সেই মুকুলও ফিরছেন তৃণমূলে?
মুকুল রায় - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একসময় মমতার পর তৃণমূলের সব চেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। পরে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতির 'চাণক্য' বলে পরিচিত মুকুল রায় ফের তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলে সূত্র জানাচ্ছে। মুকুল নিজে অবশ্য এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি।
মুকুল রায়কে ঘিরে জল্পনা চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। সব ঠিক থাকলে শুক্রবার বিকেলেই সপুত্র তার তৃণমূলে যোগ দেয়ার কথা। মুকুল ঘনিষ্ঠ সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে পুত্র শুভ্রাংশুসহ একাধিক ঘনিষ্ঠ কর্মীকে নিয়ে বৈঠক করেন মুকুল। তারপরেই তৃণমূলে যোগ দেয়ার বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকের পর মুকুল যেতে পারেন কলকাতার তৃণমূল ভবনে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেখানে মুকুল ও তার পুত্র ফের তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। তবে তৃণমূলের একটি সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, মুকুল শুক্রবারই তৃণমূলে যোগ নাও দিতে পারেন। দিনকয়েক সময় নিতে পারেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, সেই জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন মুকুল। একদিকে তিনি যেমন তৃণমূলের নেতাদের ভাঙিয়েছিলেন, অন্যদিকে তৃণমূল কর্মীদেরও নিজের কাজে ব্যবহার করেছিলেন। ২০২১ সালের নির্বাচনের আগেও তৃণমূল থেকে একাধিক মুকুল ঘনিষ্ঠ নেতা বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে মুকুল খানিকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি। তখন থেকেই বিজেপির সঙ্গে মুকুলের দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। মুকুল আবার তৃণমূলে ফিরলে তার ঘনিষ্ঠ নেতারাও আবার ফিরতে পারেন বলেও সূত্র জানাচ্ছে।
নির্বাচনে মুকুলকে উত্তর কৃষ্ণনগরে টিকিট দেওয়া হয়। অনিচ্ছা নিয়েই ভোটে লড়েন তিনি। জনসভায় একবারের জন্যও মমতাকে সরাসরি আক্রমণ করেননি তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীকেও সরাসরি আক্রমণ করেননি। সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলতে রাজি হননি। ডয়চে ভেলের সাংবাদিককেও জানিয়েছিলেন, ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চান না।
নির্বাচনে মুকুল জিতেছেন। কিন্তু বিধানসভায় শপথ নিতে যাওয়া ছাড়া বিজেপির একটি বৈঠকেও অংশ নেননি। সূত্রের দাবি, তাকে বাদ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে নির্বাচন করাও ভালো ভাবে নেননি মুকুল। এরই মধ্যে তার স্ত্রী কোভিডে আক্রান্ত হন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে দেখতে হাসপাতালে যান। সেখানে মুকুলের সঙ্গে অভিষেকের দীর্ঘ কথা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
গত কয়েক দিনে তৃণমূলের সঙ্গে মুকুলের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলেও সূত্রের দাবি। দীর্ঘ আলোচনার পরে মুকুলের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় বলে জানা গেছে।
ডয়চে ভেলে মুকুল এবং তার পুত্র শুভ্রাংশু দুইজনের সঙ্গেই কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দুইজনেই এখন কথা বলতে চাননি। তবে মুকুল ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন, তাদের তৃণমূলে যোগ দেওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
সূত্র : ডয়চে ভেলে