কাজটি কি ঠিক করেছেন তামিম?
তামিম ইকবাল খান - ছবি সংগৃহীত
হাঁটুর চোটে আক্রান্ত বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। চিকিৎসকরা বলছেন বিশ্রাম দরকার। কিন্তু চিকিৎসকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা পায়ে টেপ পেঁচিয়ে খেলেছেন সিরিজের প্রথম ওয়ানডেটা। নিঃসন্দেহে সাহসী পদক্ষেপ। কিন্তু কি প্রয়োজন ছিল তার? এতে হিতে বিপরীত হতে পারত। ঘটতে পারত আরো অনেক কিছুই। কিন্তু বাস্তবতার আলোকে বলা চলে, তিনি কাজটি করেছিলেন বিনা প্রয়োজনে।
তামিম ইকবাল রান না করতে পারার জন্য বলছি না, বলছি ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার কারণে। গত ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন সে জন্যই বাঁচা, যদি একটা শতক বা বড় ইনিংস খেলে ফেলতেন, তবে? নিঃসন্দেহে মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যেত তাকে ঘিরে। নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করা হতো তাকে। হয়তো সেটা তামিমের জন্য ভালো হতো, কিন্তু তরুণদের জন্য একটা খারাপ নজির হয়ে থাকত।
ইঞ্জুরি নিয়ে তামিমের সাফল্য যখন ফলাও করে প্রচার হতো, তরুণদের মনেও তখন হিরো হবার স্বপ্ন জাগত। কখনো যদি এমতাবস্থার মুখোমুখি হতে হতো, তবে তখন তারাও একইভাবে সিদ্ধান্ত নিত। খারাপ খেললে দায় আসবে না, ভালো খেললে বাহবা মিলবে, এই অবস্থা। হ্যাঁ, কিছু মুহূর্ত আছে যখন রিস্কি নিয়ে খেলারই প্রয়োজন আছে। যেমনটা দেখা গেছে '১৮ এশিয়া কাপে, যখন লেখা হয়েছিল তামিমের এক হাতে ব্যাটিং অমরত্ব মহাকাব্য।
তাছাড়া কালের বিবর্তনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পূর্ণ শক্তির দলের প্রয়োজন এখন আর পড়ে না। তার বড় উদাহরণ হতে পারে গত ম্যাচটা। ব্যাট হাতে সিনিয়রদের ব্যর্থতা সত্ত্বেও দারুণ জয় এসেছে জুনিয়রদের দারুণ পারফরম্যান্সে। তামিম ইকবাল শুধুই অধিনায়ক নন, একজন উঁচু মাপের ক্রিকেটার বটে। যার প্রয়োজন জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেও বেশি নিঃসন্দেহে। বিশেষ করে পরবর্তী সিরিজটা যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে!
আর যদি খেলতে গিয়ে আরো বড় চোট পেতেন বা হিতে বিপরীত হতো তবে? তার থেকে তরুণ নাইমকে লিটনের সাথে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে তাকেও যাচাই করা যেত, অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিও হতো নিঃসন্দেহে। যা পরবর্তী সময়ে দলের জন্য বেশ উপকারি হতো। সেই জন্য তামিম ইকবালের প্রয়োজন ছিল সহ-অধিনায়ক নির্বাচন করে দুই ম্যাচের জন্য অধিনায়কত্ব তাকে বুঝিয়ে দেয়া।
তামিম ইকবাল ইঞ্জুরি নিয়ে ব্যাট হাতে ভালো করলেন, অধিনায়কত্বে জয়ও ছিনিয়ে আনলেন; কিন্তু মাঠে কি সত্যিই নিজের সেরাটা দিতে পারবেন? শুধু ব্যাট হাতে শতক হাঁকানো একজন ক্রিকেটারের কাজ নয়, বরং প্রতিপক্ষের শতক ফেরানোটাও একজন ক্রিকেটারের দায়িত্ব বটে। সেটা যদি না করতে পারেন তবে তা একধরনের স্বার্থপরতা। হয়তো নিজের সাথে নয়তো একজন ফিট তরুণ প্লেয়ায়ের সাথে। এজন্যই হয়তো সর্বজয়ী ভারত অধিনায়ক ধোনি বলতেন 'আনফিট হয়ে মাঠে নামা মানে দলের সাথে চিট করা!'