মোদি ও হিন্দু মানস
নরেন্দ্র মোদি - ছবি সংগৃহীত
২০২০ সালে ভারতে মোদি সরকার প্রণীত সিবিএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে ব্যপক গণআন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘বিজেপির ভস্ম থেকে বেরুবে নতুন ভারত’ শিরোনামে দৈনিক নয়া দিগন্তে ১ জানুয়ারি ২০২০ একটি নিবন্ধ লিখেছিলাম। এ নিবন্ধটি এমন আত্মপ্রত্যয়ের সাথে লিখেছিলাম যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তখন যে ব্যাপক গণআন্দোলন জেগে উঠেছিল তাতে মনে হয়েছে যে ভারতের জনগণের মনে এক গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং অচিরেই হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দিক থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ধারণাটি ভুল ছিল। এ ভুলের একটি কারণও আছে। যে তথ্যের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছিলাম তা ছিল সেকেন্ড হ্যান্ড ইনফরমেশনভিত্তিক। এ ধরনের ইনফরমেশনের যে একটা লিমিটেশন আছে সেটা আমি পরেব টের পেয়েছি। নিজে ভারতে গিয়ে যদি সে দেশের সনাতন ধর্মী জনগণের মনোভাব যাচাই করে দেখতাম তবে এমন ভুলটি হতো না। আমি ভারতে কোনো দিন যাইনি। কেন যাইনি তারও একটি ব্যাখ্যা আছে। আমি একজন নগণ্য মানুষ। তবু বলব ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের জনগণের প্রতি ভারত সরকারের সেই ১৯৪৭ সাল থেকে যে নীতি এবং বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকার সে নীতির যে ক্রমবর্ধমান কঠোরতা অবলম্বন করেছে তা আমাকে হতাশ করেছে। ভারতে কোনো দিন না যাওয়াটা ভারত সরকারের সে নীতির প্রতি আমার একটি ক্ষুদ্র প্রতিবাদ। জানি, আই ওয়াজ বর্ণ আন সঙ অ্যান্ড উইল ডাই আন সাঙ।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওয়ের একটি উক্তি দিয়ে ব্যাপারটা বুঝাবার চেষ্টা করছি। যতদূর মনে পড়ে, সিঙ্গাপুরে তাকে এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনারা কাশ্মিরকে দখলে রাখতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছেন এটা কি অপচয় নয়? এর চেয়ে কাশ্মিরকে ছেড়ে দিয়ে সে অর্থ আপনার দরিদ্র দেশের উন্নয়নে তা বিনিয়োগ করতে পারেন। রাও উত্তরে বলেছিলেন, কাশ্মিরের জন্য আমরা কত ব্যয় করছি সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। ভারতের অখণ্ডতা বজায় রাখতে কাশ্মির ‘এট অ্যানি কস্ট উই নিড’। (প্রশ্নটা এবং উত্তরটা আমি স্মৃতি থেকে লিখছি তবে তা হুবহু না মিললেও এরকমই ছিল) এ ছাড়াও ভারতের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণ মেনন ও পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার জাফরুল্লাহ খান জাতিসঙ্ঘে কাশ্মির নিয়ে যে বাহাস করেছিলেন তার পরিপ্রেক্ষিতে জাফরুল্লাহ্ খান ইংরেজিতে ‘Foreign Affairs’ নামে বুকলেট ছেপেছিলেন। সেটি ষাটের দশকে আমার হাতে আসে এবং তা এমন রসাত্মক ও বাস্তব যে, আমি বুঝেছি নানা অজুহাত তুলে কাশ্মিরকে ভারত কোনো দিনই ছাড়বে না।
১৯৮০-এর দশকে যখন টাঙ্গাইল করটিয়া কলেজে শিক্ষকতা করি, তখন আমার টাঙ্গাইলের বাসায় এক ছুটির দিনে কাগমারী কলেজের সত্যেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী নামে গণিতের এক অকৃতদার শিক্ষক আসেন। পশ্চিম বাংলায় তখন জ্যোতি বসুর শাসন চলছে। তিনি প্রতি ছুটিতে তার মাকে নিয়ে ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থানে ভ্রমণ করতেন। সেসব তীর্থক্ষেত্রের ছবির অ্যালবামটি আমাকে দেখান এবং তিনি যা মুখে বললেন তাতে বুঝা গেল, সেই কংগ্রেস আমলে ভারতে অসংখ্য নতুন নতুন দৃষ্টিনন্দন মন্দির নির্মিত