পাকিস্তানে মার্কিন ড্রোন ঘাঁটিতে কী সমস্যা?

মো: বজলুর রশীদ | Jul 01, 2021 04:13 pm
মার্কিন ড্রোন

মার্কিন ড্রোন - ছবি : সংগৃহীত

 

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যহারের পর পাকিস্তানে একটি ড্রোন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামাবাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ওয়াশিংটন। পাকিস্তানে সামরিক ও বিমান ঘাঁটি করার এমন মার্কিন প্রস্তাব একেবারে নতুন নয়। ১৯৬০ সালে পেশোয়ার বাদাবের বিমান ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করেছিল গোপনে। একটি নজরদারি বিমান রাশিয়ানরা গুলি করে ভূপাতিত করার পর ঘাঁটির কার্যক্রম আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায়। এসব ঘাঁটি থেকে ন্যাটো বাহিনী পরিচালিত আক্রমণে ২৪ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার পর ২০১১ সালে পাকিস্তান শামসি বিমান ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বন্ধ করে এবং শামসি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈমানিক ও ক্রুদের বের করে দেয়। পাকিস্তান এয়ার ফোর্স বেজ নূর খান, শাহবাজ, এমন কি বাণিজ্যিক বিমানবন্দর পাসনিও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর অপারেশনের জন্য দেয়া হয়েছিল। অথচ এসব ঘাঁটি দেয়ার পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে, সীমান্তে ও বেলুচিস্তানে সারা বছর ধরে সিআইএ ড্রোন আক্রমণ চালিয়েছে। বারবার অনুরোধ-হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেও কোনো লাভ হয়নি। আফগানিস্তানে সিআইএর ড্রোন ঘাঁটি থেকে এসব আক্রমণ পাকিস্তানে চালানো হতো। ২০০৮-২০১৩ সালে ৩৪০টি এবং ২০১৩-২০১৭ সালে ৬১টি ড্রোন আক্রমণ হয়। ২০১৮ সাল থেকে কোনো আক্রমণ হয়নি।

ঘাঁটি দেয়ার বিনিময়ে পাকিস্তান ২০১১ সাল থেকে মোটা দাগে সহায়তা হিসেবে ২৫.৯১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছিল। তাছাড়া প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছে। কোনো কোনো বছর অনুদান ৬৯১ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উঠে। মার্কিন সহায়তার তালিকায় ইসরাইলের পর পাকিস্তান দ্বিতীয় অবস্থানে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফি বছর সহায়তা পায়। ইমরান সরকারের দুঃখ, ফি বছর এই অনুদানের টাকা ভালো কাজে লাগানোর আগেই দুর্নীতির হাত পৌঁছে যায় বলতে টাকাগুলো ধোঁয়ায় মতো উড়ে গেছে।

ইমরান খান বলে আসছেন, আফগানিস্তান সমস্যার কোনো সামরিক সমাধান নেই, কাশ্মিরেও তাই। তথাপি ভারত কাশ্মিরিদের অধিকার না দিলে পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু করবে। উপজাতীয় বেল্টে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাদ-উল ফাসাদ এবং জার-ই-আজাব নামে অভিযান চালিয়ে টেররিস্টদের নির্মূল করছে। এসব অভিযান দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। আরেকটি বড় কাজ পাকিস্তান সেনাবাহিনী করছে। সেটি হলো সীমান্তে বেড়া দেয়া। পাক-আফগান ২৬৪৯ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া দেয়া সোজা নয়। গভীর বন, অসমতল ভ্যালি ও প্রকাণ্ড পবর্তমালা বড় বাধা। তা সত্ত্বেও চার বছর কঠোর পরিশ্রম করে বেড়া নির্মাণ শেষ পর্যায়ে।

পাকিস্তান যদি কোনো ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রকে দেয় তবে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান উভয় দেশের বিরুদ্ধে তালেবান আবার অস্ত্র উঠাবে। পাকিস্তানি তালেবানও ব্যাপকভাবে অংশ নেবে, তখন ইমরান সরকারের পতন হবে। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবান দমন করতে উভয় দেশে সেনাবহর পাঠাতে হবে। পুরো সমস্যাটি নতুন করে শুরু হবে। চীন সিইপিসির মাধ্যমে উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করেছে। পাকিস্তান ঘাঁটি দিলো বা না দিলো তা নিয়ে চীন এখনো কোনো উচ্চবাচ্য করেনি। সিইপিসি ক্ষতিগ্রস্ত না হলে চীন সহজে নাক গলাবে না মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তানে থাকা না থাকা উভয়ই সঙ্কট।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us