হামাসের জন্য মিসরের ফাঁদ!
সিসি - ছবি সংগৃহীত
১১ দিনের ভয়াবহ যুদ্ধের পর মিসর উঠে এসেছে গাজা উপত্যকা হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে। আর তুরস্ক, কাতার ও ইরানকে বাদ দেয়া হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া থেকে।
মধ্যপ্রাচ্যে একটি থিওরি চলছে। তা হলো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নির্বাচন করিয়ে হামাসকে দু অংশেরই ক্ষমতা দেয়া। মিসরের মাধ্যমে ৫০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়া। এছাড়াও আরো বিভিন্ন সুবিধা দেয়া। যেমন গাজার অধিবাসীদের বিভিন্ন আরব দেশে চাকরি দেয়া। ইতিমধ্যে কায়রোর ছয়টি হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় গাজার আহতদের চিকিৎসা চলছে। মিসরের ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছেছে গাজায়।
এখানেই শেষ নয়। ফাঁদটি আরো বড়। নির্বাচনের মাধ্যমে পশ্চিম তীরেও ক্ষমতায় যাওয়া হামাসের জন্য সবচেয়ে বড় সফলতা হতে পারে। তবে এর মাধ্যমে উদ্দেশ্য হলো হামাসকে আদর্শকে পরিবর্তন করা৷তাদের টার্গেট : হামাসকে ইখওয়ানুল মুসলিমুনের আদর্শ থেকে সরিয়ে আনা। আর হিজবুল্লাহ ও হামাসের দূরত্ব সৃষ্টি করা। যাতে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান, তুরস্ক ও কাতারের প্রভাব কমে যায়। তুরস্ক ও কাতারকে এই প্রক্রিয়ায় বাদ দেয়া হয়েছে।
অথচ তুরস্কই একমাত্র দেশ যারা ফিলিস্তিনি ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সরব ছিল। ইতিমধ্যে লিবিয়ায় মিসর ও তুরস্ক একে অপরকে সহযোগিতা করছে৷ সেজন্য হয়তো তুরস্ক এখন ব্যাপারে চুপ আছে।
তবে আমার মনে হয় না আমেরিকা ও আরব দেশগুলোর বিশেষ করে মিসরের এই চুক্তিতে রাজি হবে হামাস। এই থিওরিকে বাস্তবে রূপ দিতে সম্ভবত এই শুক্রবারে এন্টনি ব্লিংকন তেল আবিব আসছেন। যদিও এখন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। দেখা যাক কী হয়?
লেখিকা : প্রাক্তন শিক্ষার্থী, আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক
গাজার রকেট থামাতে ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে উঁচু ভবনগুলোতে হামলা : ইসরাইলি পাইলটের স্বীকারোক্তি
গাজা উপত্যকা থেকে আসা রকেট থামাতে ব্যর্থতাজনিত হতাশা কাটাতেই গাজার উঁচু ভবনগুলোতে ইসরাইল বোমা হামলা চালিয়েছে। এক ইসরাইলি পাইলট এই স্বীকারোক্তি করেছেন।
গাজার ৯টি বহুতলবিশিষ্ট আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন ইসরাইলি পাইলটের সাক্ষাতকার প্রচার করেছে ইসরাইলের চ্যানেল ১২। এই ৯টি ভবনের একটিতে গাজার বিদেশী কয়েকটি মিডিয়ার অফিসও ছিল।
এক পাইলট বলেন, আমাদের প্রতি যা হচ্ছে, গাজার গ্রুপগুলো আমাদের যেভাবে আঘাত করার কাজে সফল হচ্ছে, তাতে আমরা যে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম, তা ঝেড়ে ফেলতে আমরা টাওয়ারগুলো ধ্বংস করার মনোভাব নিয়ে বিমান হামলায় নেমেছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা রকেট বর্ষণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হচ্ছিলাম, ওই গ্রুপগুলোর নেতাদের আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। ফলে আমরা টাওয়ারগুলো ধ্বংস করছিলাম।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হিসাব অনুযায়ী, গাজার ফিলিস্তিনি গ্রুপগুলো ইসরাইলে প্রায় চার হাজার রকেট নিক্ষেপ করে। এর ফলে ১২ জন নিহত হয়, কয়েক শ' আহত হয়।
গাজায় ইসরাইল আক্রমণের ধারাবাহিকতায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ৯টি বহুতলবিশিষ্ট ভবন ধ্বংস করে। ওই সময় ইসরাইল দাবি করেছিল যে ফিলিস্তিনি গ্রুপগুলো এসব ভবন ব্যবহার করে। রাইটস ওয়াচডগগুলো ইসরাইলি দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান করেছিল।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এদের মধ্যে ৬৯ জন শিশু, ৪০ জন নারী। এছাড়া ১,৯১০ জন আহত হয়।
গত শুক্রবার মিসরের মধ্যস্ততায় যুদ্ধবিরতি হয়।
সূত্র : ইয়েনি সাফাক