সকালে এক বাটি স্যালাড, হাঁচি-কাশি, কোভিড- সবই থাকবে দূরে
সকালে এক বাটি স্যালাড, হাঁচি-কাশি, কোভিড- সবই থাকবে দূরে - ছবি : সংগৃহীত
স্যালাড সব সময়ই খাওয়া যায়, সে ঋতু পরিবর্তন হোক বা না-হোক, কোভিড থাকুক বা না-থাকুক৷ তবে তা বাঙালির চির-পরিচিত কাঁচা গ্রিন স্যালাড শুধু নয়, বাজারের হাই ক্যালোরি ড্রেসিং মেশানো কেতাদুরস্ত স্যালাড তো নয়ই, কারণ ওই ড্রেসিংটির দৌলতে স্যালাডের উপকার অনেকটাই কমে যায়৷ খেতে হবে ঘরে বানানো হালকা ভাঁপানো স্যালাড, যাতে উপকারে কমতি না হয় অথচ হালকা গরমে কীটনাশক, কৃত্রিম রংয়ের বিপদ কিছুটা অন্তত কাটে৷ তার আগে শাক-সব্জি পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে নেয়া আবশ্যিক।
স্যালাড কি শুধু সকালেই
পুষ্টিবিদ বিজয়া অগ্রবাল বললেন, যেকোনো সময়ই খাওয়া যায়৷ তবে আমরা দিনের প্রথম খাবারের উপর সবচেয়ে জোর দিই৷ দিনের শুরুটা যদি পুষ্টিকর খাবার দিয়ে হয়, সারা দিন প্রচুর এনার্জি পাওয়া যায়৷ ইচ্ছা হলে একাধিক বারও খেতে পারেন৷ তাতে উপকার আরও বেশি হবে৷
কী উপকারিতা
অর্থাৎ ঋতু পরিবর্তনের হাঁচি-কাশি বা আরো মারাত্মক বিপদ কোভিড আর কাছে ঘেষবে না? ঠিক তা নয়, জানালেন বিজয়া, শাক-সব্জি-ফলে রয়েছে নানা উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেগুলো নানাভাবে পুষ্টি জুগিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷ কোনো কোনো উপাদান আবার সরাসরি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে৷ তার ফলেই এই জাতীয় রোগ ঠেকানো সহজ হয়৷ বা হলেও তার প্রকোপ থাকে কম৷
চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, উপকার হয় অন্যভাবেও৷ তিনি বলেন, কম ক্যালোরির স্যালাড খাওয়া অভ্যাস থাকলে ওজন বশে থাকে৷ কারণ, স্যালাড খেলে এক দিকে যেমন শরীরে কম ক্যালোরি ঢোকে, অন্য দিকে ফাইবারের কারণে বহুক্ষণ পেট ভরা থাকে৷ সঙ্গে সেদ্ধ রাজমা-ছোলা-বিনস-মটরশুঁটি-ডিম-চিকেন বা সূর্যমুখীর বীজ, অ্যামন্ড মিশিয়ে দিলে প্রোটিন ও উপকারি ফ্যাটের জন্যও পেট ভরা থাকে, তৃপ্তি হয়৷ খাই-খাই ভাব কমে যায়৷ তার উপর প্রোটিন বেশি থাকে বলে শরীরের ক্যালোরি খরচের হার বেড়ে যায়৷ সবে মিলে ওজন বশে থাকে৷ তার হাত ধরে বিভিন্ন অসুখের আশঙ্কা কমে৷ কমে রোগের জটিলতা৷
কোন স্যালাড
রঙিন শাক-সব্জি-ফল দিয়ে বানান৷ বিশেষ করে ব্রকোলি, বেলপেপার, মটরশুঁটি, বিনস, টমেটো, বিট, গাজর, পালং ভুট্টা৷ অলপ অলিভ অয়েলে আদা কুচি ও রসুন নাড়াচাড়া করে হালকা ভাঁপানো সবজি দিয়ে সতে করে নিন৷ পেঁয়াজও দিতে পারেন৷ কিছু ক্ষেত্রে ভাঁপানো সব্জি সরাসরি লেবুর রস, গোলমরিচ, লবণ মিশিয়ে খাওয়া যায়৷ টক দই ব্যবহার করতে পারেন ড্রেসিং হিসেবে৷ চটকানো অ্যাভোক্যাডোতে সরষে মিশিয়েও ড্রেসিং বানাতে পারেন৷ লেবুর রসের বদলে টক ফল বা তেঁতুল-পানি মেশাতে পারেন৷ এবার সতে বা ভাঁপানো স্যালাডে রোস্টেড অ্যামন্ড বা সূর্যমুখীর বীজ, চিকেন/রাজমা/ছোলা/ডিম মেশান দরকার মতো৷
নিয়মিত এই স্যালাড খান৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বাড়বেই, পেট, ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে৷ কমবে ওজন ও কোলেস্টেরলের প্রকোপ৷ সার্বিক পুষ্টি তো হবেই৷
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা