স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে কী করবেন?
স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে কী করবেন? - ছবি সংগৃহীত
হার্টের সমস্যা কেবল বেশি বয়সীদের হয় তা কিন্তু নয়। এখন কম বয়সীদের মধ্যে নতুন নয়। অল্পবয়সেই হার্টের সমস্যা হচ্ছে, এরকমটা আজকাল আকছার হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা এর কারণ হিসেবে দায়ী করছেন অনিয়মিত জীবন যাপনকেই। লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনলেই হার্ট অনেকটা সুস্থ থাকবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিসংখ্যানের হিসেব দিয়ে জানিয়েছে, ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে স্ট্রোক কিন্তু মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ। ডঃ কুলকার্নি জানিয়েছেন, “বেঙ্গালুরুতেই ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা। বিশেষ করে আইটি পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে ক্রমশ।
দেখে নেয়া যাক কী বদল আনতে হবে রোজকার জীবনে?
* রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখা দরকার
* শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা থাকলে তা কখনওই ভালো নয়। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা এমনিই কমে যায়।
* নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে
* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিয়মিত যোগা করলে হার্ট সুস্থ থাকে। নিয়মিত আধ ঘন্টা হাঁটতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন শরীরচর্চা করতে হবে।
* মদ্যপান এবং ধূমপান থেকে দূরে থাকুন
ধূমপান একেবারে ছেড়ে দেয়া খুব দরকার।
* স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
আপনার রোজকার খাবারে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আর ফ্যাট-এর পরিমানে যেন সমতা থাকে। সতেজ ফল, শাক সবজি খান। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, এমন মাছ রাখুন রোজকার ডায়েটে। নুন, মিষ্টি, রেড মিট খাওয়া কমান।
পর্যাপ্ত ঘুম দরকার
দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুম সুস্থ থাকার জন্য খুব জরুরি। স্ট্রেস থেকে দূরে থাকাও খুব দরকার। তার জন্য নিয়মিত যোগা করাও দরকার। নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে রাতের ঘুম ভালো হয়। রক্ত জ্বালিকা সুস্থ থাকে।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধিতে অজান্তেই বিপদ বাড়ছে শরীরে
একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে কোনো ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে থাকে।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে অনেক সমস্যা তৈরি হয়। ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধিতে গাউট রোগ (এক ধরণের আর্থ্রাইটিস) হতে চায়। কিডনিতে স্টোন কিংবা কখনো কখনো কিডনির ক্ষমতাও একেবারে কমিয়ে দেয় ইউরিক অ্যাসিড। রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড আছে কি না তা সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করে সনাক্ত করা হয়।একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে একজন ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে থাকে। ইউরোপীয় জার্নাল অফ ইন্টারনাল মেডিসিনে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। লিমেরিক স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকরা এই গবেষণায় দাবি করেছেন যে রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড একজন ব্যক্তির আয়ু ১১ বছর পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
এই প্রতিবেদন অনুসারে, রক্তে বেশি মাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ অনেক গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে। প্রাউ ২৬ হাজার ৫২৫ জন উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড সম্পন্ন ব্যক্তিদের উপর এই সমীক্ষা করা হয়েছে। ইউএল স্কুল অফ মেডিসিন বায়োস্ট্যাটাস্টিকের সিনিয়র গবেষক ড: লিওনার্ড ব্রাউনের মতে, ইউরিক অ্যাসিডের কারণে পুরুষ ও মহিলাদের মৃত্যুর হার একে অপরের থেকে আলাদা।
মহিলাদের ক্ষেত্রেও একই রকম কিছু রিপোর্ট দেখা গিয়েছে। শরীরে সেরাম ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা (416olmol / L-এর বেশি) হলে আয়ুষ্কাল ৬ বছর কমিয়ে আনে। এখনো এই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলেছেন যে চিকিৎসকদের পরামর্শের মাধ্যমে আমরা ওষুধের মাধ্যমে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক করতে পারি। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার, সামগ্রিক ফিটনেস যদি ঠিক থাকে তাহলে ওষুধ ছাড়াও এই রোগকে বশে রাখা যায়।
রক্তে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে বিপদ এড়াতে বিশেষজ্ঞরা ডায়েট থেকে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আসলে, পিউরিন একটি রাসায়নিক যৌগ যা হজম প্রক্রিয়া চলাকালীন ইউরিক অ্যাসিডকে রক্তে নিক্ষেপ করে। এটি বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ এবং গোশতেও পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে ইউরিক অ্যাসিডের বিপদ এড়াতে ৯ ধরণের খাবার না খাওয়াই ভালো। পালং শাক, মাশরুম, খাসির গোশত, চিংড়ি, টমেটো, মুগ ডাল, মসুর ডাল, সয়াবিন ও কফি না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস