মুসলিম বিশ্ব কি চীনের দিকে ঝুঁকছে?

,মো: বজলুর রশীদ | Jul 08, 2021 06:56 pm
চীনা মুসলমান

চীনা মুসলমান - ছবি : সংগৃহীত

 

একটি কথা আছে, জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনে চীন যাও। কথাটি প্রমাণ করে যে, চীন বহু শত বছর আগ থেকেই মুসলিম বিশ্বে সভ্যতা, সমৃদ্ধি, জ্ঞান ও উন্নয়নের জন্য পরিচিত ছিল। পণ্ডিতরা বলছেন, মুসলিমবিদ্বেষী নীতির কারণে এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার কারণে মুসলিম বিশ্ব, পশ্চিমের পরিবর্তে পূর্বের কোনো শক্তিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। চীনও তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে, মধ্য এশিয়া ও আফ্রিকার সাথে সেতুবন্ধন করতে চলছে। চীনের এখন দরকার তেল ও বাণিজ্য সম্প্র্রসারণ। সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, ওমান ও কাতারের সাথে ‘কানেক্টিভিটি’ বাড়ানো চীনের অগ্রাধিকার। সৌদি আরব চীনে বড় তেল রফতানিকারক। উভয় দেশের ট্রেড ভিলিউম দুই বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৪০ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। চীনেরও সৌদি আরবে বিনিয়োগ রয়েছে। কুয়েত এ পর্যন্ত চীনকে ৮১০ মিলিয়ন লোন দিয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে।

চীনে বন্যার সময় কুয়েত তিন মিলিয়ন ক্যাশ দিয়েছে। ‘ইনভেস্ট ইন চায়না’ প্রকল্পে কুয়েত চীনে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রিফাইনারি ও পেট্রোক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রি করেছে। আরব দেশগুলো ছাড়াও ইরান ও পাকিস্তানের সাথে চীনের বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও বিভিন্ন চুক্তি রয়েছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে চীন বেল্ট ও রোড প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসেছে। কাজাকিস্তানে চীন বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। উজবেকিস্তানে ৬০০ মিলিয়ন বিনিয়োগ হয়েছে। মালয়েশিয়া কনসোর্টিয়ামে চীন যোগদান করেছে এবং আরব সাগরে অনুসন্ধানে বিভিন্ন দেশের সাথে কাজ করছে। চীনে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগ, ইন্দোনেশিয়ায় চীনের বিনিয়োগের চাইতে ২০ গুণ বেশি। ৯৭০টি প্রকল্পে এই বিনিয়োগ বিদ্যমান। তুরস্ক চীন সম্পর্ক বিশেষ উচ্চতায় এখন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও সামরিক সম্পর্কও মুসলিম দেশের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্ত্র কেনার জন্য মুসলিম দেশগুলো প্রথমে চীনের অস্ত্র বাজারে ঢোকে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরান, কুয়েত ও সুদান এগিয়ে রয়েছে অস্ত্র কেনার তালিকায়। ১৯৬০ সাল থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ চীন থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকে। সৌদি আরব, নাইজেরিয়া, নাইজার, গ্যাবন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, আমিরাত ও ইরাকও চীন থেকে অস্ত্র কেনে। পাকিস্তান ও চীন গত জানুয়ারিতে আরেক মহাপ্রকল্প শুরু করেছে। এটি কৃষি-শিল্প খাতের সহযোগিতা ও তথ্য আদান-প্রদান মহাপ্রকল্প। দুই দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতাও এর অন্তর্ভুক্ত। কোনো কোনো দেশ বলছে, আসলে এটি সামরিক তথ্য বিনিময় কেন্দ্র যেটি পার্শ্ববর্তী দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে। চীন-পাকিস্তান কৃষি ও শিল্পসহায়তা এবং তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার এই প্লাটফর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সাল চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্বের ৭০ বছর পূর্ণ হলো। তথ্যভাণ্ডার পরিপূর্ণ করা গেলে দুই দেশের ‘আরো’ উপকারে আসবে। দেখা যাচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো পশ্চিমাদের পরিবর্তে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বেশি।

শান্তি ও উন্নয়ন বর্তমান রাজনীতির ট্রেন্ড। বিভিন্ন দুর্যোগে আন্তর্জাতিক অবস্থা নাজুক হয়ে যেতে পারে। তবুও বিভিন্ন স্থানে চীনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম খুব সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব অশান্ত এলাকা থেকে বড় বড় রাজনৈতিক দলকে চীন সফরের ব্যবস্থা করা হয়, নেতাদের সাথে সংযোগ রাখা হয় অথবা চীনের সিপিসির ডেলিগেশন ওসব স্থানে পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সিপিসির শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চীনের জনগণ, প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পারস্পরিক স্বার্থে সহযোগিতা কামনা করেছেন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us