এরদোগানের দীর্ঘ দিনে স্বপ্ন পূরণ : তাকসিম মসজিদের উদ্বোধন
এরদোগানের দীর্ঘ দিনে স্বপ্ন পূরণ : তাকসিম মসজিদের উদ্বোধন - ছবি : সংগৃহীত
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হলো। শুক্রবার জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে বিখ্যাত তাকসিম স্কোয়ারের মসজিদটি উদ্বোধন হলো। এর মাধ্যমে সেক্যুলারবাদীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ে ইসলামপন্থীরা জয়ী হলো।
এ মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। তাকসিম স্কয়ারে এ ধরনের মসজিদ এ প্রথম নির্মিত হয়েছে। এটা এমন এক স্থানে অবস্থিত যার আশপাশে বহু খ্রিষ্টান গির্জা আছে। এখানে একটি ছোট মসজিদ আছে। কিন্তু এলাকার যে বিপুলসংখ্যক লোকজন বাস করে, তাতে সেখানে জায়গার সঙ্কুলান হয় না। অবশ্য এই মসজিদও খুব বড় নয়। ওসমানিয়া আমলের ছোট মসজিদের মতো আকারের এ মসজিদটিতে প্রতি ওয়াক্তে চার হাজার মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারবেন।
তাকসিম মসজিদটি এমন এক স্থানে অবস্থিত যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভ্রমণ করতে আসেন। এ মসজিদটি ইসতিকলাল অ্যাভিনিউতে আতাতুর্ক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত। এ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিকে এখানে নতুন করে নির্মাণ করা হবে এখানে একটি অপেরা হাউজ ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বিষয়ের কেন্দ্র স্থাপিত হবে। এটার পশ্চিম পাশে আছে গাজি পার্ক।
এ মসজিদটির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এ মসজিদটির প্রতিষ্ঠার সময়ের বিভিন্ন সংগ্রামের কথা সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। অবশেষে তিনি দুঃখের সাথে বলেন, এ মসজিদ স্থাপনে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি ইস্তাম্বুলের কাসিমপাশা জেলায় বড় হয়েছি। আমার মনে আছে মুসলমানদের একটি ছোট স্থানে খবরের কাগজের ওপর নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো। আমরা এখন আশা করতে পারি যে এ মসজিদটি বিশ্বাসী মুসলিমদের দ্বারা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠবে। আমরা আরো আশা করি এ মসজিদটি থেকে সব সময় আজানের ধ্বনি শোনা যাবে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ডিজিটাল লাইব্রেরি, পড়ার স্থান, এক্সিবিশন হল নিয়ে এ মসজিদটি ইস্তাম্বুলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও শিল্প কেন্দ্রে পরিণত হবে।
১৯৫২ সালে প্রথম এ মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে তৎকালীন ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপের বিরোধিতার কারণে সে উদ্যোগ ভণ্ডুল হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আইনি বিরোধের শেষ প্রান্তে বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিশেষ উদ্যোগে মসজিদটি বাস্তবতা পায়।
উসমানিয়া আমল থেকেই ওই এলাকায় অমুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশের মিশন রয়েছে। তাছাড়া গ্রিক, আর্মেনিয়া, ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজনেরও ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে, তাদের অনেক সম্পত্তিও রয়েছে সেখান।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে মুসলিমদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এরদোগান তাকসিম স্কয়ার মসজিদকে ইস্তাম্বুল নগরীর 'তৃতীয় আধ্যাত্মিক কেন্দ্র' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
নগরবাসীও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। শত শত লোক লোক মসজিদের বাইরেও নামাজে শরিক হয়। তারা এরদোগানের প্রতি সমর্থনও প্রকাশ করে।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ ও মিডল ইস্ট আই