বুদ্ধিমত্তায় আইনস্টাইনকে প্রায় ছুঁয়ে গেল বার্মিংহামের চার বছরের শিশু
বুদ্ধিমত্তায় আইনস্টাইনকে প্রায় ছুঁয়ে গেল বার্মিংহামের চার বছরের শিশু - ছবি : সংগৃহীত
প্রখর বুদ্ধিমত্তায় বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলল বার্মিংহামের চার বছরের এক শিশুকন্যা। দয়াল কাউর নামে ওই শিশুটি উচ্চ বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় ১৪২ স্কোর করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে। শিশুটির ক্ষুরধার বুদ্ধিমত্তার কাছে পরীক্ষকরা কার্যত হার স্বীকার করে নিয়েছেন। তাজ্জব শিশুটির পাড়া-প্রতিবেশী থেকে স্কুলের শিক্ষকরা। উচ্চ শ্রেণির কঠিন অঙ্ক তার কাছে যেমন পানিভাত, তেমনই কঠিন নামের বানানও অনায়াসেই নির্ভুল লিখে ফেলতে পারে ওই পিচ্চি। শুধু বুদ্ধিমত্তাতেই সে বিরল তা নয়, যেকোনো কথার পরিপ্রেক্ষিতে দয়ালের রসবোধ মিশ্রিত উত্তর শুনেও বিস্মিত প্রত্যেকেই। আর এ হেন মেয়ের বাবা হতে পেরে গর্ব যেন আর ধরে না সরবজিৎ সিংয়ের।
সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি বুদ্ধিমান ছিলেন আইনস্টাইন। এমন একজন বিজ্ঞানী যার আইকিউ (বুদ্ধিমত্তা) ছিল বেশ প্রখর। তবে আইনস্টাইন কখনো বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় অংশ নেননি। ধারণা করা হয়, তার আইকিউ পয়েন্ট ছিল ১৬০। এখানে অবশ্য দয়াল উচ্চ বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আর তাতেই নজরকাড়া স্কোর করে সে সবাইকে চমকে দিয়েছে। বাবা সরবজিতের কথায়, ও যখন হামাগুড়ি দিতে শিখেছে, তখন থেকেই বিষয়টি লক্ষ্য করতাম। তবে আমার মেয়ে যে এত প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন হবে, তা কখনো ভাবিনি। মেয়ে যখন নার্সারি স্কুলে পা রাখে, তখনই ওর বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে আমারা নিশ্চিত হই। নার্সারির ম্যানেজার আমায় চিঠি লিখে জানান, তাঁরা যে মান নির্ধারণ করেছিলেন, তার চেয়ে দয়াল অনেক এগিয়ে রয়েছে। দয়ালের মতো এমন বুদ্ধিমত্তা কারও ভিতর দেখেননি। এরপরই মেয়েকে উচ্চ বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় বসানোর সিদ্ধান্ত নেন ওই শিশুর বাবা-মা। ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় সেই পরীক্ষা। সেখানে পাঁচ বছরের শিশুদের জন্য নির্বাচিত অঙ্ক দয়াল নিমেষে সমাধান করে দেয়। অর্জন করে ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর। তখন দয়ালের বয়স মাত্র তিন বছর ১১ মাস।
বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় নজর কাড়ার পরই এজবাস্টনের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে দয়ালকে ভর্তি করানোর জন্য অফার আসে। স্কুলের তরফে জানানো হয়, তারা ওই শিশুর জন্য ফি কমাতেও রাজি। কিন্তু তারপরও ওই স্কুলে পড়ানোর খরচ সাধ্যের মধ্যে নয় বলে জানিয়ে দেন সরবজিৎ। বরং তিনি মেয়েকে এলাকারই একটি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করেন। সেখানেই দয়াল পড়ছে। সে ৯-১০ বছরের ছেলেমেয়েদের সঙ্গেই সময় কাটাতে বেশি ভালোবাসে।
বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষার মূল্যায়ণকারী লিন কেন্ডাল তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, আক্ষরিক অর্থেই দয়াল ব্যতিক্রমী। তার বয়সে সে যে প্রতিভার পরিচয় দিয়েছে, এককথায় তা অবিশ্বাস্য। অভিভাবকদের উদ্দেশে তার পরামর্শ, বাড়িতে শুধুমাত্র ইংরেজি, অঙ্ক না করিয়ে শিশুটি যা ভালোবাসে, সেটিই করানো হোক। কোনো বিষয় যেন তার উপর চাপিয়ে না দেয়া হয়।
বর্তমানে দয়ালের ১৮ মাসের এক বোন রয়েছে। নাম কল্যাণ। সেও এখন থেকেই বোনের পথ অনুসরণ করতে শুরু করেছে।
সূত্র : বর্তমান