‘রান মেশিন’ : খেলা দিয়েই মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমী আর পরিসংখ্যানবিদদের
‘রান মেশিন’ - ছবি : সংগৃহীত
‘রান মেশিন’। ক্রিকেটবিশ্বে বহুল প্রচলিত দুটি শব্দ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাটসম্যানকে এই দুটি শব্দে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমানে এই শব্দজোড়া ব্যবহৃত হচ্ছে ৩০ বছরের ডেভন কনওয়ের নামের পাশে। গত এক বছরে তার খেলা মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে তাবড় ক্রিকেটপ্রেমী এবং পরিসংখ্যানবিদদের। সৌরভ গাঙ্গুলির রেকর্ড ভেঙে দেয়া এই ব্যাটসম্যান আজ ২০০ রান করে নতুন রেকর্ড গড়ে নিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৯৯১ সালে জন্ম কনওয়ের। ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলাও শুরু করেছিলেন সেখান থেকেই। দীর্ঘদিন খেলেছেন ওই দেশেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের ‘কোটা’ ব্যবস্থার ফলে তার সুযোগ পাওয়া যে সহজ কাজ নয়, সেটা আগেই বুঝে গিয়েছিলেন। চলে এসেছিলেন নিউজিল্যান্ডে। সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন।
নিউজিল্যান্ডের নিয়ম কড়া। অন্য দেশের কোনো ক্রিকেটার অন্তত তিন বছরের আগে ওই দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাবেন না। কনওয়ে হতাশ হননি। ধৈর্য ধরে পড়ে থেকেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে নিজেকে তৈরি করেছেন। খেলেছেন কাউন্টিতেও। ল্যাঙ্কাশায়ার লিগে নেলসনের হয়ে খেলেছিলেন। মরসুম শেষে দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে পিছনে ফেলেছিলেন ৮০০-রও বেশি রানে। চোখে পড়ার সেই শুরু।
নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে তার প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি নিজেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত ৯টি ত্রিশতরান রয়েছে তার। সর্বোচ্চ ৩৯৩, যা নিউজিল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের নেই। টি২০ ক্রিকেটে দুটি শতরান রয়েছে তার।
কিউইদের হয়ে অভিষেক গত বছর নভেম্বরে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এখনও পর্যন্ত ১১টি ইনিংসে তার গড় ৫৯.১২, স্ট্রাইক রেট ১৫০-র উপরে। একদিনের ক্রিকেটে ৩ ম্যাচে গড় ৮৮.২৩। রয়েছে একটি শতরানও। টেস্টে নেমেই প্রথম ইনিংসে শতরান।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
অস্ট্রেলিয়া সফরে মোহম্মদ সিরাজকে কীভাবে চাঙ্গা করেছিলেন কোচ রবি শাস্ত্রী? নিজেই জানালেন
প্রায় আধাশক্তির ভারতীয় দল বছরের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করে। তারকাদের অনুপস্থিতিতে তরুণ তুর্কিদের দক্ষতা ও নাছোড় মনোভাবের ফলেই এই জয় সম্ভব হয়। সফরে তৈরি হয় একাধিক স্মরণীয় গল্প, যার মধ্যে অন্যতম হলেন মোহম্মদ সিরাজ।
সিরিজের সময় বাবাকে হারালেও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে ও বাবার স্বপ্নপূরণে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যান সিরাজ। একাধিক চোট আঘাতের ফলে তার সামনে খুলে যায় ভারতীয় দলের দরজা। সেই সুযোগকে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগান এই ফাস্ট বোলার। সিরিজে মোট ১৩ উইকেট নিয়ে ভারতের তরফে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও হন ২৫ বছর বয়সী বোলার। মুশকিল সময়ে কোচ রবি শাস্ত্রী তাকে দারুণভাবে সাপোর্ট করে বলেই জানান সিরাজ।
এক টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিরাজ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সফরে বাবাকে হারানোর পর রবি স্যার (রবি শাস্ত্রী) এবং বোলিং কোচ ভারত অরুণ স্যার সবসময় আমাকে সাপোর্ট করে গেছেন। রবি স্যার আমাকে এসে টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা জানান এবং বলেন আমি নিশ্চিত তুমি ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাবে। ম্যাচে আমার বাবার আর্শীবাদ সবসময় আমার সঙ্গে থাকবে। অবশেষে আমি যখন পাঁচ উইকেট পাই, তখন রবি স্যার খুবই খুশি হয়েছিলেন। আমার কোচরা এমনভাবে আমায় ভরসা জোগানোয় আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যায়।’
পাশাপাশি ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও তার ওপর আস্থা রাখার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন ভারতীয় পেস ব্যাটারির তরুণ তুর্কি। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর সিরাজের ওপর প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। পুরোপুরি ফিট ভারতীয় বোলিং বিভাগের প্রথম বাছাই না হলেও, ইংল্যান্ডের লম্বা গ্রীষ্মে ছয়টি টেস্ট ম্যাচে কোনো না কোনো সময় সিরাজের সুযোগ পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়া সফরের সাফল্য ধরে রাখাই তার কাছে আসল চ্যালেঞ্জ হবে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস