মিসরের সাথে নতুন মেরুকরণ : নতুন সম্ভাবনা

মাসুম খলিলী | Jun 01, 2021 05:08 pm
নতুন মেরুকরণ : নতুন সম্ভাবনা

নতুন মেরুকরণ : নতুন সম্ভাবনা - ছবি সংগৃহীত

 

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার প্রেক্ষাপটে হামাসের সাথে মিসরের সম্পর্ক উন্নয়ন হচ্ছে। কেন হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে, মিসরের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সুরক্ষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রধান আহমেদ আল-আওয়াদি বলেছেন, কায়রো ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার রক্ষার স্বার্থে হামাসের সাথে তার পার্থক্য কাটিয়ে উঠেছে। আওয়াদি উল্লেখ করেন, ‘হামাসের সাথে কিছুটা মতপার্থক্য থাকতে পারে; কিন্তু ইসরাইলের অধীনে বসবাসরত ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থ হাসিলের আশায় সঙ্কট চলাকালে উভয় পক্ষই এই মতবিরোধকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।’

মিসর কর্তৃপক্ষ হামাসের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং তুরস্কের সাথে সহযোগিতা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ মূলত একই সূত্রে গাঁথা। এর সাথে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে মুসলিম ব্রাদারহুডের নতুন করে সক্রিয় হবার একটি যোগসূত্রও রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সূত্রগুলো থেকে যতটা খবর পাওয়া যায় তাতে মনে হয়, মিসরের সাথে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশগুলোতে আরব বসন্তের আগে মুসলিম ব্রাদারহুড যে রাজনৈতিক ও অন্যান্য অধিকার ভোগ করত, সেটি ফিরিয়ে দেবার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। মিসর এর মধ্যে ব্রাদারহুডের মাঝারি কাতারের কয়েক শত নেতা ও কর্মীকে মুক্তি দিয়েছে।

পর্যায়ক্রমে আরো সিনিয়র নেতাদেরও মুক্তি দেয়া হতে পারে। সম্ভবত সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সময় যতটা রাজনীতি ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ ব্রাদারহুড পেত সেটি আবার দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে মিসরের রাজনীতিতে তাদের ভূমিকা আরো বাড়তে পারে। সৌদি আরবও এর মধ্যে হামাসের অনেক নেতাকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারেও সৌদি কর্তৃপক্ষ উদার মনোভাব নেয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাতের দেশ সিরিয়ায় এক ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতার খবর পাওয়া যাচ্ছে যার অংশ হিসেবে, বাশার আল আসাদ সিরিয়ায় নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। পরে সবার অংশগ্রহণে সংসদ নির্বাচনের আয়োজনও হতে পারে। এটি ‘আস্তানা’ শান্তি উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাশিয়া ইরান তুরস্ক যে সমঝোতার চেষ্টা করে আসছিল, তারই অংশ বলে মনে হচ্ছে।

এবারের ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক মেরুকরণের পথকে প্রশস্ত করবে বলে মনে হচ্ছে। এতে মুসলিম ব্রাদারহুড ও এই ঘরানার বিরুদ্ধে যে ক্রাশ অভিযান রাজতান্ত্রিক ও একনায়কতান্ত্রিক দেশগুলো চালিয়ে আসছিল সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। একই সাথে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান প্রধান শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সঙ্ঘাতমুখর সম্পর্ককে যথাসম্ভব নমনীয় করে আবার মুসলিম উম্মাহর স্বার্থকে সামনে নিয়ে এসে ফিলিস্তিন সঙ্কটের সুরাহার চেষ্টা হতে পারে।

এর অংশ হিসাবে কার্যকর সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হতে পারে। ইসরাইলের জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে যে, সার্বভৌম ফিলিস্তিনকে মেনে না নেয়ার বিকল্প হবে বিশ্ব মানচিত্র থেকে নিজেদের স্বাধীন অস্তিত্বকে মুছে দেয়া। ২০২১ সালে গাজা যুদ্ধের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের সুত্রপাত হয়েছে সেটি আগামী বছরগুলোতে একটি পরিণতির দিকে যাবে যেখানে বিশ্ব মুসলিম শক্তি বৈশ্বিক ব্যবস্থার একটি সিদ্ধান্তÍকারী শক্তিতে পরিণত হবে।

mrkmmb@gmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us