দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেছে, কিভাবে বুঝবেন?
অক্সিমিটার - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবেচেয়ে বেশি মাত্রায় প্রভাব ফেলে ফুসফুসে। তাই এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। কী কী উপসর্গ দেখে বুঝবেন, আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে? কোন কোন সমস্যা দেখলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন?
শ্বাসকষ্ট : অক্সিজেন কমে যাওয়ার একেবারে গোড়ার উপসর্গ। ফুসফুসে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে অনেকেরই অল্প শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ভাবনায় গোলমাল : চিন্তার গতিপ্রকৃতি এলোমেলো হয়ে যাওয়াও শরীরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার অন্যতম লক্ষণ।
নাকের ফুটো বড় : অক্সিজেনের অভাব হলে শরীর আরো বেশি বাতাস টানতে চায়। ফলে প্রতিবর্তক্রিয়াতেই নাকের ফুটো বড় করার প্রবণতা দেখা দেয়।
কালচে ঠোঁট : অক্সিজেন কমে গেলে ঠোঁট শুকিয়ে আসে। কালচে হয়ে যায়।
চিকিৎসকের কথায় : করোনা সংক্রমণ হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই আক্রান্ত মানুষটি সে কথা বুঝতে পারেন না। এমনই বলছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। তার কথায়, ‘এমন অনেকেই আছেন, যাদের অক্সিজেনের মাত্রা ৮০-র নিচে নেমে গেলেও তাদের শ্বাসকষ্ট হয়নি। একেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘হ্যাপি হাইপক্সিয়া’ বলা হচ্ছে। অর্থাৎ অক্সিজেন কমে গেলেও রোগী তা টের পাচ্ছেন। আর যত ক্ষণে পাচ্ছেন, তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
তার মতে, অক্সিজেন কমে গেলে যে উপসর্গগুলো দেখা দিচ্ছে, তা এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। তাই সহজ রাস্তা হলো, অক্সিমিটারে মাঝে মধ্যেই শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দেখে নেয়া।
‘টিকা নিলেই কমে যাবে যৌন ক্ষমতা, সন্তানও হবে না’, কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
করোনার টিকা নিলেই নাকি যৌন ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্বও এসে যেতে পারে। এই আতঙ্কে বহু মানুষের মধ্যেই এখনো টিকা নিয়ে খুঁতখুঁতানি রয়েছে।
করোনা সংক্রমণের ফলে শরীরের ক্লান্তি বহু গুণ বেড়ে যেতে পারে। তাতে সাময়িক ভাবে কমে যেতে পারে যৌন সম্পর্কের ইচ্ছেও। এ কথা অনেক দিন ধরেই চিকিৎসকেরা বলছেন। কিন্তু টিকায় কি তেমন কিছু সম্ভব?
‘একেবারেই নয়,’ এমনটাই বলছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। তার কথায়, একটি টিকা সাধারণ মানুষকে দেয়ার আগে তার সব রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখে নেয়া হয়। সব বয়সের স্বেচ্ছাসেবীদের উপর টিকা প্রয়োগ করে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয়ে তবেই সাধারণের জন্য টিকাকরণ শুরু হয়। ‘এখন পর্যন্ত যতগুলো গবেষণা হয়েছে, তার কোনও রিপোর্টে এমন কোনো প্রমাণ নেই,’ বলছেন তিনি।
যখন নতুন কোনো টিকা আসে, তা নিয়ে জনমানসে একটা ভয় তৈরি হয়। কোভিডের টিকার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়নি। এর আগে অন্য টিকার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন সুবর্ণ। তার কথায়, ‘পালস পোলিও টিকাকরণ যখন শুরু হল, তখন অনেকেই ভাবতেন, এটি আসলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। গুজব ছড়িয়েছিল, যে সব শিশু এই টিকা নেবে, পরবর্তী কালে তাদের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা চলে যাবে। যেহেতু যৌন ক্ষমতা বা সন্তান উৎপাদনের বিষয়গুলি মানুষের কাছে খুব স্পর্শকাতর— তাই এগুলি নিয়ে গুজব সহজে ছড়ায়।’
বরং টিকাকরণ হলেই বহু ধরনের সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে এবং সুস্থ জীবন পাওয়া যাবে— এমনটাই মত চিকিৎসকদের।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা