৬ মাসে এত পরিবর্তন?

মাসুম খলিলী | Jul 13, 2021 05:30 pm
সালমান ও মোহাম্মদ

সালমান ও মোহাম্মদ - ছবি : সংগৃহীত

 

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তনই ঘটে গেছে। মিসরের শাসক জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে গেছেন। মিসর ও সুদানের সাথে সমঝোতা ছাড়াই ইথিওপিয়া নীল নদীতে নির্মিত রেনেসাঁ বাঁধে দ্বিতীয় দফা পানি পুনর্ভরনের কাজ শুরু করেছে। মিসরের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়া বিষয়টি জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করেছে। এই বাঁধে প্রধান বিনিয়োগকারী হলো ইসরাইল এবং তার নব্য মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি আরব, তুরস্ক, এমনকি ইরান পর্যন্ত এই ইস্যুতে মিসরের পাশে থাকলেও মুসলিম শক্তিগুলোর মধ্যে ভিন্ন শিবিরে অবস্থান কেবলই আমিরাতের। আমিরাত শুধু ইথিওপিয়ায় নীলনদে বাঁধ দেয়ার জন্য ইন্ধন জুগিয়েছে তাই নয়, সে সাথে দক্ষিণ সুদানের নীল নদীর ওপরও বাঁধ দেয়ার একটি উদ্যোগে ইসরাইলের সাথে মিলেমিশে কাজ করছে। এই দেশটি মুহাম্মদ বিন জাইদের নেতৃত্বে নিজেকে ইসরাইলের পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রিত স্যাটেলাইট কান্ট্রিতে পরিণত করে নিজের প্রভাব বিস্তারের স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন শুধু সৌদি আরবকে আঘাত করেছে, এমন নয়। এটি বিক্ষুব্ধ করেছে মিসরকেও। তুরস্ক ও কাতারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ এবং ইরান ও সিরিয়ার সাথে মিসরের প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য যোগসূত্র রক্ষার মূল কারণ এটাই।

মিসরে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড: মুরসির বিরুদ্ধে জেনারেল সিসির অভ্যুত্থান ও গণহত্যার ঘটনা থেকে শুরু করে তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্মম দমনাভিযান চালানোর ন্যক্কারজনক নানা ঘটনার মধ্যে তার একটি কাজ মিসরীয়রা প্রশংসার সাথে দেখছেন। সেটি হলো গাজায় সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলার সময় পরোক্ষভাবে হলেও হামাসকে সমর্থন দেয়া। ফিলিস্তিনের হামাস ও ফাতাহর মধ্যে সমন্বয়ের একটি উদ্যোগও মিসর গ্রহণ করেছে। ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ, দক্ষিণ সুদানের নীল বাঁধ এবং সুয়েজ ক্যানেলের বিকল্প ক্যানেল তৈরি করার ইসরাইল-আমিরাতি উদ্যোগ দীর্ঘ মেয়াদে মিসরের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার শামিল বলে মনে করেন কায়রোর অনেক বিশ্লেষক। এই পরোয়ানাকে মেনে নেয়া নতুন কোনো ‘ফেরাউন’ দেশটির ক্ষমতায় বসলেও সম্ভব হবে বলে অনেকে মনে করেন না। ফলে মিসরে যেই ক্ষমতায় থাকুন না কেন ইসরাইলের সাথে ভেতরে ভেতরে বৈরিতামূলক সম্পর্ক কোনোভাবেই এড়ানোর অবস্থা এখন নেই।

হামাস সৌদি সম্পর্ক
হামাসের সাথে মিসরের সাম্প্রতিক সম্পর্কের ইতিবাচক উন্নয়ন এবং সৌদি আরবের একই ধরনের উদ্যোগের মধ্যে একটি যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে হয়। সৌদি টিভি আল আরাবিয়ায় খালেদ মিশালের সাক্ষাৎকারের বক্তব্যগুলো গভীরভাবে দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এই সাক্ষাৎকারে হামাস নেতা মিশাল বলেছেন ‘আমরা ও মুসলিম ব্রাদারহুড মতাদর্শিকভাবে একই ছিলাম এবং আছি, তবে আমাদের এ আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। হামাসের এই আন্দোলন একটি প্রতিরোধ ও মুক্তির আন্দোলন; এটি শুধু যুদ্ধ প্রতিরোধের কোনো প্রকল্প নয়।’

হামাসকে দেয়া যেকোনো দেশের সাহায্য গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে মিশাল এই সাক্ষাৎকারে বলেন, আগে হামাসের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি বিভিন্ন আরব দেশের সমর্থন ছিল। সমর্থনকারী দেশের মধ্যে ইরানও রয়েছে। তবে কোনো দেশ থেকে সাহায্য গ্রহণের বিনিময়ে আমাদের আন্দোলনের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে পরিত্যাগ করা হয় না।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us