১২০০ অবিস্ফোরিত ইসরাইলি গোলা নিষ্ক্রিয় করলো গাজা কর্তৃপক্ষ
গাজায় অবিস্ফোরিত বোমা - ছবি সংগৃহীত
মোট ১২ শ’ অবিস্ফোরিত ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক ও কামানের শেল ধ্বংস করেছে গাজা কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা করার সময় ইসরাইলি সেনাবাহিনী এ গোলাগুলো নিক্ষেপ করে।
গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় কাজ করা বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মিকাদ শনিবার আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘১১ দিনে গাজার বিভ্ন্নি অঞ্চলে ইসরাইলের ভারী গোলাবর্ষণের পর যেসব অবিস্ফোরিত গোলা রয়ে গেছে তা নিষ্ক্রিয় করতে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের বিভিন্ন দল কাজ করে যাচ্ছেন।
মোহাম্মদ মিকাদ আরো বলেন, ‘যে বোমাগুলো ইসরাইল নিক্ষেপ করেছে তা যদি বিস্ফোরিত হতো তাহলে আশেপাশের এলাকাগুলোতে বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যেত। এ বোমাগুলো একটি গণহত্যার কারণ হতো।'
পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় এ বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজটি ঠিক মতো করা যাচ্ছে না বলেও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদ মিকাদ। এ বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে তিনি রেড ক্রসের মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে বলেন। যাতে করে তারা এ কাজগুলো নিরীক্ষণ করতে পারেন এবং বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবারহ করতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ইসরাইলের অবরোধের কারণে বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞদের সুরক্ষা সামগ্রীগুলো গাজাতে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে তাদের কাজ করাটা আরো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
২১ মে তারিখে মিসরের মধ্যস্ততায় যুদ্ধ বিরতির আগে গাজায় ১১ দিন ধরে বোমাবর্ষণ করে ইসরাইল।
গাজায় ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে ২৮৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও আছেন। এ সময় ইসরাইলি হামলায় সমগ্র গাজা শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হাসপাতাল, গণমাধ্যম এমনকি স্কুল লক্ষ্য করেও বোমা হামলা করেছে ইসরাইল।
সূত্র : ইয়েনি সাফাক
১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইল
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলের সেনাবাহিনী ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে বলে একটি স্থানীয় এনজিও জানিয়েছে। শনিবার এ বেসরকারি সংস্থাটি (এনজিও) এ তথ্য জানায়।
গ্রেফতারকৃত ১০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ১৭ হাজার নারী ও কম বয়সী মেয়েও রয়েছেন। এছাড়াও আরো ৫০ হাজার শিশু ওই গ্রেফতারকৃত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ছিলেন। বিনা বিচারে বন্দী ও সাবেক বন্দীদের বিষয়ে গঠিত একটি কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই বেসরকারি সংস্থাটি (এনজিও) জানিয়েছে, ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি বন্দী প্রশাসনিক আদেশে বন্দী হয়েছেন বলে রেকর্ড আছে।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক আদেশে বন্দী করার আইনে বিনা বিচারে দীর্ঘ দিন আটক রাখার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মাধ্যমে একজন বন্দীকে কোনো ধরনের অভিযোগ বা বিচার ছাড়া দীর্ঘ দিন বন্দী রাখা যাবে।
এ বেসরকারি সংস্থাটির মতে, ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ২২৬ ফিলিস্তিনি বন্দী ইসরাইলি কারাগারের অভ্যন্তরে মারা গেছেন।
এ বেসরকারি সংস্থাটি (এনজিও) আরো জানিয়েছে, ‘ইসরাইলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিরা দৈহিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হন। তাদের সাথে অনৈতিক আচরণ করা হয় এবং খুব খারাপ ব্যবহার করা হয়।
কারাবন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর সংগ্রহ করা তথ্য অনুসারে জানা যায়, ইসরাইলের কারাগারে ৪৫ হাজার বন্দী আছে বলে ধারণা করা হয়। বন্দীদের মধ্যে ৪১ নারীও আছেন। এছাড়া ১৪০ বন্দীকে সামান্য কারণে আর ৪৪০ জনকে প্রশাসনিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে ইসরাইল পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুসালেম, সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করে। পরে ইসরাইলের সাথে ১৯৭৯ সালের শান্তিচুক্তির আওতায় মিসর সিনাই উপদ্বীপ ফিরে পায়।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি