'আমাকে বিয়ে করো', সুন্দরীর প্রস্তাবে যা বললেন আম্বানি
আম্বানি ও পূজা - ছবি : সংগৃহীত
ধনী স্বামী চাই। তাই একটি অনলাইন ফোরামে নিজের চাহিদা লিখে পাত্র চাই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পূজা চৌহান নামে বছর পঁচিশের এক তরুণী। লিখেছিলেন। তরুণীর পোস্টটি পড়ে উত্তর দিলেন স্বয়ং ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। ছোট্ট ওই পোস্টেই মুকেশ বুঝিয়ে দিলেন, কেন তিনি ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।
মুকেশ আম্বানি ও জনৈক পূজা চৌহানের সেই পোস্ট নিয়ে এখন জোর আলোচনা অনলাইন দুনিয়ায়। কী রয়েছে পোস্টটিতে?
পূজা চৌহান লিখছেন,
আমি এই বছর ২৫ বছরে পা দেব। খুবই সুন্দরী। স্টাইলিশ, রুচিশীল। আমি এমন একজন স্বামী চাই, যার বার্ষিক বেতন হবে ১০০ কোটি বা তার বেশি। আপনি হয়তো বলবেন, আমি একটু বেশিই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। কিন্তু বর্তমানে বার্ষিক ২ কোটি টাকা বেতনে একেবারেই মধ্যবিত্তের মতো জীবনযাপন করতে হয়। সেদিক থেকে আমার চাহিদা একেবারেই বেশি নয়। এই ফোরামে এমন কেউ আছেন, যাঁর বার্ষিক বেতন ১০০ কোটি টাকা? তারা কি সবাই বিবাহিত?
কেন আপনাকে আমি বিয়ে করব? এখন পর্যন্ত আমি যতগুলো ডেটে গিয়েছি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতনের পুরুষটির বেতন ছিল বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা। অতএব আমি ৫০ কোটি টাকার পর থেকেই ভাবছি। তার কারণ কেউ যদি নিউ ইয়র্কের সবচেয়ে অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন, তাহলে বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা বেতন একেবারেই যথেষ্ট নয়। আমি কিছু প্রশ্ন করছি।
কেন সব ধনী ব্যক্তিদের স্ত্রীকে দেখতে মোটামুটি হয়? আমার কিছু বান্ধবী আছে, তারা দেখতে খুব একটা ভালো নয়, কিন্তু তাদের বিয়ে হয়েছে ধনী ব্যক্তিদের সঙ্গে। ধনী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্ন, আপনি কী দেখে সিদ্ধান্ত নেন, যে এই মহিলা আমার স্ত্রী হবেন, আর ইনি গার্লফ্রেন্ড?
ওই ফোরামটিতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি রয়েছেন। তিনি পোস্টটি দেখে উত্তর দেন। বুদ্ধিদীপ্ত সেই উত্তরটি হলো
প্রিয় পূজা,
আমি আপনার পোস্টটি খুব মন দিয়ে পড়েছি। এবং দেখলাম, আরো বহু মেয়ের আপনার মতোই প্রশ্ন রয়েছে। দয়া করে একজন পেশাদার লগ্নিকারী হিসেবে আপনার প্রশ্নগুলোকে একটু বিশ্লেষণ করতে দিন।
আমার বার্ষিক আয় ১০০ কোটি টাকার বেশি। আপনার চাহিদা মতোই। কিন্তু একজন ব্যবসায়ী হিসেবে, আপনাকে বিয়ে করা খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত হবে। খুব সহজ উত্তর। দেখুন, আপনি চাইছেন, সৌন্দর্য ও টাকার বিনিময়। অর্থাত্, আপনাকে বিয়ে করলে একজন সুন্দরী স্ত্রী পাওয়া যাবে। তার বদলে আপনি হবেন ধনী। কিন্তু সমস্যা হলো, আপনার এই যৌবন ও সৌন্দর্য একসময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমার টাকা শেষ হবে না। বস্তুত, প্রতি বছর আমার আয় বাড়বে। কিন্তু প্রতি বছরই আপনি আরো সুন্দরী হয়ে উঠবেন না।
অতএব অর্থশাস্ত্রের নিরিখে, আমি একজন অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাসেট। আর আপনি ডেপ্রিসিয়েশন অ্যাসেট। অর্থাত্ আপনার যৌবন ও রূপই যদি আপনার সম্পত্তি হয়ে থাকে, তাহলে ১০ বছর পর আপনার সম্পত্তি অনেকটাই কমে যাচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিটে একটি প্রবাদ আছে, প্রত্যেক ট্রেডিংয়ের একটি পজিশন থাকে। আপনার সঙ্গে ডেটিং-ও একটা ট্রেডিং পজিশন। যদি ট্রেড ভ্যালু কমে যায়, তাহলে তা আমরা বিক্রি করে দিই। খামোখা দীর্ঘমেয়াদী ফেলে রেখে লাভ নেই। একইভাবে আপনাকে বিয়ে করলেও তাই হবে। শুনতে খুব খারাপ লাগলেও সত্যি, যেকোনো সম্পত্তি, যার ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু বেশি, তা বিক্রি করে দেয়া বা লিজ দেয়াই লাভজনক।
যে ব্যক্তির বার্ষিক আয় ১০০ কোটি টাকা, সে নিশ্চয়ই বোকা নয়। ব্যবসায়ী দৃষ্টিভঙ্গিতে আপনার সঙ্গে ডেট করাই যায়, কিন্তু বিয়ে করা যায় না। অতএব কোনো ধনীকে বিয়ে করার স্বপ্ন আপনার না দেখাই বুদ্ধিমানের। বরং নিজে ১০০ কোটি আয় করার চেষ্টা করুন। কোনো ধনীকে বোকা বানানোর চেয়ে ভালো হবে। আশা করি এই উত্তরটি আপনাকে ভাবতে সাহায্য করবে।
সূত্র : এই সময়