নাক ডাকা : সহজ ৫ সমাধান

অন্য এক দিগন্ত | Jul 18, 2021 10:17 pm
নাক ডাকা মানেই ভালো ঘুম- আসল কথাটি জানেন?

নাক ডাকা মানেই ভালো ঘুম- আসল কথাটি জানেন? - ছবি : সংগৃহীত

 

নাক অনেকেরই নানা কারণে ডাকে। কিন্তু তাতে তার যতটা সমস্যা হয়, তার চেয়েও বেশি সমস্যা হয় পাশে যিনি থাকেন, তার।

তবে নাক ডাকাকে সাধারণ বিষয় বলে উড়িয়ে দেয়ার কিছু নেই। কারণ বহু ক্ষেত্রেই নাক ডাকার আড়ালে লুকিয়ে থাকে বড় অসুখও। যেমন নাক ডাকার অন্যতম বড় কারণ হতে পারে স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা। তেমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাতেই হবে।

কিন্তু সাধারণ নাক ডাকার সমস্যার কয়েকটি সহজ সমাধান রয়েছে। দেখে নেয়া যাক সেগুলো কী কী।

• চিৎ হয়ে শুলে যাদের তীব্র নাক ডাকে, তাদের অনেকেরই পাশ ফিরে শুলে নাক ডাকে না। পাশ ফিরে শুলে বাতাস চলাচলের পথটি খুলে যায়। তাই শব্দ কমে যায়।

• পরিসংখ্যান বলছে, যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি, তাদের নাক ডাকে বেশি। তাই এই সমস্যা কমাতে ওজন কমানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

• উঁচু বালিশে মাথা রাখলেও অনেক সময়ে নাক ডাকার সমস্যা কমে। চার ইঞ্চি মতো উঁচু বালিশ ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।

• নাক ডাকা কমানোর জন্য এক ধরনের ক্লিপ পাওয়া যায়। তা নাকে আটকে নিলেও অনেক সময়ে নাক ডাকার পরিমাণ কমে।

• যারা নিয়মিত মদ্যপান এবং ধূমপান করেন, তাদের নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে। বিশেষ করে যারা ঘুমের আগে এই নেশাগুলো করেন। তাই নাক ডাকা কমাতে ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

চুলের রঙে স্বাস্থ্যঝুঁকি
ডা: হুমায়ুন কবীর হিমু

শ্বেতাঙ্গরা বাদামি বর্ণের চুল খুব পছন্দ করে। কিন্তু জন্মগতভাবে বেশির ভাগের বাদামি চুল না হওয়ায় চুলের রঙ বাদামি করার জন্য তারা আবিষ্কার করে কেমিক্যাল। আমেরিকার ১৮ বছরের বেশি মেয়েদের এক-তৃতীয়াংশ চুলে রঙ করে। আমাদের দেশের মেয়েরাও চুলে রঙ করার হার বেড়েছে বহুগুণ। পার্লারগুলোতে চুলে রঙ করার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে। কিন্তু চুলে রঙ করার জন্য স্বাস্থ্যের বেশ ঝুঁকি বাড়ে। চুলের রঙে পাঁচ হাজারের বেশি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এ কেমিক্যালগুলোয় এলার্জি, চুল ভেঙে যায় সহজেই। এ ছাড়া বাড়ায় ক্যান্সারের ঝুঁকি।

চুলের রঙে পি-ফিনাইল ডাই-অ্যামিন ব্যবহার করা হয়। এটি দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, ত্বক, স্নায়ু, শ্বাসতন্ত্র, কিডনি ও লিভারের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি কোষের ডিএনএকে ধ্বংস করে। এ ধ্বংসপ্রাপ্ত ডিএনএ পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে ভূমিকা পালন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে পরিবেশের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেনে এটি কসমেটিক হিসেবে ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এটি ত্বকে অ্যালার্জি করে।

রঙের রিসরসিনল কেমিক্যালকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চোখ ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর, প্রদাহকারী বলে ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছে। অ্যামোনিয়ার যৌগগুলো ত্বক ও চোখে অস্বস্তি করে। চুলের রঙে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অ্যামোনিয়াম সালফেটের গাঢ়ত্ব শতকরা ৬০ ভাগের বেশি ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এর গাঢ়ত্ব ১৭.৫ শতাংশের বেশি হলেই তা ত্বকে প্রদাহ ও এলার্জি করে। ডাই-এ ব্যবহৃত লেড এসিটেট গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত স্বাস্থ্য সমস্যা, ক্যান্সার ও প্রজনন অক্ষমতার জন্য দায়ী। ৪- অ্যামাইনো-বাই-ফিনাইল মানবদেহে ক্যান্সারের জন্য দায়ী তা অনেক আগেই প্রমাণিত। এ কেমিক্যালগুলো অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে যারা চুল রঙ করার সাথে জড়িত তাদের ১৭-৮০ শতাংশ ত্বকের এলার্জিতে আক্রান্ত হন। দীর্ঘ দিন চুলে রঙ করার জন্য চুল শুষ্ক হয়ে চুল ভেঙে যায়। অনেক সময় অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ হতে পারে এটি।

রঙের বেশ কিছু কেমিক্যাল ইঁদুর, গিনিপিগ শরীরে ক্যান্সার করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন। ১৯৮০ সালের দিকে শুধু চুলে রঙ করার জন্য আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন নন-হজকিন্স লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া বেড়ে যায়। সে সময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী অ্যামাইন ব্যবহার করা হতো। পরে এ কেমিক্যালগুলো রঙ থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু এখন যে কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করা হয় তা মানবদেহে ক্যান্সার তৈরি করতে পারে কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি)-এর একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায় চুল রঙ করার পার্লারে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে মূত্রথলির ক্যান্সার বেশি। নতুন আর একটি গবেষণায় জানা গেছে, যারা এ ধরনের পার্লারে পাঁচ বছর বা তারোও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তিনগুণ বেড়ে যায়। তবে কয়েকটি গবেষণাপত্রে এ ধরনের ঝুঁকি নেই বলে জানানো হয়েছে।

প্রায় বিভিন্ন সময়ের চুলে রঙ করা ১১ হাজার মেয়ের ওপর গবেষণা থেকে দেখা গেছে, এদের মধ্যে সাড়ে চার হাজার মেয়ে নন-হজকিন্স লিম্ফোমায় আক্রান্ত হয়েছে। এর বেশির ভাগই ১৯৮০ সালের আগে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৯৮০ সালের পর নন-হজকিন্স লিম্ফোমায় আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও ফলিকুলার লিম্ফোমায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রঙ করা ১৫০০ মেয়ের মধ্যে প্রায় ৮০০ জন লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই গবেষণায় আরো জানা গেছে, ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে চুলে রঙ করলে লিউকেমিয়ায় আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যান্সার ১৯৮০ সালে চুলে রঙকারীদের মধ্যে বেশি ছিল। এখন তা কমে গেছে। তবে এখন রঙে যে কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্যান্সারের জন্য দায়ী নয় তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us