আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়ের কারণ এবং বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়ের কারণ এবং বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব - ছবি : সংগৃহীত
পরাশক্তি হিসেবে আমেরিকা এমন সময় আফগানিস্তানে হামলা করে তালেবান সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল, যখন বিশ্বে তাদের এই অন্যায় আগ্রাসনের বিরোধিতা করতে সাহস দেখাতে পারে এমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি ছিল না।
প্রেসিডেন্ট বুশ দম্ভ ভরে ঘোষণা করেন, পুরো আফগানিস্তান দখল করতে আমেরিকান সেনাবাহিনীর সময় লাগবে এক সপ্তাহ।
আমেরিকা অবশ্য তালেবান সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয় ৬০ দিনের এক অপ্রতিরোধ্য যুদ্ধে। এই মিশনের অফিসিয়াল নাম দেয়া হয়েছিল অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম। প্রেসিডেন্ট বুশ ২০০২ সালে স্টেস ইউনিয়নে দেয়া ভাষণে উল্লেখ করে বলেন, আজ আফগান নারীরা স্বাধীন, যাদেরকে নিজ ঘরে বন্দী করে রেখেছিল তালেবান। যাদের স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে উচ্চস্বরে হাসতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল তালেবান সরকার। এই অভিযোগ তুলে তিনি আফগানিস্তানে আমেরিকার আগ্রাসনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন, পুরো বিশ্বের কাছে সাফাই গাইছিলেন।
৬০ দিনের যুদ্ধের ব্যয় ছিল যতসামান্য- ৩.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বি-৫২ বোমারু বিমান আর মাত্র ৪ জন আমেরিকান সৈন্যের মৃত্যু। প্রেসিডেন্ট বুশ এই আগ্রাসনকে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করে বলেন, সবচেয়ে কম মূল্য পরিশোধ করে বড় অর্জন। প্রেসিডেন্ট বুশ এখানে অর্জন বলতে মূলত বোঝাতে চেয়েছিলেন তথাকথিত সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতা তালেবান সরকারের পতন এবং আল কায়েদার কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বকে হত্যা করাকে।
কিন্তু প্রায় ২০ বছর পর তার আরেক উত্তরসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডনে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে যখন আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন, তখন তার চেহারায় ফুটে উঠেছে পরাজয়ের স্পষ্ট ছাপ। নেই কোনো দম্ভোক্তি, আছে এক পতনশীল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অনিয়ন্ত্রণযোগ্য ভার, যাকে টেনে তুলতে নুয়ে পড়েছে বৃদ্ধ বাইডেন।
পরাজয়ের কারণ
বুশ প্রশাসনের আফগাননীতি : বুশ প্রশাসনের আফগান নীতিতেই ছিল পরাজয়ের বীজ। তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ড আফগান সেনাবাহিনীতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ছিলেন না।
২০০২ থেকে ২০০৬ এই সময়ই আফগানিস্তানে আমেরিকার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। ২০০৬ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের জন্য প্রশিক্ষিত সেনা সদস্য ছিল মাত্র ৬০০০, সাথে আমেরিকা ও ন্যাটো সৈন্য ছিল ৩০০০। কোনো শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনে আমেরিকার কোনো ইচ্ছে ছিল বলে মনে হয় না। ঠিক এই সময়ই আফগান-পাক সীমান্তবর্তী স্বায়ত্তশাসিত জেলাগুলোয় তালেবান পুনর্গঠিত হয়ে আফগান ভূমিতে ফিরে আসতে থাকে।তখন তালেবানের সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ হাজার ।
আমেরিকার দুই নৌকায় পা : আমেরিকার হুমকির মুখে ওই সময়ের পাকিস্তান সরকার আফগান যুদ্ধে আমেরিকার সঙ্গ দিলেও পাকিস্তানের জনসাধারণের এতে কোনো সমর্থন ছিল না। তাই মাদরাসাগুলো থেকে আফগান যুদ্ধের জন্য সদলে দলে সদস্য যোগান দেয়া কখনোই বন্ধ করতে পারেনি পাক সরকার।
এদিকে আফগান যুদ্ধে ভারতকে পরোক্ষভাবে টেনে আনে আমেরিকা। এই সুযোগে ভারত আফগান ভূমিকে তার চিরশত্রু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের পূর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি ছিল না। পাক-আফগান বর্ডারজুড়ে ভারত খুলে বসে ২৪টি কনসুলেট।
এবং এগুলোকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে থাকে। তখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে পাকিস্তানের কনসুলেট ছিল মাত্র চারটি যা আফগানিস্তানের বড় চারটি শহর অবস্থিত। পাকিস্তান নিজেকে আবিস্কার করে বন্দী এক খাঁচায়। যার চারপাশে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের অবাধ বিচরণ। যার সাথে ১৯৪৭ সালের পর মাত্র ২৫ বছরের কম সময়ে চার চারটি যুদ্ধে জড়িয়েছিল পাকিস্তান। এবং ৭১ সালের যুদ্ধে তার অঙ্গহানি ঘটে, বর্তমান বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান) তার হাতছাড়া হয়ে যায়।আমেরিকার কৌশলগত বন্ধুত্বের আড়ালে পাকিস্তানের ভেতরে অবাধে তথাকথিত উগ্রবাদবিরোধী অভিযান চলে। এতে হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষ নিহত হয় অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়ায় প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার, অথচ সাহায্যের নামে আমেরিকা পাকিস্তানকে দেয় মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের আমেরিকান ডলারের মোহভঙ্গ ঘটে। তারা গোপনে তালেবানের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। তাদের যাবতীয় বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। পূর্বের ভুলগুলোকে পেছনে ফেলে তারা তালেবানকে কৌশলগত বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে পাকিস্তানের অস্তিত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য।
আমেরিকার কূটনৈতিক ব্যর্থতা :
আমেরিকা তালেবানকে সঠিকভাবে পরিমাপ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।তার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তি যে আফগান গোত্রতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোর গভীরে প্রোথিত। পক্ষান্তরে আমেরিকা-সমর্থিত কাবুল সরকার যে কার্যত জনবিচ্ছিন্ন- এই সত্যকে পাশ কাটিয়ে যায় আমেরিকা।
আফগানিস্তানের জনগণের চোখে তালেবান চিত্রিত হয়ে আছে, দেশ ও ধর্মের হেফাজতের কান্ডারি হিসেবে। এই বাস্তবতা আমেরিকা সজ্ঞানে এড়িয়ে চলেছে। তাই ট্রাম্প প্রশাসন ছাড়া আগের সব মার্কিন প্রশাসন তালেবানকে ভবিষৎ আফগান সরকার কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। তালেবান সরকারের পতনের পর আমেরিকার সহায়তায় গণতন্ত্রের নামে যে সরকার কাবুলের ক্ষমতা দখল করে। তাদের সীমাহীন দুর্নীতি আর অবাধ লুটপাটে মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, কে আসলে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, নিজেদের সংস্কৃতির আর ইসলামের হেফাজতের জন্য যুদ্ধরত। তাছাড়া '৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসন এবং তাদের পতনের পর ছড়িয়ে পড়া গৃহযুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেকে দেশকে এবং দেশের মানুষকে কারা শান্তিপূর্ণ জীবনে প্রত্যাবর্তন করাতে নিরলস প্রচেষ্টা আর ত্যাগ স্বীকার করেছে তা বুঝতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি সরলপ্রাণ আফগান জনগণকে।
তারা আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মাঝে কোনো তফাৎ করতে পারেনি। কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন '৮০-এর দশকে যা করেছে আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো সৈন্যরা তাই করে চলছে আফগানিস্তানে। আর তৎকালীন কমিউনিস্ট নাজিবুল্লাহর সরকার যেমন সোভিয়েতের পাপেট ছিল, আজকের কারজাই আর আশরাফ গনিও যে তার বিদেশী প্রভুদের স্বার্থরক্ষায় একই দায়িত্ব পালন করছে। বিষয়টি আফগান জনগণের উপলব্ধিতে আছে। এছাড়া তালেবানের বৈশ্বিক সমর্থন বিশেষ করে আমেরিকা যাদের শত্রুজ্ঞান করে চীন, রাশিয়া ও ইরানের সাথে স্ট্রাটেজিক কূটনৈতিক সম্পর্ক আফগানিস্তানে আমেরিকান সৈন্যের অবস্থান আরো চাপের মুখে পড়ে।
ভুল সামরিক স্ট্রাটেজিক সিদ্ধান্ত
আফগান যুদ্ধে সামরিক জয় নিশ্চিত না করেই প্রেসিডেন্ট বুশ তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত ক্রোধ প্রশমনে সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে গণ-বিধ্বংসী অস্ত্রের অবৈধ মজুদ থাকার অভিযোগে ২০০৩ সালে ইরাকের উপর আগ্রাসন শুরু করেন। এটি শেষ পর্যন্ত দেশটিকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়। সহসাই ইরাক যুদ্ধও আমেরিকার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিভিন্ন সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীর উত্থানের সাথে সাথে আইএসের উত্থান আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্যে বেকায়দায় ফেলে দেয়। আমেরিকার ইরাক যুদ্ধের সময়টাতেই তালেবান তার হারানো শক্তি পূর্ণমাত্রায় সঞ্চয় করে আফগানিস্তানে প্রবেশ করে।এর পর তালেবানকে আর পিছু হটতে হয়নি।
শান্তিচুক্তির ফাঁক-ফোকর
মুরব্বিদের মুখে প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়- গাধা যখন পানি পান করে, ঘোলা করেই পান করে। এখানে গাধা হিসেবে আমেরিকা আর পানি হলো শান্তিচুক্তি।
বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট হন, তখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান মিখাইল গর্বাচেভ ২০১০ সালে ওবামাকে কিছু পরামর্শ দেন। সেখানে তিনি বলেন, সামরিক উপায়ে আফগান সমস্যার সমাধান সম্ভব না। তাই তালেবানের সাথে রাজনৈতিক আলোচনার আয়োজন করে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।কিন্তু ওবামা ওই পথে না হেঁটে সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪০ হাজারে নিয়ে যান। অথচ দিন শেষে ২০২০ সালে তার উত্তরসূরি ট্রাম্প শান্তিচুক্তি সই করেন, এটাই প্রমাণ করেন যে তালেবান গোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে আফগান সমস্যা কখনো সমাধান হবে না। আমেরিকার আফগান যুদ্ধ বইয়ের লেখক কার্টার মালকাসিয়ানকে ২০০৮ সালে ব্রিটিশ বাহিনীর এক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ডার মার্ক কার্লেটন স্মিথ বলেছিলেন, যুদ্ধের মাধ্যমে আফগান সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সামরিক দায়িত্বশীল পর্যায়ের ব্যক্তি যিনি উক্ত মন্তব্য প্রকাশ্যে করেন। ব্রিটিশ পত্রিকা সানডে টাইমস তার মন্তব্য প্রথম পাতায় ছাপিয়েছিল। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস বলেছিলেন, স্মিথ পরাজিত মানসিকতা সম্পন্ন কাপুরুষ। অথচ প্রায় ১৩ বছর পরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন একই কথা বলে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সাফাই গাইছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, আফগান নারীদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আর কোনো মার্কিন সৈন্যের রক্ত আফগানিস্তানে ঝড়ুক তা তিনি মেনে নেবেন না। আফগানিস্তানের সমস্যা বাইরের কোনো দেশের শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মীমাংসা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। আফগানিস্তানের গণতন্ত্রের কী হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তা আফগান জনগণ ঠিক করবে তাদের শাসন কাঠামো কী হবে।
ট্রাম্পের শান্তি চুক্তিতে তালেবান আফগানিস্তানের একক পক্ষ হিসেবে সাক্ষর করে। কাবুল সরকারের ভবিষ্যৎ কী হবে ওই বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ নেই চুক্তিতে। আন্তঃআফগান আলোচনার কথা বলা হলেও ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থার কোনো রোডম্যাপের কথা বলা হয়নি। অথচ তালেবান শান্তি আলোচনা থেকে শুরু করে আন্তঃআফগান আলোচনা সব জায়গায় ইসলামিক আইন শাস্ত্র হানাফি মাজহাবকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এছাড়াও বর্তমানে তাদের দাবি অনুযায়ী আফগানিস্তানের ৮৫ শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা, এসব এলাকায় শরিয়াহ শাসন চালু করার ঘোষণাও দিয়েছে। অথচ কাবুল সরকারের চরম দুঃসময় আমেরিকা তাদের মৌখিক আশ্বাসবাণী শোনানো ছাড়া কার্যত কিছুই করছে না। এ থেকে একটা কথা খুবই প্রাসঙ্গিক যে আমেরিকা যার বন্ধু তার শত্রুর দরকার নেই। মাঝ পথে পিছন থেকে ছুরি চালানোই আমেরিকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে।
ফলাফল
আফগানিস্তানে মার্কিন সাম্রাজ্যের এই করুণ পরিস্থিতিতে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে এখন উদীয়মান চীন, রাশিয়া চোখ রাঙিয়ে কথা বলছে। স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে যে মার্কিন একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা চূর্ণ হয়েছে। ৯/১১-এর পর মার্কিন সাম্রাজ্য এমন এক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলছে যাকে পরাজিত করার নেশায় সে নিজেই তার সাম্রাজ্যবাদী একাধিপত্যকে খুইয়ে বসছে। এখন এক মেরু থেকে বিশ্ব বহু মেরুর দিকে যাত্রা করেছে। আফগানিস্তানে আমেরিকার এই পরাজয়কে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। এই পরাজয়ের মাধ্যমে আমেরিকা তার একক হেজেমনিক শক্তিকেও হারিয়ে ফেলেছে।
তথ্যসূত্র : ফরেনপলিসি ম্যাগাজিন ও অন্যান্য উৎস
লেখক : সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়