যে ৫ জনের সহায়তায় কাপ জিতলেন মেসি
মেসি - ছবি : সংগৃহীত
অতীতে বারবার ফাইনালে পৌঁছেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে মতান্তরে বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে। তবে অগুণতি হতাশা, গ্লানি ও অশ্রুর পরে অবশেষে ২৮ বছর পর মহাদেশ সেরার ট্রফি ফিরছে দিয়েগো ম্যারাডোনার দেশে। এক নজরে দেখে নিন কী কারণে অবশেষে মেসির হাতে উঠল অধরা আন্তর্জাতিক খেতাব।
ক্লাবের জার্সিতে লিগ খেতাব জয় করে প্রবল আত্মবিশ্বাসের সাথে এবারের কোপায় অংশগ্রহণ করেছিলে লাউতারো মার্টিনেজ। টুর্নামেন্টে তিনটি গোল করে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে সক্ষম হন ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার।
আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুতেই বাজিমাত। প্রথম আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক হিসাবে গোল্ডেন গ্লাভস জিতে নেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মুশকিল পরিস্থিতিতে একের পর এক বিশ্বমানের সেভ করে গোলের সামনে দেয়াল তুলে দিতে সক্ষম হন অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। বিশ্বমানের এক গোলরক্ষকের অভাবে বহু দিন ভুগতে হয়েছে আলবিসেলেস্তেকে। মার্টিনেজ আসতেই তার সুফল হাতেনাতে চোখে পড়ল। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে তার তিনটি পেনাল্টি সেভ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গোটা টুর্নামেন্টে নিজের দাপট দেখিয়েছেন ‘এলএম১০’। চারটি গোল ও পাঁচটি অ্যাসিস্টসহ উভয় বিভাগেই টুর্নামেন্টে সবার আগে আর্জেন্টাইন জাদুকর। ফাইনালে নিজের স্বাভাবিক ছন্দে না থাকলেও গোটা টুর্নামেন্টে দলের দায়িত্বভার আবারো একবার নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সাফল্যের পথে চালিত করতে সক্ষম হয়েছেন মেসি।
মেসির সাথে সাথে একাধিকবার ফাইনালে হৃদয় ভঙ্গের সাক্ষী থেকেছেন ডি মারিয়াও। তবে প্রয়োজনের সময় দলের হয়ে দুর্দান্ত গোল করে জাত চেনান প্যারিস সাঁ-জাঁ উইঙ্গার। প্রয়োজনে একাধিকবার অভিজ্ঞ ফুটবলারদের পারফরম্যান্স মেসির স্বপ্ন সত্যি করতে বড় ভূমিকা নেয়।
ব্রাজিলের হয়ে ম্যাচ জেতানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল তারকা ফুটবলার নেইমারের ছন্দে থাকা। গোটা টুর্নামেন্টে একের পর এক ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স করলেও ফাইনালে আর্জেন্টিনার মজবুত ডিফেন্স বোতলবন্দি করতে সক্ষম হয় নেইমারকে। ফলে স্বভাবতই গোলের সামনে ব্রাজিল নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারিনি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
নেইমারকে সান্ত্বনা দিয়ে কী বলেছেন মেসি
খেলা শেষে মেসি যখন ট্রফি হাতে নেয়ার অপেক্ষায় উল্লাসে ব্যস্ত। তখন অঝোরে কাঁদছেন নেইমার। কোপা আমেরিকার ট্রফি জিততে না পারার কান্না। ২৮ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে এই ট্রফিটা হয়তো বিধাতা তার নামেই লিখে রেখেছিলেন।
কিন্তু প্রতিপক্ষ একজনকে তো হারতেই হবে। আর সেটাই মেনে নিতে হয়েছে ব্রাজিলের নেইমারকে। হলো না আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতা। হতাশার গল্প দিয়েই শেষ হলো আসর। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে তাকে পড়তে হয়েছিল ভয়ংকর ইনজুরিতে। এরপর চলে যান মাঠের বাইরে। এরপর খেলা হয়নি দীর্ঘদিন।
২০১৯ সালে ব্রাজিলের কোপা জয়ের সময় ছিলেন না দলে। তবে সুযোগ ছিল চলতি আসরে। হয়তো লিখতে পারতেন একটা সফলতার গল্প। কিন্তু হলো না। তাই ম্যাচ শেষে কান্নাই সঙ্গী হলো নেইমারের।
প্রতিপক্ষের বন্ধুকে কান্নারত অবস্থায় দেখে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে এলেন মেসি। জড়িয়ে ধরলেন। না পাওয়ার আক্ষেপের কষ্ট তো মেসিরও দীর্ঘদিনের। হয়তো বুকে জড়িয়ে সেটাই মনে করাতে চাইলেন। হয়তো কানে কানে বললেন, এটাই শেষ নয় সুযোগ আসবে আবার।
রোববার ঐতিহাসিক মারাকানায় ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনা শিরোপার উল্লাস করে। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ডি মারিয়া। ২০০৪ সালে সিজার দেলগাদোর পর প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার হিসেবে কোপার ফাইনালে গোল করলেন ডি মারিয়া।
মারাকানায় ম্যাচটিতে বল দখলে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। প্রথমার্ধের ৬০ ভাগ সময় বল দখলে রেখেছেন নেইমাররা। আক্রমণেও এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। পুরো ম্যাচে ১৩টি শট নিয়েছে ব্রাজিল, যার মধ্যে দুটি ছিল অনটার্গেটে যাওয়ার মতো। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার পাঁচ শটের মধ্যে লক্ষ্যে যাওয়ার মতো ছিল দুটি। তার মধ্যেই সফল লিওনেল স্কালোনির দল।