করোনার সংক্রমণ নিয়ে মারাত্মক জটিলতায় চীন
করোনার সংক্রমণ নিয়ে মারাত্মক জটিলতায় চীন - ছবি সংগৃহীত
খুব তাড়াতাড়ি বহির্বিশ্বের জন্য দেশকে উন্মুক্ত করতে আগের তুলনায় তিনগুণ টিকা দিচ্ছে চীন৷ টিকার সংখ্যাও বাড়িয়েছে৷ কিন্তু সব অঞ্চলে সমান হারে টিকা দেয়া যাচ্ছে না বলে সংকট কাটছে না৷
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হলেও ইতিমধ্যে অন্তত ৪৪ ভাগ নাগরিককে করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ দিতে পেরেছে চীন৷ দৈনিক টিকা দেয়ার হারও বেড়েছে অনেক৷ গত এপ্রিলে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৪৮ লাখ মানুষকে একটা করে ডোজ দেয়া হয়েছিল, চলতি মাসে (জুন) তা বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৭৩ লাখ৷ শুধু তাই নয়, সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে তৈরি আরো তিনটি টিকা যোগ করে জনগণকে সাত ধরনের টিকা দেয়া শুরু করেছে সরকার৷ অর্থাৎ, চীনের জনগণের
জন্য একটা-দুটো নয়- সাত ধরনের টিকার মধ্যে যেকোনো একটি নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার৷
এত উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য আগামী বছর চীনে অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকের আগে করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনা৷
সেই লক্ষ্যে দেশের সীমান্ত ধীরে ধীরে খুলে দেয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল৷ কিন্তু সীমান্ত খোলার আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে খুলে দিতে গিয়েই দেখা দিচ্ছে সমস্যা৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখন তা করলে আবার নতুন করে করোনা সংক্রমণ ছড়ানো শুরু হতে পারে৷ তাদের মনে এমন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে সব অঞ্চলে সমানহারে টিকা দেয়ায় ব্যর্থতা৷
দেখা গেছে, জুনের প্রথম সপ্তাহে বেইজিং এবং সাংহাইয়ে যেখানে যথাক্রমে ৭০ এবং ৫০ ভাগ মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে, সেখানে ছোট দুই শহর গুয়াংদং এবং শাংদং-এ ২০ ভাগ মানুষকেও টিকা দেয়া যায়নি৷ তাই কিছু এলাকায় টিকার দুই ডোজ দেয়া দ্রুত শেষ হলেও, কিছু এলাকায় সেই সাফল্য আসবে বেশ দেরিতে৷ ফলে সব অঞ্চলে সবার অবাধে যাতায়াত শুরু হলে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবেই৷
চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের গবেষক ফেং জিজিয়ান মনে করেন, বিশাল দেশ চীনের জনসংখ্যাও বিপুল বলে সব বিষয়ে সতর্ক না হলে সংকট আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল৷
সম্প্রতি ব্রিটেন আর চিলি দৈনিক সর্বোচ্চ হারে টিকা দিয়ে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল৷ ফলে দেশ দুটি স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি শিথিল করতেও দেরি করেনি৷ তাতে নতুন করে সংকট দেখা দেয় দেশ দুটিতে৷ ইউরোপের দেশ ব্রিটেন আর দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ চিলিকে তাই এখন করোনার নতুন প্রকোপ ঠেকাতে লড়তে হচ্ছে৷
চীনের সামনে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সময়োপযোগী সব সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ দেশের আরেক উদাহরণ জাপান৷ তারা টোকিও অলিম্পিক এক বছর পর বিদেশী দর্শক ছাড়া কতটা সফলভাবে আয়োজন করতে পারে তা দেখার জন্য কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষায় চীন৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে