কোভিড আর্ম কী? কী করে রেহাই পাবেন এই সমস্যা থেকে
কোভিড আর্ম কী? - ছবি সংগৃহীত
কোভিড-টিকা নেয়ার পর হাতে প্রচণ্ড ব্যথার অভিযোগ করছেন অনেকেই। খুবই হাতোগোনা কিছু ক্ষেত্রে টিকা নেয়ার কয়েক দিন পর হাতে ব্যথার জায়গায় একটু লালচে হয়ে ফুলে যেতে পারে। সামান্য র্যাশও বেরতে পারে। তেমন হলে, ভয়ের কোনো কারণ নেই। প্রতিষেধক নেয়ার এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার নাম ‘কোভিড আর্ম’।
সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি’র অনুযায়ী টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার কয়েক দিন পর হাতে এই ধরনের র্যাশ বেরতে পারে। যার নাম ‘কোভিড আর্ম’। ডাক্তারি ভাষায় এটাকে ‘ডিলেয়ড কিউটেনাস হাইপারসেনসিটিভিটি’ও বলা হয়। মানে প্রতিষেধকের জন্য ত্বকের মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়, কিন্তু একটু দেরিতে। র্যাশ বা লালচে হয়ে ফুলে যাওয়া, বা টিকা নেয়ার জায়গাটা খুব বেশি সেনসিটিভ হয়ে যাওয়া— এই লক্ষণগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ ক্ষেত্রে। টিকা নেয়ার ৮ দিন পরও হতে পারে এই র্যাশ।
‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী মডার্নার টিকা নেয়ার পর ১২ জনের ‘কোভিড আর্ম’ ধরা পড়েছিল। তবে এগুলো প্রথমে অস্বস্তিকর হলেও কিছু দিনের মধ্যে মিলিয়েও গিয়েছিল। এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফাইজার টিকার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম চোখে পড়েছে। তবে মাথায় রাখবেন, যে কোনও কোভিড প্রতিষেধকের ক্ষেত্রেই এই র্যাশ হতে পারে। কিন্তু এতে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে, নিজে থেকেই র্যাশ মিলিয়ে যায়।
কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন নেয়ার পর হাতে ব্যথা অনেকেরই হয়ে থাকে। সেটা সারাতে কোনো ব্যথা কমানোর ওষুধ প্রথমেই না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তার বদলে বরফ লাগাতে পারেন। কোনো রকম র্যাশ বেরলে প্রথমেই ঘাবড়ে না গিয়ে একবার আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। এবং কোনোভাবেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে প্রতিষেধক নিতে দ্বিধা করবেন না।
সংক্রমণ হালকা না গুরুতর, উপসর্গ কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে
করোনার উপসর্গ নিয়ে মাঝেমাঝেই চিন্তা বাড়ছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর কিংবা পেটের গোলমাল হলেও কি পরীক্ষা করানো প্রয়োজন? এমন কথা সর্বক্ষণ মনে হচ্ছে। কোনটা সাধারণ জ্বর আর কোনটা করোনা? এ সব ভেবে নাজেহাল সকলেই। তার উপরে আবার হালকা উপসর্গ আর গুরুতর উপসর্গের মধ্যে পার্থক্য বুঝে পদক্ষেপ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে। এমন সময়ে জেনে রাখা জরুরি, এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
দেশে ৮০ শতাংশ করোনা রোগীর উপসর্গ হাল্কা সংক্রমণের। বাড়িতে নিভৃতবাসে থেকে, ভাল ভাবে খাওয়াদাওয়া করলেই সেরে ওঠা সম্ভব। হালকা জ্বর, শুকনো কাশি, ক্লান্তি, মাথা ব্যথা, স্বাদ-গন্ধ অনুভব না করার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ ছাড়া, গলায় অস্বস্তি, সর্দিও দেখা দিচ্ছে কারও কারও ক্ষেত্রে।
যাদের জ্বর বাড়ছে, তাদের মাঝারি ধরনের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ১০০-এর উপরে জ্বরের সঙ্গে গায়ে ব্যথা, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ঘন ঘন কাশির দমক থাকছে।
মাঝারি উপসর্গ থেকে গুরুতরতেও চলে যাচ্ছে অনেক রোগীর শারীরিক অবস্থা। তখন তাঁদের অনেকের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। এর সঙ্গে বুকে চাপ, আচ্ছন্ন ভাব, কথা বলতে বা বুঝতে না পারার মতো সমস্যাও হচ্ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে শরীরে কোন উপসর্গ দেখা দেবে, তার অনেকটাই নির্ভর করে বয়স, প্রতিরোধশক্তি ও সামগ্রিক শারীরিক অবস্থার উপরে। তবে মাঝারি বা গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা