ইসরাইলবিরোধী হলে আমাদের কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দাও : জার্মান মিডিয়া
ইসরাইলবিরোধী হলে আমাদের কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দাও : জার্মান মিডিয়া - ছবি সংগৃহীত
ইউরোপের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল পত্রিকা অ্যালেক্স স্প্রিঞ্জার এসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিয়াস ডোফনডার বলেছেন, যে সকল কর্মী এ পত্রিকার বাইরে উত্তোলন করা ইসরাইলি পতাকার ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন, তাদের উচিৎ চাকরি ছেড়ে দেয়া। বৃহস্পতিবার এ পত্রিকার ১৬ শ’ কর্মচারীকে তিনি এ কথা বলেন।
ম্যাথিয়াস ডোফনডার একটি ভিডিও কন্ফারেন্সে অ্যালেক্স স্প্রিঞ্জারের অধীনে কাজ করা সমগ্র বিশ্বের কর্মচারীদের বলেন, ‘আমার ধারণা আমি আপনাদের সাথে খোলামেলাভাবেই কথা বলি। কোনো ব্যক্তি যদি মনে করেন যে ইসরাইলের পতাকা উত্তলনের ব্যাপারে তার আপত্তি আছে, তার উচিৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন চাকরি খোঁজা।’
বার্লিনভিত্তিক অ্যালেক্স স্প্রিঞ্জার হলো ইউরোপের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল পত্রিকা। তারা বিল্ড, ডাই ওয়েল্ট, বিজনেস ইনসাইডার, পলিটিকো ইউরোপ ও অন্য অনেক সংবাদ মাধ্যমের মালিক। এছাড়া ইসরাইলেরর সর্ব বৃহৎ বিজ্ঞাপনের ওয়েব সাইট ইয়াদ-২-এর মালিক।
অ্যালেক্স স্প্রিঞ্জার পশ্চিম জার্মানিতে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কোম্পানির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নীতির একটি হলো, তারা ইহুদিদের সমর্থন করে এবং রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখতে চায়।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট
নেতানিয়াহু ১০ জুলাই ছাড়ছেন সরকারি বাসভবন
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সদ্য বিদায় নেয়া রক্ষণশীল লিকুদ দলীয় প্রধান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে পশ্চিম জেরুসালেমের বেলফোর স্ট্রিটের সরকারি বাসভবন ছাড়ছেন। শনিবার নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সাথে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত বাসভবন ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছান তিনি।
বেনেতের দায়িত্ব গ্রহণের এক মাস পর নেতানিয়াহু পশ্চিম জেরুসালেমের সরকারি বাসভবন ছাড়ছেন। এর আগে প্রথম দফায় ১৯৯৯ সালে নির্বাচনে হারার পর সরকারি বাসভবন ছাড়তে তার ছয় সপ্তাহ বেশি সময় লেগেছিল।
একইসাথে এই বাসভবনে আনুষ্ঠানিক বৈঠক না করার বিষয়ে তিনি সম্মতি জানিয়েছেন। এর আগে গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাফতালি বেনেতের দায়িত্ব গ্রহণের এক দিন পরেই নেতানিয়াহু এই বাসভবনে জাতিসঙ্ঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দূত নিকি হ্যালি এবং জায়নবাদের সমর্থক সংগঠন ক্রিশ্চিয়ান ইউনাইটেড পর ইসরাইলের নেতা প্যাস্টর জন হ্যাগির সাথে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাত করেন।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০০৯ থেকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তবে নাফতালি বেনেত পূর্ণকালীন সময়ের জন্য এই ভবনে আসছেন না। তিনি বরং সরকারি দায়িত্ব পালনে কার্যালয় হিসেবেই একে ব্যবহার করবেন। তার স্ত্রী ও চার সন্তান রানানা শহরে তাদের বাসভবনেই থাকবেন।
ইসরাইলে সরকার গঠনে কোনো দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় গত দুই বছরের মধ্যে চার বার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মার্চের চতুর্থ নির্বাচনের পরও কোনো পক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।
ইসরাইলি আইন পরিষদ নেসেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ১২০ আসনের মধ্যে ৬১ সদস্যের প্রয়োজন হয়।
দেশটিতে সরকার গঠনের প্রশ্নে নির্বাচনের পর ইসরাইলি নেসেটের সদস্যদের সাথে আলোচনা শুরু করেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট রিওভেন রিভলিন।
প্রথম দফা আলোচনার পর নেসেটের ৫২ সদস্য প্রধানমন্ত্রী পদে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সুপারিশ করায় এপ্রিলের শুরুতে তাকে সরকার গঠনের জন্য প্রথম মনোনয়ন দেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট রিওভেন রিভলিন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হলেও ওই সময় এটিই ছিল সর্বোচ্চ মনোনয়ন।
কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে নেতানিয়াহুকে সমর্থন করা জিউনিস্ট পার্টি কোনো আরব দলের সাথে সরকার গঠনের অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি সরকার গঠনে ব্যর্থ হন।
নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার পর ৫ মে নতুন করে নেসেট সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন প্রেসিডেন্ট রিভলিন। নতুন আলোচনায় রক্ষণশীল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেতের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির এক প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে মোট ৫৬ সদস্যের সুপারিশ পান ইয়েশ আতিদ দলের প্রধান ইয়ায়ির লাপিদ।
২ জুন সরকার গঠনে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার সামান্য আগে ইয়ায়ির লাপিদ সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। নাফতালি বেনেতের ইয়ামিনা দল ও অন্য আরো ছয়টি দলের সাথে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার পর তিনি সরকার গঠনের এই ঘোষণা দেন।
সরকার গঠনের বিষয়ে রোববার নেসেটের অধিবেশনে সদস্যদের আস্থাভোট নেয়া হয়। আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য জোট সরকারের পক্ষে সমর্থন দেন। এতে ১২ বছর দীর্ঘ শাসনের পর বিরোধী দলের আসনে গিয়ে বসেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট