যেভাবে জয় ব্রাজিলের
অবিশ্বাস্য জয় ব্রাজিলের : নিয়ম মানেননি রেফারি - ছবি : সংগৃহীত
কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। দুরন্ত ছন্দে থাকা নেইমারের ব্রাজিল কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পাবে, প্রত্যাশা তেমনই ছিল। তবে ফুটবল যে খাতায় কলমে নয় মাঠে খেলা হয়, তা আবারও প্রমাণ করে দিল এই ম্যাচ। দাপুট দেখিয়ে নয়, বরং শেষ মুহূর্তের গোলে কলম্বিয়াকে ২-১ গোলে পরাস্ত করে কিছুটা স্বস্তির জয় পেল সেলেসাও ব্রিগেড।
নিজের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ধারা বজায় রেখে ব্রাজিল দলে পাঁচ পরিবর্তন ঘটান কোচ তিতে। এডার মিলিটাও, ফাবিনহোদের বদলে দলের প্রথম এগারোয় সুযোগ পান মার্কুইনস, কাসেমিরোরা। গোলেও এডারসনের বদলে তৃতীয় ম্যাচে তৃতীয় পৃথক গোলরক্ষকহিসাবে সুযোগ পান ওয়েভারটন।
ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় সকলকে চমকে দিয়ে চোখ ধাঁধানো বাইসাইকেল কিকে গোল করে কলম্বিয়াকে এগিয়ে দেন লুইস ডিয়াজ। তাকে গোলের পাসটি বাড়ান জুভেন্তাসের জুয়ান কোয়াদ্রাদো। গোল করার তেমন কোনো বড় সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রথমার্ধ পিছিয়ে থেকেই শেষ করতে হয় ব্রাজিলকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিভারপুল ফরোয়ার্ড রবার্তো ফির্মিনোকে নামিয়ে দলের ফর্মেশনে বদল ঘটনা তিতে। এতেই বেড়ে যায় ব্রাজিল আক্রমণ বিভাগের ঝাঁঝ। ৬৬ মিনিটে ফির্মিনোর বাড়ানো বলে গোলকিপারকে পরাস্ত করেও বারে মারেন নেইমার।
তবে ৭৮ মিনিটে ওই ভুলটি করেননি ফির্মিনো। বাঁ-দিক থেকে ভেসে আসা রেনান লোডির ক্রস থেকে দুরন্ত হেডে গোল করে ব্রাজিলের হয়ে সমতা ফেরান রর্বাতো ফির্মিনো। নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়েও বল গোলে জড়ানো থেকে আটকাতে পারেননি কলম্বিয়া গোলরক্ষক ডাভিড ওসপিনা। তবে গোলকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় চরম বিতর্ক।
রেফারির গায়ে বল লাগলে নিয়ম অনুযায়ী সাধারণত ড্রপ-বল করেই পুনরায় ম্যাচ শুরু করার নিয়ম। তবে এক্ষেত্রে রেফারির গায়ে বল লাগা সত্ত্বেও তিনি তেমনটা করেননি। ইয়েরি মিনাদের কয়েক মুহূর্তের দ্বিধার সুযোগ নিতে কোন ভুল করেননি ফির্মিনো।
অভূতপূর্বভাবে ম্যাচের অতিরিক্ত ১০ মিনিটের মাথায় নেইমারের কর্নার থেকে প্রথম পোস্টে থাকা কাসেমিরো জোড়ালো হেডে গোল করে সেলেসাওকে অবিশ্বাস্য পরিস্থিতিতে তিন পয়েন্ট জিতে নিতে সাহায্য করে। নেইমারদের এই জয়ের পাশাপাশি পেরু ইকুয়েডরকে পরাস্ত করতে না পারায় এক ম্যাচ বাকি থাকতেই গ্রুপে শীর্ষস্থান দখল করে নক-আউট পর্বে নিজেদের স্থান পাকা করল ব্রাজিল। অপরদিক, ম্যাচ হারায় ঝুলে রইল কলম্বিয়ার ভাগ্য।
ইউরো : শেষ ষোলোয় কে কার মুখোমুখি
নানা রেকর্ড, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চে ভর করে শেষ হলো ইউরো ফুটবলের গ্রুপ পর্বের খেলা। ছয় গ্রুপের ছয় চ্যাম্পিয়ন ও ছয় রানার্সআপ জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোয়। বাকি চার দল এসেছে গ্রুপের সেরা তৃতীয় হিসেবে। সেই চার দল হলো পর্তুগাল, চেক প্রজাতন্ত্র, সুইজারল্যান্ড ও ইউক্রেন।
আগামী ২৬ জুন শুরু হবে শেষ ষোলোর লড়াই। যেখানে হারলেই বিদায়। জয়ী দল উঠে যাবে শেষ আটে। দেখে নেয়া যাক কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে কোন দল কার মুখোমুখি হচ্ছে।
সবচেয়ে জমজমাট লড়াই হবে ২৭ জুন। যেখানে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল মুখোমুখি হবে শক্তিশালী বেলজিয়ামের। আরো একটি ম্যাচ আগাম উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ২৯ জুন লন্ডনে যেখানে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পরাশক্তি জার্মানি। লন্ডনে ইতালি খেলবে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে।
অন্যদিকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স খেলবে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে। গত বিশ্বকাপের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়া মোকাবেলা করবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের।
গ্লাসগোতে ২৯ জুন সুইডেন খেলবে ইউক্রেনের সাথে। বুদাপেস্টে নেদারল্যান্ডসের প্রতিপক্ষ চেক প্রজাতন্ত্র। আমস্টারডামে ওয়েলস খেলবে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে।
আগামী দুই ও তিন জুলাই হবে কোয়ার্টার ফাইনালের চারটি ম্যাচ। ৬ ও ৭ জুলাই সেমিফাইনাল। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ১১ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে কাঙ্খিত শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল।