যখন তখন ঘুম পায় আপনার? কেন এমন হচ্ছে?
যখন তখন ঘুম পায় আপনার? কেন এমন হচ্ছে? - ছবি সংগৃহীত
আজকালকার ব্যস্ত জীবনে শরীরকে সুস্থ রাখা যেন একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়। ফলে ঘুমের বৃত্ত পূরণ হতে চায় না। এর মধ্যেই দ্রুত ওঠে কোনোমতে নাস্তা খেয়ে যেতে হয় অফিসে। সেখানেও রেহাই নেই। দুপুরের খাবার খেতে হয় তাড়াহুড়া করে। কিন্তু যেই লাঞ্চ হলো তারপর থেকেই চোখ বুজে আসে ঘুমে। কাপের পর কাপ কফি খেয়েও যেন ঘুম তাড়ানোই যায় না। এ এক বিশাল জ্বালা। যারা কর্মরতা শুধুমাত্র তাদেরই যে ব্যস্ততায় দিন কাটে তা কিন্তু নয়, যারা বাড়িতে থেকে সারাদিন ধরে সংসার সামলান, তাদের ব্যস্ততা কোনো অংশেই কম নয়। কিন্তু আপনার যদি সারাক্ষণই ঘুম পাই এবং ঘুমিয়েও পড়েন তাহলে কিন্তু সেটা বেশ চিন্তার বিষয়।
অতিরিক্ত ঘুমের কারণ –
শারীরিক এবং মানসিক নানা কাজের চাপে অতিরিক্ত ঘুম পায়, তাছাড়াও আরো কিছু কারণ রয়েছে সেগুলি হলো-
১) ঠিক সময় না ঘুমোনো –
রাতে অনেকেই আছে যারা অনেক রাত করে ঘুমোন তাই পর্যাপ্ত ঘুম হয় না আর সারাদিন ঘুম পায় শরীরে অস্বস্তি লেগেই থাকে।
২) নানা অসুখ –
আজকাল লাইফস্টাইলের জন্য অসুখ নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে, মহিলাদের থাইরয়েডে, পি সি ও ডি, মধুমেহ ইত্যাদি সমস্যা থাকে। এগুলো কিন্তু শরীরে ক্লান্তি আনে এবং ফলস্বরূপ অতিরিক্ত ঘুম পায়।
৩) অবসাদ –
জীবনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হয়, সে কাজের চাপ হোক বা টাকাপয়সার চিন্তা বা শরীরের চিন্তা এসব নানান সমস্যার জন্য অনেকসময় অবসাদ হয়, শুধু শরীর খারপ হলেই যে ঘুম পায় তা কিন্তু নয় মানসিক ক্লান্তিতেও আমাদের বড বেশি ঘুম পায়। তাই নিজেই নিজের অবসাদগুলো চিনে সেটা কাটিয়ে তোলার ব্যবস্থা করুন।
৪) ভারী খাবার খাওয়া –
দুপুরে যদি খুব বেশি ভারী খাবার খান তাহলে কিন্তু দিনের বেলা ঘুম পেতে বাধ্য , আসলে আমাদের খাবার হজম হতে বেশ খানিকটা সময় লাগে, বেশি তেল মশলাযুক্ত খাবার, হাই প্রোটিন খাবার এগুলো হজম হতে তুলনায় আরো বেশি সময় লাগে। দুপুরে যদি খুব বেশি পরিমাণে ভাত খান তাহলে কার্বোহাইড্রেটের পরিমান অনেক বেশি চলে যায় শরীরে তার কারণে ঝিমুনি আর ঘুম পায়। বলছি না পেট খালি রাখুন বা আধপেটা খান, কিন্তু আপনার শরীরে যতটা প্রয়োজন তার থেকে বেশি না খাওয়াই ভালো।
৫) শরীরের ধরণ –
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে আমাদের শরীরের ৩ প্রকার দোষ হতে পারে- বাত, পিত্ত ও কফ। বাত অর্থাৎ যাদের শরীরে হাওয়া বা গ্যাসের পরিমাণ বেশি, পিত্ত অর্থাৎ যাদের শরীর খুব বেশি মাত্রায় গরম ও কফ অর্থাৎ যাদের শরীরে জলীয়ভাব বেশি থাকে। যাদের শরীরে পানির পরিমাণ বেশি তাদের মধ্যে সবসময় একটা ঘুম ভাব রয়ে যায় একটা ক্লান্তিবোধ লেগেই থাকে।
কী কী হতে পারে এর জন্য?
১। ঘুমের আধিক্যতার জন্য আপনার শরীরে থাবা বসাতে পারে ডায়বেটিস।
২। যাদের বেশি সময় ধরে ঘুমের অভ্যেস, একদিন কম ঘুমালেই, তাদের মাথা যন্ত্রণার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
৩। আবার দীর্ঘক্ষণ শোয়ার ফলে, হাত চলা বা কোনো রকম মুভমেন্ট হয় না, ফলে মেদ বাড়ার আশঙ্কা বেশি।
৪। অন্যদিকে এই একই কারণে কোমরে, পিঠে যন্ত্রণা হতেও দেখা যায় অনেকের।
৫। মূলত আগে যেমন বললাম, কোনো মানসিক অবসাদ থাকলে, মানুষ অনেক সময় বেশি ঘুমায়। কিন্তু তাতে মানসিক অবসাদ আরো বাড়ে।
আর সব শেষে যেটি না বললেই নয়, সেটি হলো হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা দ্বিগুন বাড়ায় ওভারস্লিপিং। তাই এই অভ্যেস থাকলে, আজই বদলান।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস