লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের চেয়েও বড় গাজার টানেল
গাজার টানেল - ছবি : সংগৃহীত
গাজা উপত্যকার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার বুধবার বলেছেন, গাজায় হামাসের ৫০০ কিলোমিটার টানেল আছে। আর ইসরাইলের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক লড়াইয়ে মাত্র ৫ ভাগ টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরাইলের সাথে অস্ত্রবিরতির পর প্রথম বক্তৃতায় সিনওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে ইসরাইলের অভ্যন্তরে তাদের ১০ হাজার 'শহিদ' রয়েছে। জেরুসালেম ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা 'সাড়া দিতে প্রস্তুত।'
তিনি বলেন, আমরা সামনের দিকে জনপ্রিয় প্রতিরোধ পরিচালনা করব। আর এর পেছনভাগ সংরক্ষিত থাকবে সামরিক প্রতিরোধের মাধ্যমে।
সিনওয়ার বলেন, অস্ত্রবিরতি কার্যকর করার সামান্য আগে হামাস একসাথে ৩০০ রকেট নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেছিল। এসব রকেটের ১৫০টি নিক্ষিপ্ত হতো তেল আবিবকে লক্ষ্য করে। কিন্তু মিসর ও কাতারি মধ্যস্ততাকারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি দাবি করেন, হামাসের ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পাল্লার মিনিটে ১০০টি রকেট নিক্ষেপ করার সক্ষমতা রয়েছে।
হামাসের এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হলেও এখনো কোনো পক্ষ সমঝোতায় সই করেনি।
গাজায় হামাসের টানেলগুলোর বেশির ভাগই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে বলে ইসরাইল যে দাবি করেছে, তা নাকচ করে দিয়ে সিনওয়ার বরেন, গাজা উপত্যকায় তাদের ৫০০ কিলোমিটার টানেল আছে। ইসরাইলি হামলায় মাত্র ৫ ভাগের ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি কয়েক দিনের মধ্যেই মেরামত করা হবে।
পুরো গাজা উপত্যকার আয়তন ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার। সিনওয়ারের কথা যদি সত্য হয়, তবে এর অর্থ হলো, উপকূলীয় এই ছিটমহলটির বেশির ভাগ এলাকাতেই হামাসের টানেল রয়েছে। আর হামাসের টানেলের দৈর্ঘ লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল সিস্টেমের চেয়েও বড়। গাজার মতো সীমিত এলাকায় টানেলগুলো উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে ১০টি সমান্তরাল লাইনে এবং তারপর পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আরো আটটি টানেল থাকতে পারে।
ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছিল, তাদের হামলায় ১০০ কিলোমিটার টানেল ধ্বংস হয়েছে।
সিনওয়ার জোর দিয়ে বলেন, আল-আকসা আর জেরুসালেম হলো আমাদের 'রেড লাইন।'
তিনি বলেন, শত্রুরা যদি জেরুসালেম ও পবিত্র স্থানগুলোর কোনো ক্ষতি করে তবে আমরা আমরা আরো বড় যুদ্ধের জন্য তৈরী।
উচ্ছেদের মুখে থাকা শেখ জাররাহ ও সিলওয়ানের অধিবাসীদের দৃঢ় থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হামাস তাদের পাশে আছে।
বন্দী বিনিময় চুক্তি নিয়ে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, সে প্রসঙ্গে সিনওয়ার বলেন, এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে ইসরাইলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ ব্যাপারে অগ্রগতি হচ্ছে না।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, গাজার সমস্যার সমাধান না হরে হামাস সব কিছু জ্বালিয়ে দেবে।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ আরো ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য দেশের অন্যান্য গ্রুপগুলোও তাদের সাথে যোগ দিত বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
উল্লেখ্য, লড়াইয়ের একপর্যায়ে লেবানন থেকেও ইসরাইলে রকেট নিক্ষিপ্ত হয়। তবে কে এগুলো নিক্ষেপ করেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট