যে প্রাণীর বিষ সবচেয়ে দামি
বিচ্ছু - ছবি : সংগৃহীত
গ্রিক পুরাণের দৈত্য Scorpius-এর নাম থেকেই Scorpion বা বিচ্ছুটি নামটি এসেছে। তবে বাস্তবে বিচ্ছুগুলো দেখতে গ্রিক দৈত্যের মতো বড়সড় নয়। কিন্তু এদের লেজের ডগায় থাকা বিষথলি মানুষসহ যেকোনো প্রাণীকে কপোকাত করতে সক্ষম!
যে কারণে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীও বিচ্ছুকে এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু বিচ্ছুর ভেনম শুধুমাত্র একটি দূষিত পদার্থ নয়। প্রকৃতপক্ষে সাপের বিষের মতোই বিচ্ছুর বিষেরও বহুমুখী ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে।
যে কারণে পৃথিবীর বুকে প্রাণহানির চেয়ে প্রাণ বাঁচাতেই বিচ্ছুর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর উদাহরণ বলা যায়, বিচ্ছুর বিষ থেকে ম্যালেরিয়ারোধী ওষুধ তৈরি করা হয়। এছাড়াও বিচ্ছুর বিষের মাধ্যমে সহজেই ব্রেইন টিউমার সনাক্ত করা যায়।
পৃথিবীতে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া যেগুলো কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। এই প্রজাতির স্করপিয়ন ভেনমে প্রাপ্ত দুটি যৌগ এসব ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সক্ষম!
বিচ্ছুদের এক প্রজাতি যাদের বসবাস মেক্সিকোর পূর্বাঞ্চলে। এ প্রজাতিটি প্রায় সারা বছর মাটির নিচে অবস্থান করে। কেবল বর্ষাকালে মাটির উপরে আগমন ঘটে। এই বিচ্ছুগুলোর আরেকটি উপাদান যা যক্ষ্মা নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যপক কার্যকর।
তবে অবিশ্বাস্য কিংবা দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বিচ্ছুর বিষ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি তরল পদার্থ! প্রতি গ্যালনের দাম প্রায় ৩৯ মিলিয়ন ডলার বা ৪০০ কোটি টাকা! কারণ একেকটি বিচ্ছু একবারে মাত্র ২ মিলিগ্রাম ভেনম উৎপন্ন করে।
ভেনমটির কৃত্রিম সংস্করণ তৈরি না হলে ভেনম থেকে প্রাপ্ত ওষুধ মানুষের নাগালের বাইরে রয়ে যাবে!
পুরুষ কেন বন্ধ্যা হয়!
পুরুষের উর্বরতা বয়ঃসন্ধি থেকে মৃত্যু পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অপরদিকে নারীদের উর্বরতার স্থায়িত্ব বয়ঃসন্ধি থেকে মেনোপজ পর্যন্ত। নারীরা কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে।
তবে বেশিরভাগ নারীই প্রায় ১০ লাখ ডিম্বাণু ধারণ করে থাকে। যা তারা জন্মগ্রহণের পূর্বেই জরায়ুতে ওভারিয়ান ফলিকল হিসেবে তৈরি হয়। অন্যদিকে একজন পুরুষ প্রতি সেকেন্ড প্রায় ১৫০০ শুক্রাণু উৎপন্ন করে থাকে। তবে পুরুষের খাদ্যাভ্যাসের উপর ভিত্তি করে এই সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু নারীদের প্রতি মাসে একটি মাত্র ডিম্বাণু নিষাক্ত হওয়ার উপযোগী হয়।
আর এই প্রক্রিয়াটি ওভুলেশন নামে পরিচিত। ওভুলেশনের পর একটি ডিম্বাণু মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা জীবিত থাকে। আর এই সময়টিই নারীদের জন্য উর্বর সময়।
জরায়ু নালীতে শুক্রাণুর জীবনকাল ২/৩ দিন। তাছাড়া নারীদের উর্বরতা ৩০ বছরের পর কমতে থাকে। ৩০ বছরের কম বয়সী নারীর প্রতি ওভুলেশনে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভবনা মাত্র ২৫ ভাগ। যা ৩০ এর পর ২০ শতাংশে নেমে যায়। ৪০ বছরের পর গর্ভবতী হওয়ার সম্ভবনা নেমে আসে মাত্র ৫ শতাংশে। অপরদিকে ৪০ বছরের পর পুরুষের উর্বরতাও কমতে শুরু করে। এই বয়সে পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন কমে আসে। সেই সাথে কমতে থাকে শুক্রাণুর সংখ্যা।
জানা যায়, নারীদের উর্বরতা উপর বংশগতির প্রভাব প্রবল। যা একজন নারী কতটি ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে তা নির্ধারণ করে।
নারী-পুরুষ ভেদে যে কারোরই বন্ধ্যত্ব থাকতে পারে। বন্ধ্যা দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পুরুষই সন্তান জন্মদানে অক্ষম। আর ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে সমস্যাটি উভয়ের মাঝেই বিদ্যমান থাকে। পুরুষের বন্ধ্যত্ব সাধারণত আঘাতজনিত। যা শুক্রাণুর উৎপাদন এবং সঞ্চালন ব্যহত করে। কিছু জেনেটিক মিউটেশনও পুরুষের মাঝে বন্ধ্যাত্ব তৈরি করতে পারে।
তবে ওজন বেড়ে গেলে নারী-পুরুষ উভয়েরই উর্বরতায় প্রভাব ফেলে। তবে ওজনে কম হলেও বন্ধ্যত্ব হতে পারে। নারীদের মাঝে প্রায় ১২ শতাংশ বন্ধ্যত্বের কারণ হয় ওজনে কম বা বেশি হওয়া। তবে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়েরই উর্বরতায় প্রভাব ফেলে। বন্ধ্যা নারীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ বন্ধ্যত্বের কারণ একমাত্র ধূমপান!
সূত্র : প্রথম কলকাতা