হামাসের সাথে বিরোধ মিটিয়ে ফেলছে সৌদি আরব?
হামাসের সাথে বিরোধ মিটিয়ে ফেলছে সৌদি আরব? - ছবি : সংগৃহীত
হামাসের সাথে মিসরের সাম্প্রতিক সম্পর্কের ইতিবাচক উন্নয়ন এবং সৌদি আরবের একই ধরনের উদ্যোগের মধ্যে একটি যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে হয়। সৌদি টিভি আল আরাবিয়ায় খালেদ মিশালের সাক্ষাৎকারের বক্তব্যগুলো গভীরভাবে দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এই সাক্ষাৎকারে হামাস নেতা মিশাল বলেছেন ‘আমরা ও মুসলিম ব্রাদারহুড মতাদর্শিকভাবে একই ছিলাম এবং আছি, তবে আমাদের এ আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। হামাসের এই আন্দোলন একটি প্রতিরোধ ও মুক্তির আন্দোলন; এটি শুধু যুদ্ধ প্রতিরোধের কোনো প্রকল্প নয়।’
হামাসকে দেয়া যেকোনো দেশের সাহায্য গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে মিশাল এই সাক্ষাৎকারে বলেন, আগে হামাসের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি বিভিন্ন আরব দেশের সমর্থন ছিল। সমর্থনকারী দেশের মধ্যে ইরানও রয়েছে। তবে কোনো দেশ থেকে সাহায্য গ্রহণের বিনিময়ে আমাদের আন্দোলনের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে পরিত্যাগ করা হয় না।
ইরানের সমর্থন প্রসঙ্গে হামাসের রাজনৈতিক শাখার বিদেশী ব্যুরো প্রধান নিশ্চিত করেন যে, তেহরান অস্ত্র ও প্রযুক্তিগত উপায়ে হামাসের আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। অন্যদিকে, যে কোনো আরব দেশে, বিশেষত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যে কোনো আক্রমণের বিষয়টি তারা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি হামাসের আন্দোলনের সাথে অতীতের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য সৌদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি ২০০৭ সালে মক্কা চুক্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে সৌদি প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেণ, হামাস নয়, বরং ইসরাইল ও অন্যরা মক্কা চুক্তি অকার্যকর করার চেষ্টা করেছিল। হামাসের আন্দোলনকে একটি জাতীয় ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যেতে এই মক্কা চুক্তি যেখানে প্রধান ভূমিকা রেখেছিল সেখানে আমরা কিভাবে এর বিরোধিতা করতে পারি?
জেরুসালেম ও গাজায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ইসরাইলি পুলিশের আল-আকসা মসজিদে হামলা এবং জেরুজালেমে বসবাসকারীদের বাস্তুচ্যুত করার কারণে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়।
ইসরাইলের সাথে বন্দি বিনিময় প্রসঙ্গে এই সাক্ষাৎকারে মিশাল বলেন যে, বাস্তবে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। হামাসের কাছে ইসরায়েলি কোনো জীবিত বন্দি আছে কি-না কিংবা সৈন্যের কোনো লাশ আছে কি-না তা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। সিরিয়ার সাথে হামাসের সম্পর্ক প্রসঙ্গে নতুন কোনো উন্নয়নের বিষয়ও অস্বীকার করেছেন মিশাল।
আল আরাবিয়ার সাথে এই সাক্ষাৎকারে খালেদ মিশাল সৌদি আরবে আটক করা হামাস নেতা এবং এর পরিসম্পদ ছেড়ে দেয়ার জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। আল মনিটরের এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই অংশটুকু সৌদি টেলিভিশন সম্প্রচার করেনি। অবশ্য এর মধ্যে অনেক হামাস নেতাকে সৌদি কর্তৃপক্ষ মুক্তি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সৌদি আরবের সাথে হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের সম্পর্ক উন্নয়নের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা বেশ খানিকটা এগিয়েছে। এ ধরনের সংবেদনশীল যে কোনো বিষয় অগ্রসর হতে সময়ের প্রয়োজন। তবে ইতিবাচক অনেক কিছুই এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। আগামী সময়টা সম্ভবত ব্রাদারহুডের জন্য রাতের অমানিশা কেটে ‘সকাল’ হবার সময়।
mrkmmb@gmail.com