হয়েছে। নেহরু পরিবারের এক সদস্য (সঠিক নামটি মনে করতে পারছি না) বলেছিলেন, আমাদের পরিবারে কোনো ধর্মাচার হয় না। সেই নেহরু পরিবারের সদস্যরা অনেক দিন কংগ্রেসের হয়ে ভারত শাসন করেছেন। সে সময়ে অনেক মন্দির নির্মিত হয়েছে। তবে ব্যাপারটার আমি সমালোচনা করছি না। এখান থেকে আমার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে সাংবিধানিকভাবে ভারত সেকুলার হলেও নিজ ধর্ম পালনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেশ আন্তরিক। করটিয়া কলেজের সুকুমার হোড় নামে সনাতন ধর্মাবলম্বী বাংলার এক সহকর্মীর একটি উক্তি উল্লেখ করব। তিনি আমাকে একদিন কথা প্রসঙ্গে কললেন, হিন্দুরা কি কখনো কমিউনিস্ট হয়? তিনি কলকাতায় তার আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যেতেন। ভারতে না গেলেও জ্যোতি বসুর কমিউনিস্ট মতাদর্শের প্রতি আমার কোনো সংশয় ছিল না।
কারণ এর আগে ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে আমি ঢাকা কলেজে থাকা কালে ভারতের দিল্লিকেন্দ্রিক এস চাঁদ প্রকাশনীর দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি আর এন নাথ নামে এক বাঙালি সুশিক্ষিত ভদ্রলোক লাঞ্চের পরে অর্থনীতি বিভাগে এলেন। ক্লাসের পর বিভাগে একা বসে আছি। কথা প্রসঙ্গে জ্যোতি বসু সরকারের জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে আমার কৌতূহলী প্রশ্নের জবাবে তিনি জনগণের কল্যাণে সে সরকারের কাজের যে ফিরিস্তি দিলেন তাতে আমার এ প্রতিতী জন্মে, এ সরকার দীর্ঘস্থায়ী হবে। তবে দীর্ঘ ত্রিশ বছরের ঊর্ধ্বে ক্ষমতায় থাকার পরও পশ্চিম বাংলায় কমিউস্টিদের যে পতন হলো তা দেখে মনে হয়, এদের দিন শেষ। যে দু’জন সহকর্মীর কথা বললাম তারা এখন ভারতবাসী। উপর্যুক্ত যে বয়ান দিলাম তা থেকে এটুকু বুঝাবার চেষ্টা করলাম যে, বর্তমান বিজেপি যে ক্ষমতায় তার বীজ কংগ্রেস আমলেই উপ্ত হয়েছে। অযোধ্যার বাবরি মসজিদও কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই বিজেপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন আদভানীর নেতৃত্বেই ভাঙা হয়েছে। এই কীর্তির পর বিজেপি ক্ষমতায় আসে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যদি নিজ ধর্ম পালনে আন্তরিক ও একনিষ্ঠ না হতেন তবে বিজেপি নেতা অটল বিহারি বাজপেয়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। পরে এলেন নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদি।
বিজেপি শাসন ভারতের মুসলমানদের ও কাশ্মিরের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। ভারতে যেখানে ১৮ কোটির উপরে মুসলমান আছে সেখানকার অনেক সংবেদনশীল ভারতবাসীর মতোই আমি বিজেপি শাসন সমর্থন করি না বরং নিন্দা করি। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতাদের নির্ভেজাল ধর্মকর্ম পালনের একাগ্রতার আমি প্রশংসা না করে পারি না। এদের মধ্যে কোনো ভণ্ডামি নেই। তাই ভারতের ইতিহাসে নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদিকে একজন মহত্তম গণনেতা বলে আখ্যায়িত করি এবং এর মতো নেতা এর আগে ভারতে আসেননি। তিনি ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ধর্মাদর্শের নির্ভেজাল প্রতিনিধিত্ব করেন।
তিনি আপনি আচরি ধর্ম পরতে শেখান। এই নরেন্দ্র মোদি বা সে দেশের রাষ্ট্রপতিকে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব আয়োজনে যোগ দিতে বা তাদের সম্বর্ধনা দিতে ভারতীয় বা অন্য কোনো দেশের টেলিভিশনে আমি দেখিনি। এ ভণ্ডামিটা আমি বিজেপি সরকারের মন্ত্রীদেরও করতে দেখিনি। নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদি করোনাকালেও হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পালনে বাধা দেননি। বিশেজ্ঞরা বলছেন, এতে ভারতে করোনায় মৃত্যুর হার বেড়েছে। তবে সাধারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এতে করে তার প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন না। ভারতের সাধারণ হিন্দুদের পাল্স তিনি বোঝেন, কারণ তিনি নিজে একজন খাঁটি ও নির্ভেজাল হিন্দু। বাংলাদেশের হিন্দুরাও নিজেদের ধর্ম পালনে একনিষ্ঠ। ১৯৯০-এর দশকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে শিক্ষকতাকালে এক সরস্বতী পূজার সময় কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখার জামগাছের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে একটি কাজের তদারকি করছিলাম। আমার এক সনাতন ধর্মাবলম্বী সহকর্মী এসে আমাকে বললেন, ‘খালেদ ভাই, কলেজে সরস্বতী পূজা হচ্ছে আপনি আসেন, ওখানে অনেকেই আছে। এই বলে তিনি যাদের নাম বললেন তারা প্রত্যেকেই নামাজি মুসলমান। তারা রোজার সময় রোজা রাখেন এবং পরবর্তীতে হজব্রতও পালন করেছেন। আমি বললাম, পূজা মণ্ডপে যাই না। এরপর তিনি আমার হাত ধরে টানাটানি শুরু করলেন। হাতটা ছুটিয়ে আমি বললাম, ‘যাবো না তো বললাম, আপনি যান।’ নাখোশ হয়ে তিনি চলে গেলেন। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। ইসলাম ধর্মও তাই বলে। বাংলাদেশ সরকারের কর্তব্যক্তিরা বলেন ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। এটি একটি রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা। কোনো ধর্মই তা অনুমোদন করে না, ইসলাম তো নয়ই। নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদিও তা বলেন না।
আমাদের দেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের অন্যান্য ধর্মসহ প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো পালন করেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যান। এটা একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের মুসলিম নেতাকে মানায় কি? কারণ, তাদের ধর্মও অনুমোদন দেয় না। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি তাদের জন্য সম্বর্ধনার আয়োজন করেন। এমনটা সেকুলার ভারতেও হয় না। এখানে আমি অবিজেপি শাসিত পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্মীয় আচরণের কথা বলতে পারি। তিনি একজন তুখোড় গণনেত্রী। তার অসাধারণ মেধা এবং পরিশ্রম তাকে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এনেছে। কিন্তু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি অস্পষ্ট। মুসলমানদের সমাবেশে গিয়ে যে কলেমা পড়ে একজন মুসলমান হয়, তিনি সেই ‘লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্’ অবলীলায় উচ্চারণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজামণ্ডপে বা সমাবেশে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি একজন হিন্দু’। ভারতের এ রাজ্যে বিধানসভায় বিজেপির আসন বাড়ছে। সেদিন হয়তো দূরে নয় যেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিখাদ ধর্মবিশ্বাস এই রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসাবে। গত ১৬ জুন ২০২১ ‘ডিডি বাংলা’য় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কিছু গান শুনছিলাম। গানগুলো পঞ্চাশের দশকে শুনেছি। গানের ফাঁকে ফাঁকে তিনি কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি যা বললেন তা এমন : ‘এ সব গানের কৃতিত্ব আমার নয়। ঈশ্বর আমার কণ্ঠ দিয়ে এগুলো বের করেন। এ সব তার-ই।’ ধার্মিক লোকদের জন্যএখানেও শিক্ষণীয় ব্যাপার আছে।
এ জাতীয় বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বলতে দ্বিধা নেই, আমরা মুসলমানরা তাকে যতই নিন্দা করি না কেন ভারতের ইতিহাসে সনাতন ধর্ম মতে নিঃসন্দেহে নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদিই মহত্তম প্রধানমন্ত্রী যিনি বিশাল ভারতের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম বিশ্বাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা বা ভণ্ডামি করেন না। তিনি নিজ রাজ্য গুজরাটে অখণ্ড ভারতের স্বপ্নদ্রষ্টা সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেলের এক বিশাল মূর্তি স্থাপন করেছেন। এটার পূজাও তিনি করেন। আমার বিশ্বাস নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদি গতায়ু হলে ভারতের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অধিকতর মর্যাদায় তাকে স্মরণ করবে যা ইতিপূর্বে তারা কোনো নেতাকে করেনি। তিনি ভারতবাসীর স্বপ্নের ‘রাম রাজত্ব’ প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত। আমাদের হতভাগা দেশের জন্য আমার চিন্তা হয়। সূরা কাফিরুনের ক’টি আয়াত উল্লেখ করে নিবন্ধটির ইতি টানব। আল্লাহ্ তার প্রিয়নবী ও রাসূল মুহাম্মদ সা:-কে বলছেন- আপনি বলে দিন : হে কাফিরবৃন্দ! আমি তার ইবাদত করি না, তোমরা যার ইবাদত করো। এবং তোমরাও তার ‘ইবাদতকারী নও’ যার ইবাদত আমি করি। আর আমিও তার ইবাদতকারী হবো না, যার ইবাদত তোমরা করো। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী হবে না, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের জন্য তোমাদের কর্মফল এবং আমার জন্য আমার কর্মফল (সূরা কাফিরন : আয়াত ১-৬)।
আল্লাহ্ আরো বলেন, ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই।’ (সূরা বাকারা : আয়াত ২৫৬) একটি সেকুলার রাষ্ট্রের এটাই মূল নীতি। সম্ভবত এ কারণেই অমুসলিম লেখক মাইক্যাল হার্ট এ জগতে একশত প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকা দি হানড্রেড গ্রন্থে রাসূলে করিম সা:-কে প্রথম স্থান দিয়ে তাকে ‘সেকুলার’ বলেছেন। তাই বলছিলাম নরেন্দ্র মোদি সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত ভারতের ‘এ যাবতকালের মহত্তম প্রধানমন্ত্রী’ যিনি নিজ দেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ জনগণের মতো নিজ ধর্ম ‘রাইট অর রঙ’ নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন এবং নিজ ধর্ম সম্প্রসারণের জন্য যেটা ইসলামে নেই সেটাও ‘ঘরওয়াপসি’ নীতির মাধ্যমে করছেন যেটা সে দেশের সেকুলার সংবিধানেরও পরিপন্থী। এর আগে ভারতের আর কোনো প্রধানমন্ত্রী তা করেননি। গণসমর্থন না থাকলে এটা তিনি করতে পারতেন না। এমনকি ঢাকা এসেও তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজো করেছেন। বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান কি দিল্লি গিয়ে জামে মসজিদে দু’রাকাত নামাজ পড়েছেন! আমার জানা নেই।
বিজেপি সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে ২০০০ লোককে যাদের বেশির ভাগ মুসলমান হত্যার নেপথ্যে কাজ করেছেন। সমগ্র ভারতে ও মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মিরে মুসলিমবিরোধী নীতি অনুসরণ করে তাদের সভা-সমাবেশে গায়ে গেরুয়া রঙের কাপড় জড়ানো নিজ ধর্মের পুরোহিতদের সাথে রাখেন। আমাদের মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সভা সমাবেশে প্রখ্যাত আলেমদের সাথে রাখার রেওয়াজ কবে হবে?
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ভাইস প্রিন্সিপাল, মহিলা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা