আফগান ইস্যু : মার্কিন জোটে পাকিস্তান ইন, ভারত আউট, চিন্তায় দিল্লি
আফগান ইস্যু : মার্কিন জোটে পাকিস্তান ইন, ভারত আউট, চিন্তায় দিল্লি - ছবি : সংগৃহীত
ভারতকে বাদ রেখে আমেরিকা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে নতুন এক আঞ্চলিক শক্তি (কোয়াড গ্রুপ) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে বাইডেন প্রশাসন। আর এই কূটনৈতিক ভাবে গড়ে উঠতে চলা চতুর্ভুজ শক্তির মূল লক্ষ্যই হবে আঞ্চলিক পর্যায়ে নিবিড় সংযোগ স্থাপন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
কিন্তু আমেরিকার এমন প্রচেষ্টায় কেন ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নয়া দিল্লির বিভিন্ন মহলে। এত দিন আমেরিকার সাথে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে ঢাক পিটিয়ে আসছে মোদি সরকার। তার পরও বাইডেন প্রশাসন এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভারতকে শরিক করেনি।
শুক্রবার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘চতুর্মুখী শক্তি গড়তে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। সেখানে বাদ পড়েছে ভারত। এটাই কি তা হলে আমেরিকার সাথে মোদি সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক?’
শুক্রবার ‘কোয়াড গ্রুপ’ গঠন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, এই চতুর্ভুজ জোট গঠনের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে সবদিক দিয়েই। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশই এ ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিকস্তরে বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক, যোগাযোগব্যবস্থাসহ একাধিক ক্ষেত্রে প্রভূত সম্ভাবনা তৈরি হবে। পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আফগানিস্তানের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো মসৃণ নয়। বহু প্রাচীন ও ঐতিহাসির রুট বন্ধ। ওই পথগুলো দিয়ে এক সময় অবাধ বাণিজ্য চলত। কোয়াড গ্রুপ তৈরি হলে ওই যোগযোগব্যবস্থা উন্নত হবে।
ভারতের হাতে দু’টি রোমিও কপ্টার তুলে দিলো আমেরিকা
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরো শক্তিশালী হচ্ছে ভারত। এবার দিল্লির হাতে এলো দু’টি অত্যাধুনিক এমএইচ-৬০রোমিও মাল্টিরোল হেলিকপ্টার (এমআরএইচ)। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনকে ২৪০ কোটি ডলারে ২৪টি বহুমুখী ক্ষমতাসম্পন্ন এই হেলিকপ্টার তৈরির ক্রয়াদেশ দিয়েছে ভারত। তারই প্রথম দু’টি হেলিকপ্টার শুক্রবার সান দিয়েগোর মার্কিন নৌবাহিনী ঘাঁটি এনএএস নর্থ আইল্যান্ডে ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
ভারতের হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে হেলিকপ্টারগুলি গ্রহণ করেন আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিং সান্ধু। নথি বিনিময় করেন মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষে ভাইস অ্যাডমিরাল কেনেথ হোয়াইটসেল এবং ভারতের পক্ষে ভাইস অ্যাডমিরাল রবনীত সিং। অনুষ্ঠানে মার্কিন নৌবাহিনীর কর্তারা ছাড়াও লকহিড মার্টিনের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সান্ধু বলেন, এই হেলিকপ্টারগুলোর অন্তর্ভুক্তি ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে মাইলস্টোন হিসেবে চিহ্নিত হবে। ট্যুইটে সান্ধু লেখেন, ‘ভারত-মার্কিন বন্ধুত্ব গগনস্পর্শী হয়েছে। গত কয়েক বছরে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা বাণিজ্য দু’হাজার কোটি ডলার ছাপিয়ে গিয়েছে। বাণিজ্যের পরিধি ছাপিয়ে দুই দেশ এখন যৌথভাবে প্রতিরক্ষা উৎপাদন শুরু করেছে।’ ভারতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে সুযোগ আরো বেড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
সব ঋতুতে কর্মক্ষম হেলিকপ্টারগুলোতে রয়েছে অ্যাভিওনিক্স প্রযুক্তি। শক্তিশালী সেন্সর ব্যবস্থা থাকায় রোমিও হেলিকপ্টারগুলো আরো নিখুঁতভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে বলে প্রতিরক্ষা কর্তারা দাবি করেছেন।
ভারতের বিশেষ প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে হেলিকপ্টারগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। এগুলোর অন্তর্ভুক্তির ফলে থ্রি-ডাইমেনশনাল আঘাত হানতে সক্ষম নৌবাহিনী। ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি করেছে আমেরিকা। ওই চুক্তির জন্যই এই অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার হাতে পেল দিল্লি। এগুলো ব্যবহারের জন্য ইতিমধ্যে নৌবাহিনীর বাছাই করা কর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে আমেরিকায়।
সূত্র : বর্তমান