নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা : যা বললেন মানসুর আব্বাস
মানসুর আব্বাস - ছবি সংগৃহীত
ইসরাইলে একটি নতুন সরকার গঠনে চুক্তিতে পৌঁছেছে সেখানকার বিরোধী দলগুলো, যা দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের সমাপ্তির পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে।
সেখানে আটটি দল মিলে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। মধ্যপন্থী দল ইয়েশ আতিদ পার্টির নেতা ইয়াইর লাপিদ এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন।
চুক্তি অনুযায়ী ডানপন্থী দল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ইয়াইর লাপিদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
সরকারের শপথ গ্রহণের আগে অবশ্য পার্লামেন্টে এ নিয়ে ভোট হতে হবে।
ইয়াইর লাপিদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে তিনি প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনকে কোয়ালিশন চুক্তি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমি অঙ্গীকার করছি যে এই সরকার সকল ইসরাইলি নাগরিকের সেবায় কাজ করবে - যারা এর জন্য ভোট দিয়েছেন, এবং যারা ভোট দেননি।'
'এই সরকার তার বিরোধীদের সম্মান করবে এবং ইসরাইলের সমাজের সকল অংশকে একত্রিত করতে সাধ্যমত সবকিছু করবে।'
ইসরাইলের গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে ইয়াইর লাপিদ, নাফতালি বেনেত এবং ইসলামপন্থী রাম পার্টির নেতা মানসুর আব্বাস একটি চুক্তি স্বাক্ষর করছেন। এমন চুক্তিকে অনেকেই অসম্ভব মনে করেছিলেন।
মানসুর আব্বাস সাংবাদিকদের বলেছেন যে সিদ্ধান্তটি খুবই কঠিন ছিল। 'বেশ কিছু মত বিভেদ হয়েছে, কিন্তু একটা সমঝোতায় পৌঁছানো খুবই জরুরি ছিল।'
প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনকে ইয়াইর লাপিদ জানিয়েছেন যে বেনেট এবং তিনি নিজে এক সাথে সরকার পরিচালনা করবেন।
২০২৩ সালের ২৭ অগাস্ট তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাফতালি বেনেটের কাছ থেকে ক্ষমতা বুঝে নেবেন।
রিভলিন যত শিগগিরই সম্ভব এক আস্থা ভোট আয়োজনের জন্য পার্লামেন্টের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তবে পার্লামেন্টে এই কোয়ালিশন যদি সমর্থন না পায়, তাহলে ইসরাইলে দুই বছরের মধ্য পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন আয়োজনের দরকার হতে পারে।
যে দলগুলো মিলে এই কোয়ালিশন হয়েছে, তার মধ্যে ইসরাইলের সকল ঘরানার রাজনৈতিক দল রয়েছে।
রাজনৈতিক দিক দিয়ে এসব দলের মধ্যে খুব কম বিষয়ে মতের মিল রয়েছে। শুধু একটি বিষয় ছাড়া - আর তা হলো দেশটিতে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা।
নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন রয়েছেন। গত মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তিনি চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হন।
এটা ছিল গত দুই বছরে দেশটিতে চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন, যার পর তিনি জোট গঠনেন জন্য মিত্র পেতে ব্যর্থ হন।
এদিকে, বিরোধী জোটের স্থায়িত্ব নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, বেনেটের ‘ইয়ামিনা পার্টি’ হচ্ছে ঘোর দক্ষিণপন্থী। অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি গড়ে তোলার পক্ষে বেনেট। কিন্তু বরাবর এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন লাপিদ। এছাড়া, আরব দলের রাজনৈতিক সমর্থন পেলেও রক্ষণশীল ইহুদি লবির চাপে পশ্চিম তীর বা জেরুসালেম নিয়েও নীতিতে বিশেষ কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না নয়া জোট সরকার। ফলে নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাড়া এই জোটের ‘ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচী’ বলতে তেমন কিছু নেই।
সূত্র : বিবিসি ও অন্যান্য