নারী যেভাবে সাফল্যের নেপথ্য কারিগর
স্ত্রীর সাথে এরদোগান - ছবি : সংগৃহীত
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যথার্থই বলে গেছেন, ‘মানব দেহে যেমন দুই চোখ, দুই হাত, দুই পা, সমাজ দেহে তেমন নর-নারী।' নর ও নারী একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া পথ চলতে পারে না। প্রত্যেকটা কাজে তারা একে অপরের সহযোগী হয়ে ওঠে। পুরুষের প্রত্যেকটি সফলতা আসে কঠোর পরিশ্রমের ফলে, আর সেই কঠোর পরিশ্রমের হিমাদ্রি গড়ে ওঠে কোনো নারীর প্রেরণার ওপর ভর করে। প্রত্যেক সফল পুরুষের গল্প খুঁজে খুঁজে দেখুন, তাদের প্রত্যেকের সফলতার গল্পের যে কোনো ভাঁজে কোন এক বা একাধিক নারীর অবদান রয়েছেই- হোক সে মা-কন্যা, স্ত্রী কিংবা বোন। প্রেম, বিদ্রোহ, মানবতা ও সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন ‘কোন কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী/প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী'।
নারীরাই অপার মমতায় আঁচলের ছায়া পরশে
পুরুষদেরকে সাফল্যের পথে অবিরাম ছুটে চলতে অুপ্রাণিত করেছে।
রবার্ট ফ্রস্টের নাম কে না শুনেছে। পৃথিবীর বড় কবিদের অন্যতম তিনি। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন স্কটল্যান্ডের অধিবাসী। নিউ ইংল্যান্ডের একটি প্রাচীন পরিবারের সন্তান তিনি। ১৬৩২ সালে তার পূর্বপুরুষ এই অঞ্চলে (নিউ ইংল্যান্ড) এসেছিলেন। ফ্রস্টের জন্ম হয় ক্যালিফোর্নিয়ায়।সমকালীন আমেরিকার সবচেয়ে বড় কবি হওয়ার আগে রবার্ট ফ্রস্ট একসময় নিজের হাতে চাষ করতেন এবং তারও আগে একটি সূতা মিলে সূতা গুটানোর কাজ করতেন, তাছাড়া জুতা তৈরি ও গাঁয়ের স্কুলে শিক্ষকতার কাজেও তিনি নিযুক্ত ছিলেন।
রবার্ট ফ্রস্ট কোনো দিন সাহিত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেননি, তবুও বছরের সেরা কাব্যগ্রন্থ রচনার জন্য তাকে চারবার পুলিৎজার পুরস্কার দেয়া হয়।
কিন্তু তার এই মহৎ কর্মের পেছনে ছিলো তার স্ত্রীর প্রেরণা। পরিবারের প্রায় সবাই যখন এই সৃজনশীল কর্মে বাধ সেজেছিল তখন তার স্ত্রী ছিলো তার কাজের প্রেরণা প্রদানকারিণী।ফ্রস্টের পিতামহ বলেছিলেন, কবিতা লিখে কেউ কোনো দিন জীবনধারণ করতে পারে না।
তখন ফ্রস্টের মাথা ছিল কবিতায় পূর্ণ। তিনি চাষাবাদ ছেড়ে দিয়ে শিক্ষকতা ও কাব্যচর্চায় মনোনিবেশ করেছিলেন। তার স্ত্রীও চাইতেন, তিনি কাব্য চর্চা করুন। প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রেরণায় তিনি কাব্যচর্চায় ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন। প্রকৃতপক্ষে ঘরের রমণী যদি স্বামীর সৃজনশীল কাজের সহযোগিতা করে তবে সেই কাজে কিঞ্চিৎ দেরি করে হলেও সাফল্য ধরা দেবেই।
ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান পৃথিবীর অত্যাশ্চর্যের একটি।রাজা নেবুচাদ নেজার তার প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রেরণায় এই ঝুলন্ত উদ্যানটি নির্মাণ করেছিলেন।
আর প্রেমময়ী মমতাজের স্মৃতিকাতর হয়ে তাজমহল নির্মাণ করেছিলেন সম্রাট শাহ্জাহান।
কম্পিউটারের জনক বলে পরিচিত চার্লস ব্যাবেজ ১৮৩৩ সালে 'অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন'-এর ধারণা নিয়ে এসেছিলেন। চার্লস ব্যাবেজের এই ইঞ্জিনের নকশা প্রণয়নের ব্যাপারে তাকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছিলেন এক নারী।ওই নারী ছিলেন বিখ্যাত ইংরেজ কবি লর্ড বায়রনের কন্যা লেডি এডা। লেডি এডাকে বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে বিবেচিত করা হয়।তার সম্মানের জন্য ১৯৮০ সালে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি আধুনিক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের নাম রাখে এডা আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের নাম সবাই জানে, জানে তার টেলিফোন আবিষ্কারের কথা।অনেকেই মনে করেন তার টেলিফোন আবিষ্কারের পেছনেও এক নারীর ভূমিকা রয়েছে। ওই নারীর নাম মার্গারেট হ্যালো।তার প্রেরণাই নাকি তাকে এই প্রযুক্তি আবিষ্কারে একধাপ এগিয়ে দিয়েছিল।
সাহিত্যচর্চায় নারীর প্রেরণা পুরুষদের সাফল্যের অন্যতম উৎস। সৃজনশীল কাজে নারীর প্রেরণা ছাড়া সাফল্য লাভ করা যায় না। 'বৈজ্ঞানিক গবেষণায় যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে তা হলো- যে সব মানুষ সাহিত্য, কলা, শিল্প, স্থাপত্যসহ অন্যান্য পেশায় খ্যাতি লাভ করেছেন, তাদেরকে নারীগণ অনুপ্রাণিত করেছেন।' (থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ-নেপোলিয়ন হিল, পৃষ্ঠা-১০১-১০২)।
অধ্যাপক শাহেদ আলী ছিলেন একজন নন্দিত কথাসাহিত্যিক এবং নামকরা অনুবাদক।সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য সাহিত্যের দিগন্ত।তার এই কাজে চিরপ্রেরণার আলোকশিখা ছিলেন তার স্ত্রী প্রিয়তমা অধ্যাপিকা চেমন আরা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি জসীম উদ্দীন, হুমায়ুন আহমেদসহ সৃজনশীল প্রতিভার সকল মানুষের প্রেরণার উৎস ছিলেন তাদের স্ত্রী।
শিল্পী আব্দুল আলীম বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পী। কী সুন্দর দারাজ কণ্ঠে গান গাইতেন।সুরের মূর্ছনায় মানুষ বিমোহিত হতো।কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে,শিল্পী আব্দুল আলীম বিখ্যাত হয়েছিলেন তার স্ত্রীর কাছে শেখা গান গেয়ে।তিনি যখন দেশ ভাগের পর ঢাকায় এলেন, তখন
নতুন গান রেকর্ডের পরিকল্পনা করতে লাগলেন। তার স্ত্রী তাকে চমৎকার একটি গান শেখালেন এবং বললেন, এই গানটি তুমি রেকর্ড করবে, এটি মারফতি গান। তারপর শিল্পী আব্দুল আলীম ঢাকায় এসে সর্বপ্রথম ওই গানটি রেকর্ড করলেন এবং খুব কম সময়ে বাংলার সমস্ত মানুষের মন জয় করে ফেললেন।শহর থেকে পল্লীগ্রামে সে গানের সুর ভেসে গেল।কী ছিলো সেই গানটি? সে বিখ্যাত গানটি ছিলো-"প্রেমের মরা জলে ডুবে না।
যারা শৈশবেই পিতৃহারা হন, মায়ের মমতা আরো বেশি স্পর্শ করে তাদের হৃদয়কে। ছোটবেলা থেকেই মায়ের প্রেরণা, ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এবং আদর্শিক দিক-নির্দেশনা বদলে দিতে পারে সন্তানের পথচলাকে। আলোকিত করতে পারে আগামীকে। এমনিভাবেই মায়ের অনুপ্রেরণায় বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে গোটা পৃথিবী আলোকিত করেছিলেন টমাস আলভা এডিসন। এছাড়াও সফল বিজ্ঞানী হিসেবে গ্রামোফোন, ভিডিও ক্যামেরাসহ আরো অনেক যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। আধুনিক শিল্পায়নের যুগান্তকারী উন্নতি ঘটেছিল তার হাত ধরেই।
ছেলেবেলা থেকেই কৌতূহলী মন নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন আলভা এডিসন। মাত্র পাঁচ-ছয় বছর বয়স থেকেই বিশ্বখ্যাত এই বিজ্ঞানী জন্ম দিয়েছেন মজার সব কাণ্ড-কারখানা। এমন কিছু ঘটনা অনেকেরই জানা। হাঁস যদি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে পারে; তবে মানুষ কেন পারে না? এমন কৌতূহল নিয়ে তিনি একবার হাঁসের খাঁচায় ঢুকে বসে ছিলেন চুপচাপ। হাঁস কিভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় সেটাই দেখছিলেন নিবিড়ভাবে। সেই শৈশবেই তার অকাট্য যুক্তি ছিল এমন- হাঁসের নিচে ডিম রাখলে তা থেকে বাচ্চা বের হলে আমার পেট থেকে কেন হবে না?
লেখাপড়ায় অনেকটাই দুর্বল ছিলেন এডিসন। স্কুলে পড়াকালীন পরীক্ষায় একবার ফলাফল খারাপ করায় চিঠি দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিনি যে খারাপ কিছু করেছিলেন তা অনুমান করতে পেরে চিঠিটি দেখিয়েছিলেন তার মার কাছে। চিঠি পেয়ে মা কী জানি ভাবছিলেন সজল দৃষ্টিতে! তারপর এডিসনের সামনেই উচ্চস্বরে পড়তে লাগলেন চিঠিটা। ‘আপনার পুত্র খুব মেধাবী, এই স্কুলটি তার জন্য অনেক ছোটো এবং এখানে তাকে শেখানোর মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নেই। দয়া করে আপনি নিজেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করুন’। চিঠির কথা শুনে এডিসনের চোখ ভরে উঠেছিল অশ্রুতে।
তখন থেকে মায়ের কাছেই শিক্ষা নেয়া শুরু করলেন তিনি। এরপর অতিবাহিত হয়েছে অনেক বছর। টমাস আলভা এডিসন হয়ে উঠেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী, শিল্পপতি এবং মার্কেটিং জগতে সফল উদ্যোক্তা। তখন আর জীবিত ছিলেন না মা। নিজের চোখে দেখে যেতে পারেননি সন্তানের বিশ্বজোড়া সাফল্যগাঁথা।
একদিন কী এক কাজে পুরনো কাগজ নাড়াচাড়া করছিলেন এডিসন। ভাঁজ করা এক কাগজের দিকে হঠাৎ চোখ পড়ল তার। হাত বাড়িয়ে নিয়ে পড়তে শুরু করলেন সেটি। কাগজটি পড়তে পড়তে তিনি সেদিন ফিরে গিয়েছিলেন বহু বছর আগে স্কুল থেকে পাঠানো সেই চিঠিতে। সেটা পড়তে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল অদ্ভুত এক অনুভূতির! অজানা এক ব্যথায় তার বুকে ভেসে গিয়েছিল চোখের পানিতে। সেই চিঠিতে লেখা ছিল- ‘আপনার সন্তান স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন, সে এই স্কুলের উপযুক্ত নয়, আমরা কোনোভাবেই তাকে আমাদের স্কুলে আর আসতে দিতে পারি না’।
তারপর এডিসন তার ডায়রিতে লিখেন, ‘টমাস আলভা এডিসন একজন স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন শিশু ছিলেন। একজন আদর্শবান মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি শতাব্দীর সেরা মেধাবী হয়ে উঠেন’।
আমাদের প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ স.-এর ওপর প্রথম যিনি ইমান এনেছিলেন তিনিও ছিলেন একজন নারী। যার নাম হজরত খাদিজা রা.। তিনি ছিলেন হজরতের প্রিয়তমা স্ত্রী। রসূল সা.-এর দুঃসময়ে খাদিজাই ছিলেন প্রেরণাস্থল। নবিজির প্রতি যখন ফিরিশতা জিবরাইল আ. প্রথম ওহি নিয়ে আগমন করেন তখন তিনি খুবই ভীত বিহ্বল হয়ে পড়েন। তার ভেতর তখন অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। সে সময় তিনি গৃহে ফিরে এসে খাদিজা রা.-কে বললেন, আমাকে শিগগির কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও।খাদিজা তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন।
অতঃপর কিছুটা শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে এলে খাদিজা রা.-এর কাছে সমস্ত ঘটনা প্রকাশ করলেন। বললেন,
'আমার জীবন সম্পর্কে ভয় হচ্ছে।' খাদিজা তাকে বললেন, 'না।কখনোই না। আপনার জীবনে কোনো ভয় নেই। খোদা আপনার প্রতি বিমুখ হবেন না। কেননা আপনি আত্মীয়দের হক আদায় করেন; অক্ষম লোকদের ভার-বোঝা নিজের কাঁধে তুলে নেন; গরিব-মিসকিনদের সাহায্য করেন; পথিক মুসাফিরদের মেহমানদারি করেন। মোটকথা, ইনসাফের খাতিরে বিপদ-মুসিবতের সময় আপনিই লোকদের উপকার করেন।'
এভাবে প্রিয়তমা স্ত্রী তাকে প্রবোধ ও সান্ত্বনা বাণী শোনান।যা হযরতের জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিলো।
পাথরের ভেতরকার জ্বালানি শক্তি সম্পর্কে কিছু দিন আগেও মানুষ ছিল অজ্ঞ।তখন যত্রতত্র ভারী পাথর পড়ে থাকত। ১৮৯৮ সালে ফ্রান্সের দম্পতি Curies Pierre Curie ও Marie Sklodowska একে অপরের সহযোগিতায় যৌথভাবে আবিষ্কার করেন পাথরের জ্বালানি শক্তির রহস্য।
এরপর থেকে পাথর (ইউরেনিয়াম) নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশনে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা বর্তমান বিশ্বে আবিষ্কৃত সর্বোচ্চ দাহ্য শক্তি। এই আবিষ্কারের জন্য এই দম্পতি যৌথভাবেই নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সুতরাং নারী কোনো ক্ষেত্রে পুরুষের প্রতিবন্ধক নয় বরং সাফল্যের নেপথ্য কারিগর। তাদের প্রেরণাই পুরুষকে করে তোলে দুর্বার, সমর-প্রিয়, স্বপ্নচারী, সফল এমনকি মরুচারী থেকে মহাকাশচারী।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও নারীরা পুরুষদেরকে পরামর্শ, উপদেশ ও প্রেরণা দিয়ে সহযোগিতা করে। মালয়েশিয়ান রাজনীতিবিদ আনোয়ার ইবরাহিমের স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ্ ও তুরস্কের প্রভাবশালী নেতা রজব তায়্যিপ এরদোগানের স্ত্রী এমিনি এরদোগানের ভূমিকা দুনিয়াবাসীর কাছে প্রশংসনীয়।তারা উভয়েই এই দুই রাজনীতিবিদকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন যা তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মুসলিম শাসিত খিলাফত (সাম্রাজ্য) রক্ষায় নারীরা রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা,তাদের সাহসী উদ্যোগ পুরুষকে করেছে শক্তিশালী শাসক।তেমনি খিলাফতের পতনে নারীরা হয়েছে ব্যথিত,অশ্রুবিসর্জনকারিণী।
অস্থিরচিত্ত কাপুরুষ ভীরু আব্দুল্লাহর দুর্বলতার কারণে স্পেনে মুসলিম শাসনের পতন ঘটে।আবু আব্দুল্লাহ যখন আল্-হামরা প্রাসাদ থেকে চিরদিনের জন্য বের হয়ে যান তখন তিনি আল্- হামরার দিকে বার বার তাকিয়ে শিশুর মতো সকরুণ সুরে ক্রন্দন করছিলেন। অবিরাম বৃষ্টি ধারার নেই সেদিন অশ্রু বর্ষিত হচ্ছিল তার কপোল বেয়ে। তার মা রানি আয়েশা যে কথাটি বলেছিলেন সে কথাটি সমগ্র দুনিয়াব্যাপী অসংখ্য মুসলিম যুবকদের কাঁদিয়েছে,আবেগাপ্লুত করেছে, দিয়েছে খিলাফত ব্যবস্থাকে পুনর্প্রতিষ্ঠার প্রেরণা।
তার সেই কথাটি ছিল- 'পুরুষ হয়ে যখন তুমি বীরদর্পে রণক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারোনি এখন স্ত্রীলোকের মতো কেঁদে বুক ভাসিয়ে লাভ কী?'
কী মমত্ববোধ ছিল মুসলিম উম্মাহ ও তার সোনালি খিলাফতের প্রতি। আহা কী হৃদয়বিদারক কথাই না বলেছিলেন! রানি আয়েশার ওই কথাটি আমাদের হৃদয়ে জাগায় আবেগ, চোখে আনে অশ্রু, জাগায় প্রেরণা আবার ওই স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনতে, প্রেরণা জাগায় এক রেনেসাঁ আন্দোলন গড়ে তোলার। সত্যিই নারী এক অনন্ত প্রেম ও প্রেরণার চির উৎস এবং সাফল্যের নেপথ্য কারিগর, যা জান্নাতুল ফেরদৌসের ঝর্ণাধারা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে যদি তারা হয় বিশ্বাসী।