নাটোরের কালাতুফান : ঈদের চমক
কালাতুফান - ছবি : সংগৃহীত
পরম যত্নে রত্ন হয়ে উঠেছে নাটোরের কালাতুফান। অশান্ত নামে ডাকা হলেও খুবই শান্ত কালাতুফান। ছয় ফুট উচ্চতা ছাড়িয়ে এক হাজার ২০০ কেজি ওজনের অতিকায় এমন গরু ব্যক্তি উদ্যোগে খুব কমই দেখা যায়। আসন্ন কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে কালাতুফানের দাম চাওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম ২০০৫ সালে শখের বশে গরু পালন কার্যক্রম শুরু করেন। মোটাতাজাকরণ কার্যক্রমে লক্ষ্য করেন, একটু পরিশ্রম করলেই মুনাফা করা সম্ভব। এরপর থেকে যেন তার পথ চলাতেই আনন্দ। এবছর কোরবানী ঈদকে উপলক্ষ করে তিনটা গরু পালন করে আমিরুল। এরমধ্যে দু’টি সাড়ে চার লাখ টাকা করে ইতোমধ্যে কিনে নিয়ে গেছেন ঢাকার ব্যবসায়ীরা। এখন আমিরুলের খামারে শুধুই কালাতুফানের অবস্থান।
তিন বছর ধরে পরম যত্নে কালাতুফানকে তৈরি করেছেন আমিরুল। এ্যাংকার ভুষি, গুড় আর চিড়া সহযোগে তৈরি করা বিশেষ খাবার কালাতুফানের প্রিয় খাবার। প্রতিদিন সকাল আর বিকেলে প্রয়োজন হয় আট কেজি করে। মাঝেমধ্যে আমিরুলের নিজস্ব খামারে উৎপাদিত নেপিয়ার ঘাস কালাতুফানের প্রিয় খাবার হয়ে ওঠে।
নিয়ম করে খাবার খাওয়ানো, পরিচর্যা করা, একজন পশু চিকিৎসকের পরামর্শে রেখে কালাতুফানকে তৈরি করেছেন আমিরুল। কালাতুফান এখন উচ্চতায় ছয় ফুট ছাড়িয়ে গেছে আর দৈর্ঘ্যে নয় ফুট। ওজন কমপক্ষে এক হাজার ২০০ কেজি।
বাজারে পশু খাবারের ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যের কথা উল্লেখ করে আমিরুল জানান, ছয় মাস আগে এ্যাংকর ভুষির কেজি ছিলো ৩৫ টাকা, এখন ৫৫ টাকা। গত পরশু এক বস্তা ৮০০ টাকায় কিনলেও মঙ্গলবার কিনতে হয়েছে ৯১০ টাকায়। পশু খাদ্যমূল্যের বাজার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান আমিরুল।
ক্ষতিকর স্টেরয়েড ব্যবহার করে পশুর ওজন ও আয়তন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আমিরুল বলেন, কোন স্টেরয়েড কখনোই ব্যবহার করা তো দূরের কথা, ভুল করেও আমাদের চিন্তায় আসেনি।
আমিরুল আরো বলেন, অনেক যত্নে কালাতুফানকে লালন করেছি। সৌখিন ব্যক্তিরাই ওর কদর বুঝবে। তাদের গোচরে আনতে পারলে দাম অন্তত দশ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। আসন্ন কোরবানীল ঈদ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ বিভাগের অনলাইন পশুর বাজারে কালাতুফানের যথাযথ প্রচারণার দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা বাসস’কে বলেন, জেলার প্রাণিসম্পদ অঙ্গণ বৈচিত্রে ভরপুর হয়ে উঠছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ আমাদের উৎসাহী খামারীদের নতুন নতুন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, তাদেরকে প্রণোদনা প্রদান করছে, প্রয়োজনে চিকিৎসা চিকিৎসা সেবা। এরই ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে নাটোরে তৈরি হয়েছে ‘কালাতুফান’। প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হওয়া ‘কালাতুফান’ অনেক আকর্ষণীয় এবং উৎপাদক তার ন্যায্য দাম অবশ্যই পাবেন।
সূত্র ; বাসস