিন্তু ম্যাচটা বের হয়ে এসেছে। নয়তো, প্রথম ১০ ওভারের মতো যদি শেষ ১০ ওভারেও ৯০ করে ১৮০+ টার্গেট হতো, তখন কি আর ৪৫ বলে ৫০ আর ৪০ বলে ৫০ করে কি ম্যাচ জেতা যেত? হয়তো আরেকটু আক্রমণাত্মক সুরে ব্যাট চালাত, কিন্তু তার ফল কী হতো, তা তো ১৬৭ তাড়া করেই বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই?
শেষ ম্যাচ জিতে যেতে পারি। যদিও হারের আশঙ্কাটাই বেশি। ভাগ্যিস ভালো, টেলর-উইলিয়ামস নেই। অন্তত তবে জিম্বাবুয়ে মারুমানিকে ছাড়াই দল গড়তে পারত। এই মারুমানি ছিল বলেই তো প্রথম দুই ওভারে জিম্বাবুয়ের একটা উইকেট পকেটে আসে! তবে শেষ ম্যাচ হারলেও আপত্তি নেই, যদি তা হয় সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে ফেরার মিশন। আমার মতে, তার ফলে মেহেদী হাসান বা সাইফুদ্দীন- দু'জনের একজনকে হয়তো বসতে পারে। বদলে দেখা যেতে পারে নাসুম আহমেদকে। দেখা যাক কী হয়, সব প্রশ্নের উত্তর তো। সময়ই বলে দেবে!