যোগীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর গুঞ্জন, এক যুবকের কাণ্ড
যোগী - ছবি সংগৃহীত
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সমর্থক তো অনেকেই হন। কিন্তু তাই বলে এতটা কট্টর সমর্থন! ভারতরে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডাকে রক্ত দিয়ে লেখা একটি চিঠি পাঠালেন এক যুবক। রক্ত দিয়ে চিঠিতে কী লিখলেন তিনি? 'মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে যদি তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি আত্মহত্যা করব,' রীতিমতো হুমকি যুবকের। যুবকের রক্তে লেখা চিঠি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য গত সপ্তাহে। হঠাত্ই সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে গুজব ছড়ায়। ফেসবুক পোস্ট বা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের সত্যতা যাচাই না করেই বেজায় চটে যান বিজেপি সমর্থকদের একাংশ। দলীয় নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন তারা। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যোগী আদিত্যনাথই তাদের একমাত্র পছন্দ, সাফ জানিয়ে দেন সমর্থকরা।
এমন পরিস্থিতিতে একটু বেশিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সোনু ঠাকুর নামের এক সমর্থক। আর সেই কারণেই সরাসরি সভাপতি জে পি নাড্ডাকে নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লেখেন তিনি। সেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যোগী আদিত্যনাথকেই বহাল রাখার আর্জি করেছেন সোনু। এর অন্যথা হলে আত্মহত্যা করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি!
লখনউয়ের বিজেপি কার্যালয়ের সামনে এসেই আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন সোনু। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে যোগীকে সরালে এবং তিনি আত্মহত্যা করলে তার জন্য রাজ্যস্তরের প্রত্যেক নেতা দায়ী থাকবেন বলে জানিয়েছেন কট্টর সমর্থক।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে সোনু ঠাকুর জানান, ‘যোগীজি রাজ্যের প্রতিটি জেলা পরিদর্শন করে করোনা থেকে সকলের প্রাণরক্ষা করছেন। রাজ্যে গুন্ডা, মাফিয়া এবং দুষ্কৃতীদেরও শায়েস্তা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
তবে এই প্রথম নয়, এর আগে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও ভাইরাল হয়েছিলেন এই যুবক। হনুমান চালিশার আদলে 'যোগী চালিশা' গেয়ে প্রিয় রাজনৈতিক নেতার বন্দনা করেছিলেন সোনু।
করোনায় লাশ নদীতে ফেলছেন আত্মীয়রা, ভাইরাল ভিডিও
করোনাভাইরাস আবহে উত্তরপ্রদেশের নদীগুলিতে ভাসছে লাশ। এই লাশগুলোর মধ্যে একটা বড় অংশ কোভিডে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের। এই নিয়ে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারকে। এই আবহে এবার এক ভিডিও ভাইরাল হলো, যাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের রাপ্তি নদীতে এক করোনা রোগীর লাশ ফলছেন পিপিই কিট পরে থাকা ব্যক্তি। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলায় ঘটেছে। এই ভিডিও ভাইরাল হলেই আরো অস্বস্তি বেড়েছে যোগী সরকারের।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি ব্রিজের উপর থেকে প্লাস্টিকে জড়ানো একটি লাশ নিচে নদীতে ফেলছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির গায়ে রয়েছে পিপিই কিট। পিপিই কিট পরে থাকা ব্যক্তির সাথে ভিডিওতে আরো একজনকে দেখা যায়। ওই ব্যক্তিও এই কাজে সাহায্য করছিল। এদিকে এভাবে দিনের বেলায় এহেন কাজ কেউ কী করে করতে পার, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে। এদিকে এই ঘটনা ভাইরাল হতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় শুক্লা নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মহামারী আইনের অধীনে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে এপি মিশ্র নামক এক চিকিত্সকও জড়িত।
বলরামপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ভিবি সিং জানিয়েছেন, 'প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে যে ২৫ মে ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার তিনদিন পর তার মৃত্যু হয়। কোভিড প্রোটোকল মেনেই তার লাশ আত্মীয়দের হাতে তুলে দেয়া হয়। তদন্তে দেখা গিয়েছে যে, আত্মীয়রাই লাশটি নদীতে ফেলে দিয়েছেন। আমরা মামলা দায়ের করেছি। কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনা আবহে নদীতে কয়েক হাজার লাশ ভেসে গিয়েছে গত কয়েক দিনে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই যোগী সরকার তত্পর হয়েছে। ভেসে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে তা সত্কার করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। ওদিকে নদীর আশেপাশে থাকা বাসিন্দারা এই বিষয়টি নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। এদিকে নদীর পারে বালি চাপা অবস্থাতেও পাওয়া গিয়েছে হাজারের উপর লাশ। এদের অনেকেরই করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এর জেরে এই লাশগুলো থেকে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস