হোম সিরিজে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ : হারিয়েছে ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কাকে
হোম সিরিজে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ : হারিয়েছে ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কাকে - ছবি সংগৃহীত
ঘরের মাঠে বলা যায় অপ্রতিরোধ্যই বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ঘরের মাঠে ১১টি একদিনের সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে তারা জিতেছে ১০টি সিরিজ। পরাজিত দলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, ভারতও। দেশের মাটিতে খেলা মানেই অনেকটাই এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ। শতকরার হিসাব হোক কিংবা, সিরিজ জয়ের রেকর্ড সবকিছুতেই বাকি অনেককেই পিছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা একদিনের সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে পর্যন্ত ঘরের মাঠে টানা ৯টা একদিনের ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে ২০১৫ সালের ভারত সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ পর্যন্ত টানা ১০ ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ।
ফলে বর্তমানে কোনো দল যদি বাংলাদেশ সফরে যায় তাহলে তাদের বেশ সতর্ক থাকতেই হবে। পরিসংখ্যান তো তাই বলছে। টাইগার্সরা ২০১৫ সাল থেকে ঘরের মাঠে সেভাবে কোনো প্রতিপক্ষকে দাঁত ফোটাতেই দেয়নি। ২০১৫ সালে নিজেদের ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩-০ সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এরপর ভারতের বিরুদ্ধে ২-১ সিরিজ জিতেছিল। ২০১৫ থেকে ২০১৬-এর মধ্যে ইংল্যান্ড সিরিজ বাদ দিলে ৬টার মধ্যে ৫টা সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে ২০১৮ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ঘরের মাঠে কোনও একদিনের সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ। টাইগাররা যাদের হারিয়েছে সেই তালিকায় রয়েছে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার নাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে ঘরের মাঠে দু’বার করে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষবার হারাল শ্রীলঙ্কাকে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে ঘরের মাঠে একদিনের সিরিজে নিজেদের শক্তিকে বিশ্ব দরবারে দেখিয়ে দিল বাংলাদেশ। গত পাঁচ বছরে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ মোট ২৬টি একদিনের ম্যাচ খেলেছে। যার মধ্যে ১৯টিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে পর্যন্ত জয়ের হারে সকলকে পিছনে ফেলেছিল বাংলাদেশ। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচ হারতে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে একটু পিছিয়ে গেল তারা।
টাইগার্সদের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ জিতে সম্মানরক্ষা শ্রীলঙ্কার
শুরুটা ভালো হলেও শেষটা মনের মতো করতে পারল না বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার তৃতীয় একদিনের ম্যাচে ৯৭ রানে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। অতিথি দলের ২৮৬ রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ বল বাকি থাকতেই ১৮৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শুক্রবারের ম্যাচ জিতে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে প্রথম পয়েন্ট পেল শ্রীলঙ্কা। শুক্রবারের ম্যাচ হারলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। অন্যদিকে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের তালিকায় শীর্ষেই থাকছে বাংলাদেশ।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জিতেছিল বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রাধান্য ধরে রাখতে পারেনি তারা। প্রথম ইনিংসে বোলাররা আগের দুই ম্যাচের ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি। শুধু তাসকিন আহমেদই আলো ছড়িয়েছেন। স্পিনারদের কাছ থেকে সাহায্য পাননি তিনি। শ্রীলঙ্কাও ২৮৬ রান তুলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে।
ওই চ্যালেঞ্জের জবাব বাংলাদেশ দিতে পারবে- সেটা কখনো মনে হয়নি। টানা ব্যর্থতার দায় নিয়ে একাদশ থেকে ছিটকে পড়েছেন লিটন দাস। পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মোহাম্মদ নঈম, ১ রান করেই আউট হন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে পাওয়া ধাক্কা একটু পরই দ্বিগুণ করে সাজঘরে ফিরে যান সাকিব আল হাসান, তিনি করেন ব্যক্তিগত ৪ রান।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তামিমকেও ফিরিয়ে দিয়েছেন দারুণ বল করা দুশ্মন্ত চামিরা। বাংলাদেশের প্রথম তিন উইকেটই নিয়েছেন এই পেসার। এই ধাক্কা আর সামলানো সম্ভব হয়নি। দলকে প্রথম দুই ম্যাচ জেতানো মুশফিক (৫৪ বলে ২৮) ধীরে শুরু করেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। পাঁচ ও ছয়ে নামা মোসাদ্দেক ও মাহমুদউল্লাহ ফিফটি পেয়েছেন বটে কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি।
৯ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন দুশমান্থা চামিরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কান কোনো বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটাই। অন্যদিকে সিরিজের সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার হয়ে ১২২ বলে দুরন্ত ১২০ রানের ইনিংস খেলেন দলের অধিনায়ক কুশল পেরেরা। এদিনের ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে দলকে বাঁচালেন তিনি।