সুলতান আবদুল হামিদের সামনে যেসব মুলা ঝুলিয়েছিল ইসরাইলের স্বপ্নদ্রষ্টারা
সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ - ছবি সংগৃহীত
আবদুল হামিদ এমন সময় উসমানিয়া সালতানাতের ক্ষমতায় আরোহণ করেন যখন অর্থনৈতিক সঙ্কট, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিশেষভাবে বলকান অঞ্চলে যুদ্ধের কারণে তুরস্কের অবস্থা ছিল শোচনীয়। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ। শায়খ সুফি মুহাম্মদ জাফর আল মাদানী নামের লিবিয়ার এক দরবেশকে তিনি ইস্তাম্বুলে নিয়ে আসেন। প্রায় সময় জিকির মাহফিলে শরিক হতেন। ৩০ বছর ওই দরবেশের সাথে সম্পর্ক রেখে চলেন।
মুসলিম জাহানের সুখ-দুঃখের ভাগী ছিলেন সুলতান। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে বিশ্বের মুসলমানদের একতাবদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়েছেন। তুরস্কসহ মুসলিম বিশ্বে ইউরোপীয়ানদের হস্তক্ষেপ তিনি পছন্দ করতেন না। তার ঘোষিত প্যান ইসলামিজমের ডাকে ইউরোপীয় দেশগুলো বিশেষভাবে আলবেনিয়ার মুসলমানদের মাধ্যমে অস্ট্রিয়া, তাতার ও কুর্দিদের মাধ্যমে রাশিয়া, মরক্কোর মুসলমানদের মাধ্যমে ফ্রান্স এবং ভারতীয় মুসলমানদের মাধ্যমে ব্রিটেন সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আবদুল হামিদের জীবনের একটি ঘটনা কেবল অসাধারণ নয় রীতিমতো চোখ খুলে দেয়ার মতো বিস্ময়কর। ১৯০১ সালের কথা। গরুৎধৎু ছৎধংড়ি নামক এক ইহুদি ব্যাংকার তার দু’জন সহযোগীসহ ইস্তাম্বুলে সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদের রাজপ্রাসাদে আসেন এবং প্রতিনিধির মাধ্যমে সুলতানের কাছে নিম্নোক্ত প্রস্তাব পেশ করেন-
১. Allowing Jews to visit Palestine anytime they please, and to stay as long as they want “to visit the holy sites. 2. Allowing the Jews to build settlements where they live, and they wanted them to be located near Jerusalem. Sultan Abdul Hamid II refused to even meet them, he sent his answer to them through Tahsin Pasha, and the answer was, “Tell those impolite Jews that the debts of the Uthmani state are not a shame. France has debts and that doesn’t effect it.Jerusalem became a part of the Islamic land when Khalifah Omar Bin Al khattab took the city and I am not going to carry the historical shame of selling the holy lands to the Jews and betraying the responsibility and trust of my people. May the Jews keep their money, the Uthamani’s will not hide in castles built with the money of the enemies of Islam.”
He also told them to leave and never come back to meet him again.
The Jews did not give up on Abdul Hameed. Later in the same year, 1901, the founder of the Zionist movement, Theodor Herzl, visited Istanbul and tried to meet the Sultan. Sultan Abdul Hamid II refused to meet him and he told his Head of The Ministers Council “Advise Dr. Herzl not to take any further steps in his project. I can not give away a handful of the soil of this land for it is not my own, it is for all the Islamic ummah. The Islamic ummah fought Jihad for the sake of this land and they have watered it with their blood. The Jews may keep their money and millions. If the Islamic Khilafah State is one day destroyed then they will be able to take Palestine without a price! But while I am alive, I would rather push a sword into my body than see the land of Palestine cut and given away from the Islamic State. This is something that will not be, I will not start cutting our bodies while we are alive.” (The London Post, 6 September, 2014).
উসমানীয় খিলাফতের সব ঋণ শোধ করে দেয়া হবে
উসমানীয় খিলাফতের জন্য শক্তিশালী নৌঘাঁটি তৈরি করে দেয়া হবে
তুরস্কের উন্নয়নের জন্য তিন কোটি ৫০ লাখ স্বর্ণমুদ্রা বিনাসুদে দিতে হবে।
ইহুদিরা জানায়, বিনিময়ে আমরা দুটি জিনিস চাই- ইহুদিদের যেকোনো সময় ফিলিস্তিন সফরের অনুমতি দিতে হবে। পবিত্র স্থান পরিদর্শনের উদ্দেশে আমাদেরকে সেখানে অনির্ধারিত সময়ের জন্য অবস্থানের সুযোগ দিতে হবে। জেরুসালেমের কাছে ইহুদিদের বসতি স্থাপনের জন্য কিছু জমি বরাদ্দ দিতে হবে।
স্মর্তব্য, আগে থেকে পবিত্র স্থান পরিদর্শনের উদ্দেশে ইহুদিরা জেরুসালেম এলে ৩০ দিন থাকার অনুমতি ছিল। এরপর তাদের ফিরে যেতে হতো। সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ প্রতিনিধির মাধ্যমে ইহুদিদের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাদের সাক্ষাৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমন প্রস্তাব নিয়ে আর না আসারও হুকুম দেন। তিনি যে জবাব দেন, তা সোনার অক্ষরে লিখে রাখার মতো মূল্যবান- ‘অভদ্র ইহুদিদের জানিয়ে দাও, ঋণ উসমানীয় খিলাফতের জন্য লজ্জার কোনো ব্যাপার নয়। ফ্রান্সের মতো দেশেরও ঋণ আছে, এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়। হজরত উমর ইবনে খাত্তাব রা: যে ভূমি জয় করেন তা গোটা মুসলিম বিশ্বের সম্পদ। ইহুদিদের কাছে ফিলিস্তিনের ভূমি বিক্রি করে ইতিহাসে ঘৃণিত এবং জনগণ কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্বের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না। ইহুদিদের বিপুল অর্থ থাকতে পারে, কিন্তু শত্রুর অর্থ দিয়ে তৈরি করা প্রমোদ প্রাসাদে উসমানীয়রা লুকাতে পারে না।’