ঈদুল আজহায় চট্টগ্রামে পছন্দের শীর্ষে অষ্টমুখী লাল ষাঁড়

অষ্টমুখী লাল ষাঁড় - ছবি : সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবারো চট্টগ্রামবাসীর পছন্দের শীর্ষে থাকছে অষ্টমুখী লাল ষাঁড় বা রেড চিটাগাং ক্যাটল। ইতোমধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ জেলাজুড়ে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৩৭ হাজার ৭০০ অষ্টমুখী লাল ঘাঁড় যা গতবারের চেয়ে দুই হাজার ৭০০ বেশি।
চট্টগ্রামে এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯ হাজার। এর বিপরীতে চট্টগ্রামের স্থানীয় উন্নতমানের ৩৭ হাজার ৭০০ অষ্টমুখী লাল ষাঁড়সহ সাত লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি পশু মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রেয়াজুল হক জসিম। অবশিষ্ট ঘাটতি ৫২ হাজার ৬৬৬টি পশুর জোগান হবে চট্টগ্রামের সাথে লাগোয়া জেলাগুলো থেকে বলে নিশ্চিত করেন ওই কর্মকর্তা। এ ছাড়া কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত ২০৬ হাজার হাটবাজারসহ একাধিক স্থানে পশুর বাজার বসবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মমর্তা।
জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারো ঈদুল আজহার পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে জেলার হাজার হাজার খামারি ও গৃহস্থ পরিবারের সদস্যরা বছরজুড়ে পশু লালন-পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। সে হিসেবে জেলায় এবার নির্ধারিত তিন হাজার ৮০০ খামারসহ মৌসুমি আরো প্রায় ১০ হাজারসহ ১৩ হাজার ৮০০ খামারে কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে সাত লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রামের হাটবাজারগুলোতে তেমন ব্যস্ততা নাথাকলেও খামারগুলোতে চলছে ব্যাপক কর্মব্যস্ততা। এবারো পশু বিক্রির ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হতে পাড়ে মহামারী করোনাভাইরাস। এ কারণটি মাথায় রেখে গতবারের মতো খামারিরা অনলাইনে পশু বিক্রি শুরু করেছেন।
বাঁশখালী পুকুরিয়ার এন এম এগ্রোর মালিক এমরান মাহমুদ নয়া দিগন্তকে জানান, তার খামারে এবার পাঁচটি অষ্টমুখী জাতের লাল ষাঁড়সহ ৫২টি ষাঁড় লালন-পালন করা হচ্ছে কোরবানি উপলক্ষে। অনলাইনের মাধ্যমের তার খামার থেকে গশু বিক্রি হচ্ছে।
সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়ার চিতামুড়ার খামারি আবুল মমতাজ চৌধুরীর ছেলে রাসেল মিয়া জানান, তাদের খামারে এবার বিভিন্ন চট্টগ্রামের দেশী প্রজাতির অষ্টমুখী ৭৩টি ষাঁড়সহ ৭৭টি ষাঁড় প্রস্তুত করছেন কোরবানিতে বিক্রির জন্য।
আনোয়ারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: দেলোয়ার জানান, তার উপজেলায় এবার ছোট বড় ৮০০ খামের এক হাজার ৬০০ এর বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে অষ্টমুখী জাতের লাল ষাঁড় রয়েছে ৬০০ উপরে। এ ছাড়া মহিষ রয়েছে দুই হাজার ২০০, ছাগাল রয়েছে প্রায় ৮ হাজারের উপরে।
বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, তার উপজেলায় এবার ১৬৯টি খামারে কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে ৩৬ হাজার। এর মধ্যে লাল জাতের রয়েছে প্রায় দেড় হাজার। তা ছাড়া মহিষ দুই হাজার এবং ভেড়া ও ছাগল রয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আবুল কালাম আজাদ জানান, তার উপজেলায় ১৭৬ খামারে প্রায় ৪০ হাজার পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের উন্নতজাতের অষ্টমুখী রয়েছে ৫০০ এর উপরে। তা ছাড়া ছাগল ১২ হাজার, মহিষ পাঁচ হাজার প্রস্তুত রয়েছে কোরবানিতে বিক্রির জন্য।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রেয়াজুল হক জসিম বলেন, কোরবানির পশুর হাট এখনো জমে উঠেনি। তবে এবার করোনাভাইরাসজনিত কারণে এবারো কোরবানির পশুর হাট হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। তিনি বলেন, করোনার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি কাজ করছে। তাই এবার চাহিদা মতো আশপাশের হাটবাজার থেকেই পশু সংগ্রহ করবে তারা। তা ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি এখন ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। করোনার কারণে এবার ক্রেতা-বিক্রেতাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন তিনি।